বুধবার, ২২ এপ্রিল, ২০১৫

জ্বিহাদ সম্পর্কিত হাদিস ---------------

 হাসান ইবন সাববাহ (রহঃ) আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল (সাঃ) -কে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘ইয়া রাসূল (সাঃ)! কোন কাজ সর্বোত্তম? তিনি বললেন, ‘সময় মত সালাত (নামায) আদায় করা। আমি বললাম, ‘তারপর কোনটি? তিনি বললেন, ‘আল্লাহর পথে জিহাদ।(সহীহ বুখারি-২৫৯১অধ্যায়ঃ৪৮)
মুহাম্মদ ইবন বাশশার(রহঃ) আনাস ইবন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী (সাঃ) বলেছেন, জান্নাতে প্রবেশের পর একমাত্র শহীদ ছাড়া আর কেউ দুনিয়ায় ফিরে আসার আকাঙ্খা পোষণ করবে না, যদিও দুনিয়ার সকল জিনিস তাঁর কাছে বিদ্যমান থাকবে। সে দুনিয়ায় ফিরে আসার আকাঙ্খা করবে যেন দশবার শহীদ হয়। কেননা সে শাহাদাতের মর্যাদা দেখেছে। (সহীহ বুখারি – ২৬২২ , অধ্যায়ঃ  ৪৮)

আবূল ইয়ামান (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী (সাঃ) -কে আমি বলতে শুনেছি যে, সেই সত্তার কসম! যার হাতে আমার প্রাণ, যদি মুমিনদের এমন একটি দল না থাকত, যারা যুদ্ধ থেকে বিরত থাকতে পছন্দ করে না এবং যাদের সকল সওয়ারী দিতে পারবনা বলে আশংকা করতাম, তা হলে যারা আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করছে, আমি সেই ক্ষুদ্র দলটির সঙ্গী হওয়া থেকে বিরত থাকতাম না। সেই সত্তার কসম! যার হাতে আমার প্রাণ, আমি পছন্দ করি আমাকে যেন আল্লাহর রাস্তায় শহীদ করা হয়। আবার জীবিত করা হয়, এরপর শহীদ করা হয়। আবার জীবিত করা হয়, পুনরায় শহীদ করা হয়। তারপর জীবিত করা হয়, পুনরায় শহীদ করা হয়। (সহীহবুখারি –  ২৬০৪,অধ্যায়ঃ৪৮)
আবূল ইয়ামান (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল (সাঃ) -কে বলতে শুনেছি, আল্লাহর পথের মুজাহিদ, অবশ্যই আল্লাহই অধিক জ্ঞাত কে তাঁর পথে জিহাদ করছে, সর্বদা সিয়াম পালনকারী ও সালাত (নামায) আদায়কারীর ন্যায়। আল্লাহ তাআলা তাঁর পথের মুজাহিদের জন্য এই দায়িত্ব নিয়েছেন, যদি তাকে মৃত্যু দেন তবে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন অথবা পুরস্কার বা গানীমতসহ নিরাপদে ফিরিয়ে   আনবেন।(সহীহবুখারি-২৫৯৬ , অধ্যায়ঃ ৪৮)
আলী ইবন আব্দুল্লাহ (রহঃ) ইবন আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, ‘(মক্কা) বিজয়ের পর আর হিজরত নেই। বরং রয়েছে কেবল জিহাদ ও নিয়্যাত। যদি তোমাদের জিহাদের ডাক দেওয়া হয়, তা হলে বেড়িয়ে পড়। ’ (সহীহ বুখারি – ২৫৯২ , অধ্যায়ঃ ৪৮)
মুহাম্মদ ইবন আব্দুর রাহীম(রহঃ) বারা’ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, লৌহ বর্মে আবৃত এক ব্যাক্তি রাসূল (সাঃ) – এর কাছে এসে বলল, ‘ইয়া রাসূল (সাঃ)! আমি যুদ্ধে শরীক হব, না ইসলাম গ্রহন করব?’ তিনি বললেন, ‘ইসলাম গ্রহন কর, তারপর যুদ্ধে যাও। ’ তারপর সে ব্যাক্তি ইসলাম গ্রহন করে যুদ্ধে গেল এবং শাহাদাত বরণ করল। রাসূল (সাঃ) বললেন, ‘সে অল্প আমল করে বেশী পুরস্কার পেল। (সহীহ বুখারি – ২৬১৩ , অধ্যায়ঃ ৪৮)
রাসূল (সাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যাক্তি আল্লাহর পথে জিহাদকারীর আসবাবপত্র সরবরাহ করে সে যেন জিহাদ করল। আর যে ব্যাক্তি আল্লাহর পথে কোন জিহাদকারীর পরিবার-পরিজনকে উত্তমরূপে দেখাশোনা করে, সেও যেন জিহাদ করল।(সহীহ বুখারি – ২৬৪৬ , অধ্যায়ঃ ৪৮)
রাসুল সা : বলেছেন ” আমি লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আদিষ্ট হয়েছি যতক্ষণ না তারা এ সাক্ষী দিবে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ , তারা এ কালিমা পাঠ করলে তাদের জান ও মাল আমার হাত থেকে নিরাপদ থাকবে , ইসলামের দন্ডবিধি ছাড়া আর তাদের চূড়ান্ত হিসেব মহান আল্লাহর উপর ন্যস্ত আবু ২৬৪০ সহিহ মুতাওয়াতির ( আলবানী তাহকিক )
আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর কাছে এসে বলল, আমাকে এমন কাজের কথা বলে দিন, যা জিহাদের সমতহল্য হয়। তিনি বলেন, আমি তা পাচ্ছি না। (এরপর বললেন,) তুমি কি এতে সক্ষম হবে যে, মুজাহিদ যখন বেরিয়ে যায়, তখন থেকে তুমি মসজিদে প্রবেশ করবে এবং দাঁড়িয়ে ইবাদত করবে এবং (এতটুকু) আলস্য করবে না, আর সিয়াম পালন করতে থাকবে এবং সিয়াম ভাঙ্গবে না। লোকটি বলল, তা কার সাধ্য? আবূ হুরায়রা (রা) বলেন, ‘মুজাহিদের ঘোড়া রশিতে বাঁধা থাকা অবস্থায় ঘোরাফেরা করে, এতেও তার জন্য নেকি লেখা হয়।’ (মুত্তাফাকুন আলাইহি )
আবু উমামা রা : সুত্রে বর্ণিত রাসুল সা : বলেছেন ” যে নিজে যুদ্ধ করেনি অথবা কোন মুজাহিদকে যুদ্ধের সরঞ্জামের ব্যবস্থা করে দেয় নি অথবা মুজাহিদ পরিবারের উপকার করেনি আল্লাহ কিয়ামতের পূর্বে তাকে কঠিন বিপদে ফেলবেন আবু দাউদ ২৫০৩ (আলবানী তাহকিক হাসান)
আবু হুরায়রা রা : সুত্রে বর্ণিত রাসুল সা : বলেছেন ” যে ব্যক্তি এমন অবস্থায় মারা গেল যে যুদ্ধ করেনি অথবা মনে যুদ্ধের তীব্র আকাঙ্খা রাখেনি তবে সে মুনাফিক অবস্থায় মারা গেল আবু দাউদ ২৫০২ ( আলবানী তাহকিক সহিহ ) সহিহ মুসলিম
নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ “লোকেরা শীঘ্রই একে অপরকে তলব করবে তোমাদেরকে চতুর্দিক থেকে আক্রমণ করতে যখন খাদ্যরত মানুষ তাদের থালা ভাগ করতে অন্যদের আমন্ত্রণ করবে। আমরা জিজ্ঞেস করলামঃ তা কি আমাদের সংখ্যালঘু হওয়ার দরুন ঘটবে? জবাবে তিনি (সাঃ) বললেনঃ না, তোমরা তখন বহুসংখ্যক থাকবেঃ কিন্তু তোমরা তখন গাদ এবং জঞ্জালের মত হবে যা প্রবাহে বাহিত হয়, আর আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তা’আলা) শত্রুদের অন্তর থেকে তোমাদের ভয় উঠিয়ে নিবেন এবং ওয়াহন (দুর্বলতা) তোমাদের অন্তরে গেঁথে দিবেন। তারা জিজ্ঞেস করলেনঃ ওয়াহন (দুর্বলতা) কি? রসুলুল্লাহ (সাঃ) জবাবে বললেনঃ জীবনের প্রতি ভালোবাসা ও মৃত্যুকে অপছন্দ করা।”
নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ «إِذَا تَبَايَعْتُمْ بِالْعِينَةِ وَأَخَذْتُمْ أَذْنَابَ الْبَقَرِ وَرَضِيتُمْ بِالزَّرْعِ وَتَرَكْتُمُ الْجِهَادَ سَلَّطَ اللَّهُ عَلَيْكُمْ ذُلاًّ لا يَنْزِعُهُ حَتَّى تَرْجِعُوا إِلَى دِينِكُمْ»
“তোমরা যখন ইনাহ চুক্তি করবে, গরুর লেজ ধরে রাখবে, কৃষি নিয়ে সন্তুষ্ট থাকবে ও জিহাদ পরিত্যাগ করবে আল্লাহ (আযযা ওয়া জাল) তোমাদেরকে লাঞ্চিত করবেন, আর তিনি তা উঠিয়ে নিবেন না যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমরা তোমাদের দীনে ফিরে আসো।”
সালামাহ বিন নুফাইল (রাঃ) বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে বসা ছিলাম, এমন সময় একজন লোক এসে তাকে বললেনঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ, ঘোড়াগুলোকে (জিহাদের জন্য ব্যবহার না করে আস্তাবলে রেখে দিয়ে) অপদস্থ করা হচ্ছে এবং অস্ত্র নামিয়ে রাখা হয়েছে, আর কিছু লোক বলাবলি করছে যে, আর জিহাদ করতে হবে না, জিহাদ শেষ হয়ে গিয়েছে! রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “তারা মিথ্যা বলছে! জিহাদ তো কেবল শুরু হয়েছে, আমার উম্মাতের একটি দল আল্লাহর পথে জিহাদ করতেই থাকবে। বরং আল্লাহ মানুষের মধ্য থেকে কারো কারো হৃদয়কে বক্র করে দিবেন যাতে তারা তাদের বিরদ্ধে লড়াই করতে পারে এবং এবং এই কিতাল থেকে তাদেরকে তিনি রিযক্ব দান করবেন যতক্ষণ না ক্বিয়ামাত কায়েম হয় এবং আল্লাহ্‌র ওয়াদা এসে যায়। ঘোড়ার কপালে ক্বিয়ামাত পর্যন্ত রহমত থাকবে “(সুনান নাসায়ি, হাদিস নং ৩৫৬১ – সাহিহ

কোন মন্তব্য নেই:

Comment here />

Widget ByBlogger Maruf
Widget ByBlogger Maruf