বুধবার, ৫ জুলাই, ২০১৭

সমকামিতার উৎপত্তি ও তার পরিণতি ( শাস্থি ) কি ???

সমকামিতার উৎপত্তি ও তার পরিণতি ( শাস্থি ) কি ???

হযরত লূত (আ:) এর পরিচয় :-----
লূত শব্দটির উদ্ভব লাতা শব্দ থেকে। এর অর্থ নিজেকে স্নেহভাজন করা। হযরত ইব্রাহীম (আ:) এর হৃদয় লুত (আ:) এর প্রতি অতিশয় স্নেহানুরক্ত ছিল বলে তার এরুপ নামকরন সার্থক হয়েছিল। আল্লাহ তার বান্দার (লুত) প্রতি বিশেষভাবে সন্তুষ্ট হয়ে তাকে আপন বন্ধু গ্রহণ করে নবুওয়্যাত দান করেছিলেন। বাইবেলে এ নবীকেই লুট বলা হয়েছে।
বংশ পরিচয় :------
লুত (আ:) ছিলেন ইব্রাহীম (আ:) এর ভাতিজা হারানের পুত্র। তার শৈশবকাল ইব্রাহীম (আ:) এর ছত্রছায়াই কেটেছে। লুত (আ:) কে ইব্রাহীম (আ:) লালন-পালন করেছেন। এজন্যই লুত (আ:) এবং বিবি সাবাহ দ্বীনে ইব্রাহীমের প্রথম মুসলিম বা আনুগত্যকারীদের অন্যতম। ইব্রাহীম (আ:) এর প্র্রতিটি সফরে লুত (আ:) এবং তার স্ত্রী তার সফরসঙ্গী থাকতেন। ইব্রাহীম (আ:) যখন হিজরত করে মিসর গেলেন তখনো লুত (আ:) এবং তার স্ত্রী সঙ্গে ছিলেন। পরবর্তী সময় লুত (আ:) মিসর থেকে হিজরত করে পূর্ব জর্দানের সুদুম (সোডম) ও আরা অঞ্চলে চলে যান। ইব্রাহীম (আ:) চলে যান ফিলিস্তিনে। সেখানে অবস্থান করেন এবং ইসলামের প্রচার ও প্রসারে আত্মনিয়োগ করেন।
লুত (আ:) এর সময়কাল :----
ইব্রাহীম (আ:) এর সময়কালেই লূত (আ:) নবুওয়্যাতের দায়িত্ব পালন করেছেন। ইব্রাহীম (আ:) এর সময়কাল নির্নয় করা সম্ভব হলে লূত (আ:) এর সময়কাল নির্ণয় করার ক্ষেত্রে আর কোন সমস্যাই থাকে না।
আধুনিক নৃতাত্বিক গবেষণার ফলে মুসলিম জাতির পিতা ইব্রাহীম (আ:) এর জন্মস্থানই শুধু আবিষ্কৃত হয়নি, যে সময়ে তিনি পৃথিবীতে আগমণ করেছিলেন, সে সমাজের অবস্থা কেমন ছিল এবং তাদের সভ্যতা সংস্কৃতি কেমন ছিল ইত্যাদি সম্পর্কে নানা তথ্য আবিষ্কৃত হয়েছে। স্যার নিওনার্ড ওলঙ্গ- এর দেয়া তথ্য হতে জানা যায় ২১০০ খৃষ্টপূর্বের কাছাকাছি সময়ে ইব্রাহীম (আ:) এই পৃথিবীতে আগমণ করেছিলেন বলে গবেষক ঐতিহাসিককগণ মনে করেন। সাম্প্রতিক কালের গবেষণা হতে দেখা যায় ইব্রাহীম (আ:) খৃষ্টপূর্ব ২১৬০ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং খৃষ্টপূর্ব ১৯৮৬ সালে মৃত্যবরণ করেন। তিনি ১৭৪ বছর বেছে ছিলেন।
লুত (আ:) এর সম্প্রদায় :-----
লুত (আ:) এর জাতি পৃথিবীর কোন অঞ্চলে বসবাস করতো এ সম্পর্কে বর্তমানকালের গবেষকগণ বলেন, ইরাক ও ফিলিস্তিনের মধ্যবর্তী এক স্থানে তারা বসবাস করতো। যাকে বর্তমনে ট্রান্সজর্দান বা ধুমজর্দান বলে।বাইবেল এই অঞ্চলের নাম বলেছে সুদুম। বর্তমান যে সাগরকে মৃত সাগর বা ডেডসি বলা হয় এর আশে পাশে কোথাও অবস্থিত ছিল বর্ণনা করা হয়।]
অপর দিকে তুলমুদ গ্রন্থে বলা হয়েছে, সুদুম ব্যতীত এ স্থানে আরো চারটি বড় বড় শহর ছিল। ঐতিহাসিকগণ বলেন, প্রত্যেকটি শহরের মাঝখানে বড় বড় বাগান ছিল। ওদুন নামক যে এলাকা ছিল তারই আশে-পাশে ছিল সুদুম এবং আমুরা এলাকা। বর্তমান কালের গবেষকগণ বলেন, এখন যেখানে সমুদ্র দেখা যাচ্ছে সেখানে ইতিহাসের কোন এক সময় ছিল বিশাল মরুভুমি। কালক্রমে সে মরুভুমি শহরে রুপান্তরিত হয়। তারপর তা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে (আসমানী গযবের) সাগরতলে বিলীন হয়ে যায়।
মৃত সাগর জর্ডান ও ইসরাইল সীমান্তে অবস্থিত। এ বিষ্ময়কর সাগরটি পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা নিচু জায়গা। সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ৪০০ মি. নীচু, অতি লবনাক্ততা ২৪০ ভাগ। স্বাভাবিক লবনাক্ততার পরিমাণ ৩০%। এই পানিতে প্রচুর ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরাইড ও বিষাক্ত পদার্থের কারণে কোন প্রানী বাচতে পারে না বিধায় একে মৃত সাগর বলে। এর পানির আপেক্ষিক ঘনত্ব এতো বেশি যে হাত পা বেধে ফেলে দিলেও কারো ডোবার সম্ভাবনা নেই। এ হ্রদে লবণ জমতে জমতে অনেক অদৃশ্যমান পিলার সৃষ্টি হয়েছে।
গবেষকদের ধারনা এই স্থানেই লুত (আ:) এর জাতি বাস করতো। এবং তাদের উপরই আল্লাহর গযব এসেছিল। ফলে তাদের সে এলাকা সমুদ্রের অতলে তলিয়ে যায়। এই মৃত সাগরের এলাকায় এক সময় যে মানব জাতি বাস করতো তার প্রমাণ পাওয়া গেছে। দৈনন্দিন জীবনে মানুষ যা ব্যাবহার করে এবং বাস করার গৃহের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। গবেষকদের ধারণা ভুমিকম্পে ইটালীর পম্পেই নগরী যেমন শতশত মিটার নীচে চলে গেছে ঠিক তেমনি লূত (আ:) এর জাতি যে এলাকায় বসবাস করতো, সে এলাকায় বড় ধরনের ভূমিকম্পে শত শত মিটার মাটির নীচে চলে গিয়েছে এবং সে এলাকা সমুদ্রের তলদেশে নিমজ্জিত।
সুদুম আমুরার সবুজ শ্যামল মরুদ্যান দুটি খুবই উর্বর ছিল। তাতে পানির সরবরাহ ছিল পর্যাপ্ত। ফলে ভুমি ছিল অত্যন্ত উর্বর ও শষ্যে ভরপুর। অঞ্চলটিতে নানা স্বাচ্ছন্দপূর্ণ জীবনের অধিকারী, জীবনের সব রকমের উপকরণের প্রাচুর্য আল্লাহ পাক তাদেরকে ঢেলে দিয়েছিলেন।
লুত (আ:) এর জাতি তাদের প্রাচুর্যময় জীবনযাত্রার সঙ্গে হয়ে উঠে বেপরোয়া। সমাজ জীবনে তারা জুলুম-অত্যাচার, মারামারি, নির্লজ্জতা ও কুকর্মের ক্ষেত্রে এ যুগের সকল জাতিকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এ জাতির চরিত্র ছিল অত্যন্ত জঘন্য প্রকৃতির। পৃথিবীতে পরিচিত এবং অপরিচিত অপরাধ ও এমন কোন অপরাধ নেই যা সেই জাতির ভিতর ছিল না। অন্যায় আর বেহায়াপনার সাগরে নিমজ্জিত ছিল সেই জাতি। সে সময় তারা আরো একটি অপরাধ অবিষ্কার করেছিল যা তখন পর্যন্ত কোন জাতির লোক এমন অপরাধের সাথে পরিচিত ছিল না। পবিত্র কোরআন হতে জানা যায় যে, তখন পর্যন্ত পৃথিবীর মানুষ জানতো না, এই ধরনের কোন কু-কর্ম করা যায়।
লূত (আ:) এর জাতিই সেই কুকর্মের জন্ম দিয়েছিল। সে কু-কর্মের নাম হলো সমকাম-ইংরেজিতে যাকে হোমোসেক্স বলে। সে জাতির পুরুষেরা নারীর সাথে যৌনক্রিয়া করার চেয়ে পুরুষে পুরুষে রতিক্রিয়া করতে অধিক আগ্রহী ছিল। এই জঘন্য অপকর্ম তারা প্রকাশ্যে করে আনন্দ লাভ করত। সুন্দরী নারীকে ত্যাগ করে তারা পুরুষের সাথে রতিক্রিয়া করতো।
আজ হতে হাজার হাজার বছর পূর্বে এমন একটি জাতি এই ঘৃনিত ও জঘন্য প্রথার আবিষ্কার করেছিল, বর্তমান যুগের সভ্যতাগর্বী মানুষেরা যে জাতিকে অজ্ঞ অশিক্ষিত আর মূর্খ ছাড়া আর কিছুই বলেনা। কিন্তু সেই অজ্ঞ অশিক্ষিত ও মূর্খ জাতি কর্তৃক আবিষ্কৃত ঘৃণিত ও জঘন্য কর্ম সমকামকে বর্তমানের সভ্যতা গর্বিত মানুষ আনন্দের সাথে স্বাগত জানিয়েছে!!!
বর্তমান বিশ্বে পাশ্চাত্যের অধিকাংশ ব্যাক্তি ও সমাজ জীবনে নৈতিকতার কোন অস্তিত্ব নেই। পাশ্চাত্য জগতে মুক্ত যৌনচার সভ্য মানুষকে পশুত্বের দ্বারপ্রান্তে দাঁড় করিয়েছে। বস্তুবাদী সমাজে অশালীন ও অশ্লীল যৌনাচার, নৈতিকতাহীনতা এক ভয়াবহ স্তরে উপনীত হয়েছে। ফলে পরিবার গঠন এবং বিবাহ পদ্ধতি প্রায় বিলুপ্তির পথে। শিল্পোন্নত দেশগুলো যুবক-যুবতীদের অবাধ খোলামেলা এবং যৌনাচারের উপর কোন ধর্মীয় এবং সামাজিক বিধিনিষেধ আরোপ করে না। ফলে হাজার হাজার ধর্ষীতা কুমারী মাতা জন্ম দিচ্ছে হাজার হাজার জারজ সন্তান। ইউরোপ, আমেরিকার অনেক দেশেই সাবালিকা মেয়েদের মধ্যে প্রায় শতকারা ষাট ভাগই ধর্ষিতা। ১৯৭৯ সালে নিউইয়র্কে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারনে কয়েক ঘন্টা বিদ্যুৎ ছিল না। পৃথিবীর সভ্য জাতির নৈতিকতার বীভৎস্বরুপ এ সময়ে প্রকাশিত হয়েছে। শহরে সমকামিতা আর ধর্ষণের তান্ডবলীলা চলছিল। পিতা-মাতার সামনে হাজার হাজার নারীকে ধর্ষন করা হয়েছে। সমকামিতার লালসা থেকে রক্ষা পায়নি সুন্দর কিশোরেরা। বিশ্ববাসী এ জঘন্য ঘটনায় হয়েছিল স্তম্ভিত। সুইজারল্যান্ড, ডেনমার্ক, সুইডেন সহ পাশ্চাত্যের অনেক নাস্তিকবাদী দেশে পুরুষে-পুরুষে, নারীতে-নারীতে বিবাহ ব্যবস্থা স্বীকৃত হচ্ছে।
যাই হোক কোন বিদেশী সুদুম এলাকায় গমন করলে সে এলাকার লোকজন তার সমস্ত সম্পদ ছিনিয়ে নিত। তেমন বয়স হলে তার সাথে জোর জবরদস্তি করে সমকাম করা হত। ইব্রাহীম (আ:) আল ইয়ারাজকে সুদুমে প্রেরণ করেছিলেন তখন সে এলাকার এক লোক তার মাথায় পাথর ছুড়ে তার সব সম্পদ কেড়ে নেয় এবং আঘাতকারী আঘাতের পরিশ্রমের মজুরি দাবি করে। আদালত আঘাতকারীর পক্ষে রায় দিয়ে বলে তার আঘাতের পারিশ্রমিক দিয়ে দাও। আহত ব্যাক্তি একটি পাথর নিয়ে বিচারকের মাথায় আঘাত করে তার মাথা ফাটিয়ে দেয় এবং বলে, আমার এই মজুরি তাকে দিয়ে দাও। নিছক গল্প হতে পারে কিন্তু এতে সুদুম জাতির চরিত্র সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
আসমানী গযবের কবলে লুত (আ:) এর জাতি :-----
যেসব জাতির উপরে মহান আল্লাহ আসমানী গযব নাযিল করেছিলেন এবং তাদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন, কেন তাদের উপর গযব নাযিল করা হযেছিল, তাদের অপরাধ কি ছিল তা কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে। লুত (আ:) এর জাতিকে কি কারণে ধ্বংস করা হয়েছিল এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন : ” আর লূতকে আমি নবী বানিয়ে প্রেরণ করেছি। তারপর স্মরণ করো যখন সে নিজ জাতির লোকদেরকে বললো, তোমরা কি এতদূর নির্লজ্জ হয়ে গিয়েছো যে, তোমরা এমন সব নির্লজ্জতার কাজ করছো, যা তোমাদের পূর্বে পৃথিবীর কেউ করেনি। তোমরা স্ত্রী লোকদেরকে ত্যাগ করে পুরুষদের দ্বারা নিজেদের যৌন ইচ্ছা পুরন করে নিচ্ছো। প্রকৃতপক্ষে তোমরা একেবারেই সীমালংঘনকারী জাতি। কিন্তু তার জাতির লোকদের জবাব এ ছাড়া আর কিছুই ছিল না যে, বের করে দাও এই লোকদেরকে তাদের নিজেদের জনপদ হতে, এরা নিজেদেরকে বড় পবিত্র বলে দাবী করে। শেষ পর্যন্ত লূত ও তার ঘরের লোকদেরকে তার স্ত্রী ব্যাতিত যে পছন্দের লোকদের সাথে রয়ে গিয়েছিল, বেছে বের করে নিলাম। সেই জাতির লোকদের উপর এক প্রচন্ড বৃষ্টি বর্ষণ করলাম। এরপর দেখ ওদের সেই অপরাধী লোকদের কি পরিণাম হলো। (সূরা আরাফ : ৮০-৮৪)
বর্তমান বাইবেলে লুত (আ:) কে নারীলিপ্সু মাতাল হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তাকে দিয়ে তার মেয়েদেরকে ধর্ষণ করানো হয়েছে। আল্লাহর মর্যাদাবান নবীর চরিত্র বিকৃত করে তারা মুসলমানদের উপর তাদের আক্রোশ মিটিয়েছে। লুত (আ:) একজন পূত ও পবিত্র চরিত্রের অধিকারী ছিলেন। লুত (আ:) এর জাতির অনেক অপরাধের কথাই কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে। সেসব অপরাধের মধ্যে সবচেয়ে জঘন্য অপরাধ ছিল সমকামিতা। আর এ কারণেই তাদের উপর আল্লাহ পাক এমন ধরনের গযব নাযিল করেছিলেন যে, পৃথিবীর ইতিহাস হতে তারা নিশ্চিহৃ হয়ে গিয়েছিল।
এই ঘৃণ্য ও কদর্য কাজের দরুনই সুদুম জাতির লোকজন পৃথিবীতে স্থায়ী কুখ্যাতী লাভ করেছে, এ চরিত্রহীন লোকজন তো কখনোই এ কদর্য কাজ ত্যাগ করেনি কিন্তু গ্রীকদের ভূমিকা এ ব্যাপারে আরো লজ্জাজনক। গ্রীক দার্শনিকরা এই জঘন্য কাজকে একটা নৈতিক গুণের পর্যায়ে উন্নিত করতে চেয়েছিল। তবে গ্রীকরা তাদের কাজে ততটা সফলতা লাভ করতে পারেনি বিধায় সফলতা লাভ করছে আমিরিকা ও ইউরোপ।
বৈজ্ঞানিকভাবে এ তথ্য পতিষ্ঠিত যে. সমমৈথুন একান্তই প্রকৃতিবিরুদ্ধ কাজ। মহান আল্লাহ পাক সমগ্র জীব জাতীর মধ্যে স্ত্রী ও পুরুষের পার্থক্য রেখেছেন কেবলমাত্র বংশ রক্ষার উদ্দেশ্যেই নয় মানবজাতির ক্ষেত্রে এর পেছনে আরেকটি অতিরিক্ত উদ্দেশ্য নিহিত রয়েছে। তা হলো এই যে, স্ত্রী ও পুরুষ উভয়ে মিলে পরিবার গঠন করবে এবং তার ভিত্তিতে গড়বে সমাজ এবং সভ্যতা।
একজন সমকামী সে নিজেই ক্রিয়া কর্মের ধরন ও গঠন এবং মনস্তাত্ত্বিক প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে আর তাতে এক সাংঘাতিক বিকৃতি ও বিপর্যয়ের সৃষ্টি করে, যার ফলে উভয়ের দেহ মন ও নৈতিকতার উপর অত্যন্ত খারাপ প্রভাব বিস্তার লাভ করে, সে প্রকৃতির সাথে বিশ্বাস ভঙ্গ করে, খেয়ানত ও বিশ্বাসঘাতকাতার অপরাধ করে, কারণ যে স্বাদ আস্বাদনকে মানব জাতির ও সমাজ সভ্যতার খেদমতের পারিশ্রমিক বানানো হয়েছে এবং যা লাভ করার সাথে কতগুলো দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন এবং অধিকার পুরন অনিবার্য করে দেয়া হয়েছে, সে তা লাভ করতে চায় কেবল অবদান বা কল্যাণ সম্পাদন, অধিকার আদায় ও দায়িত্ব পালণের বাধ্যবাধকতা ছাড়াই।
এমন মানুষ নিজের সঙ্গে অন্তত একজন পুরুষকে অস্বাভাবিক স্ত্রীজনাচিত কাজে নিয়োজিত করে এবং অন্তত দুইজন নারীর জন্য যৌন উচ্ছ্বঙ্খলতা, নৈতিক অধ:পতন ও বিপর্যয়ের দুয়ার খুলে দেন। লুত জাতি শুধুমাত্র নির্লজ্জ নৈতিকতা বিবর্জিত ও চরিত্রহীন ছিল না, তাদের অধ:পতন এতো নিম্নে নেমে গিয়েছিল যে, এই ঘৃণ্য কাজকে তারা কোন অপরাধ বলেই মনে করতো না। এবং এই কাজ যারা ঘৃণা করতো তাদেরকেই ঐ জাতির লোকজন ঘৃনা করতো। যে ব্যাক্তি তাদেরকে এই কাজ ত্যাগ করতে উপদেশ পরতো তাদের অস্তিত্বই তারা তাদের সমাজে বরদাশত করতে রাজি ছিল না। লূত (আ:) এবং তার আদর্শ যারা গ্রহণ করেছিল তাদেরকে ঐ সমাজের লোকজন সে সমাজ হতে বের করে দেয়ার জন্য বদ্ধপরিকর ছিল। এ জাতির সামগ্রিক জীবনে পবিত্রতার সামান্যতম উপাদানও অবশিষ্ট থাকে না, এমন জাতিকে পৃথিবীর বুজে জীবিত রাখার কোন যু্ক্তিসঙ্গত কারন থাকতে পারে না।
লুত (আ:) এর স্ত্রী সুদুম জাতিরই মেয়ে ছিল। সে ছিল সুদুম জাতির যাবতীয় কর্মকান্ডের সমর্থক। এ কারনেই আল্লাহ পাক লূত (আ:) কে আযাব অবতীর্ণ হবার আগে বলেছিলেন, এই স্ত্রীকে তোমাদের সাথে গ্রহণ করো না, সে আল্লাহর বিধানের বিপরীত কর্মকান্ডের সমর্থক। আযাব আসার পূর্বে লুত (আ:) কে ও তার ঈমানদ্বার সঙ্গীদেরকে উক্ত এলাকা থেকে হিজরত করার জন্য আদেশ দিয়ে ছিলেন।
গযবের ফেরেশতার আগমন :-------
লুত (আ:) কে আল্লাহ তায়ালা মুসলিম জাতির জাতির পিতা ইব্রাহীম (আ:) এর সহযোগী হিসেবে প্রেরণ করেছিলেন। সুদুম জাতিকে ধ্বংস করার জন্য যে ফেরেশতা দলের (দুইজন মতান্তরে তিনজন) আগমন ঘটেছিল সে ফেরেশতা দল সরাসরি লুত এর কাছে না যেয়ে প্রথমে সমকালীন শ্রেষ্ঠ নবী ও রাসূল ইব্রাহীম (আ:) এর নিকট এসেছিলেন। ইব্রাহীম (আ:) তাদের জন্য খাওয়ার আয়োজন করলেন। কিন্তু মেহমানগণ খেতে অস্বীকার করলেন। এতে ইব্রাহীম (আ:) ধারণা করলেন-এরা কোন শত্রু পক্ষের লোক হবে। মেহমানগন বললেন, আমরা আযাবের ফেরেশতা। আমরা আল্লাহর নির্দেশে লুত (আ:) এর জাতিকে ধ্বংস করার জন্য এসেছি।
ইব্রাহীম (আ:) বললেন, সামান্য কোন কল্যাণও যদি ঐ জাতির ভিতর বিদ্যমান থাকে তাহলে সেই কল্যাণের বিনিময়ে ঐ জাতিকে রক্ষা করুন। কিন্তু ফেরেশতাগণ তাকে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, তাদেরকে অনেক সুযোগ দেয়া হয়েছিল কিন্তু তারা সে সুযোগ গ্রহণ করেনি। এখন আর কোন অবকাশ নেই। তাদের ধ্বংস অনিবার্য এবং অত্যাসন্ন।
এ প্রসঙ্গে কুরআন বলতেছে, “ইব্রাহীম বললেন, হে ফেরেশতাগণ আপনারা কোন অভিযানে আগমন করেছেন? তারা উত্তর দিল, আমরা এক অপরাধি জাতির প্রতি প্রেরিত হয়েছি-যেন আমরা তাদের প্রতি পাক মাটির পাথর বর্ষণ করি। যা আপনার প্রতিপালক এর সীমা লংঘনকারীদের জন্য নির্ধারিত হয়ে আছে। পরে আমি সে সব লোকদেরকে বের করে দিলাম, যারা এই জনপদে মুমিন ছিল”। (সূরা যারিয়াত : ৩১-৩৫)
অবশেষে আযাবের ফেরেশতাগন ইব্রাহীম (আ:) এর সাথে দেখা করে লুত (আ:) এর জাতির আবাসস্থল সুদুমে গিয়ে উপস্থিত হলেন। তারা অপূর্ব সুন্দর চেহারার কিশোর বালক বা তরুনের আকৃতি ধারণ করে লুত (আ:) এর বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হলেন আল্লাহর নবী মেহমানদের দেখে অত্যন্ত বিচলিত হয়ে পড়লেন।
তার চিন্তার কারন ছিল সুদুম জাতি সুন্দর চেহারার কিশোর তরুন দেখলেই তার সাথে জোর করে বলাৎকার করতো। লূত (আ:) ভাবলেন এই মেহমানগণ বয়সে এমন যে, এদেরকে তার জাতির লোকজন দেখলেই তারা এসে শাক্তি প্রয়োগ করে মেহমানদের ছিনিয়ে নিয়ে যাবে। সুতরাং মেহমান রক্ষার চিন্তায় তিনি অত্যন্ত পেরেশান হয়ে পড়লেন।
ইতিমধ্যে তার জাতির লোকজন জানতে পারলো যে, এমন কয়েকজন অদ্ভুত সুন্দর চেহারার তরুন তাদের শত্রু লুতের বাড়িতে এসেছে। তারা দলবদ্ধভাবে এসে লূত (আ:) এর বাড়ি ঘেরাও করলো। তারা তরুনদেরকে তাদের হাতে তুলে দেয়ার জন্য বারবার দাবি করতে লাগলো, অন্যথায় তারা শক্তি প্রয়োগ করে বাড়ি থেকে বের করে নেওয়ারও হুমকি দিল। লুত (আ:) তাদের বুঝালেন এবং বললেন, এই দেশে সুন্দর নারীর অভাব নেই। আমরাও মেয়ে রয়েছে, যাকে ইচ্ছে করলে তোমরা বিয়ে করে স্বাভাবিক ঘর সংসার করতে পার।
কিন্তু সুদুম জাতির লোকজন নবীর কোন যুক্তিই গ্রহণ করলো না। তারা শেষে সময় বেধে দিল, এই সময়ের মধ্যে সুন্দর তরুনদেরকে তাদের হাতে তুলে না দিলে তারা জোর করে বাড়ি থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যাবে। লুত (আ:) কথায় কৌশলে তাদের বাড়ির বাইরে রেখে মেহমানদের কাছে এলেন। নবী আল্লাহর নিকট সাহায্য কামনা করলেন। আল্লাহ যেন তার জালিম জাতির লোকদের নিকট মেহমানদেরকে রক্ষা করেন। মেহমানরুপী ফেরেশতাগণ বললেন, হে আল্লাহর নবী! আমাদের এই চেহারা দেখে আপনি চিন্তিত হবেন না, কারণ আমরা মানুষ নই আমরা আল্লাহর ফেরেশতা। আল্লাহর আদেশে আপনার জাতিকে ধ্বংস করার জন্য এসেছি। কারণ আপনার জাতির কর্মকান্ড এমন স্তরে পৌছেছে যে, তারা আল্লাহর গযবের উপযুক্ত হয়ে পড়েছে। আপনি এবং আপনার সঙ্গি সাথীগণ এই ধ্বংসলীলা হতে সংরক্ষিত হবেন। কিন্তু আপনার স্ত্রীকে তাদের সাথে ধ্বংস করে দেয়া হবে। লুত (আ:) আল্লাহর আদেশে তার ঈমানদ্বার সাথীদের নিয়ে রাতের প্রথম প্রহরেই নিরাপদ এলাকায় চলে গেলেন। তার স্ত্রী তাদের সাথে যেতে অস্বীকার করেছিল। সে তার নবী স্বামীকে ত্যাগ করে তার জাতীর সাথেই থাকতে অধিক পছন্দ করলো।
রাতের এক অংশে যখন অপরাধী জাতি গভীর সুসুপ্তিতে নিমগ্ন ছিল, এমন সময় আল্লাহর ফয়সালা কর্যকর হয়ে গেলো। ভয়ংকর একটা গর্জন হলো, গোটা এলাকাটিকে উপরে উঠিয়ে নিয়ে তা উল্টিয়ে ফেলে দেয়া হলো। উপর হতে পাথর নিক্ষেপ করে গোটা জনপদ নিশ্চিহৃ করে দেয়া হলো। অপরাধী জাতি তাদের অপরাধের বিনিময় এভাবেই আল্লাহর নিকট থেকে লাভ করেছিল।
কেয়ামত পর্যন্ত যে মানব সভ্যতা এই পৃথিবীকে আবাদ করতে থাকবে, তাদের শিক্ষার জন্যই আল্লাহ সুদুম জাতির ধ্বংসের চিত্র পবিত্র কুরআনে একে দিয়েছেন। আল্লাহ সুদুম জাতির ইতিহাস এভাবে বর্ননা করেছেন-
“ফেরেশ্তাগণ যখন লুত-পরিবারের নিকট আসিল, তখন লুত বলিল, ‘তোমরাতো অপরিচিত লোক’। তাহারা বলিল, ‘না, উহারা যে বিষয়ে সন্দিগ্ধ ছিল আমরা তোমার নিকট তাহাই লইয়া আসিয়াছি। আমরা তোমার নিকট সত্য সংবাদ লইয়া আসিয়াছি এবং অবশ্যই আমরা সত্যবাদী। সুতরাং তুমি রাত্রির কোন এক সময়ে তোমার পরিবারবর্গসহ বাহির হইয়া পড় এবং তুমি তাহাদের পশ্চাদানুসরণ কর এবং তোমাদের মধ্যে কেহ যেন পিছন দিকে না তাকায়; তোমাদের যেখানে যাইতে বলা হইতেছে তোমরা সেখানে চলিয়া যাও।” আমি তাহাকে এই বিষয়ে ফয়সালা জানাইয়া দিলাম যে, প্রত্যুষে উহাদের সমুলে বিনাশ করা হইবে। নগরবাসীগণ উল্লসিত হইয়া উপস্থিত হইল। সে বলিল, ‘উহারা আমার অতিথি; সুতরাং তোমরা আমাকে বেইযযত করিওনা। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর ও আমাকে হেয় করিও না।” উহারা বলিল, “আমরা কি দুনিয়াসুদ্ধ লোককে আশ্রয় দিতে তোমাকে নিষেধ করিনাই ?” লূত বলিল, ” একান্তই যদি তোমরা কিছু করিতে চাও তবে আমার এই কণ্যাগণ রহিয়াছে”। তোমার জীবনের শপথ, উহারা তো মত্ততায় বিমূঢ় হইয়াছে। অত:পর সূর্যোদয়ের সময়ে মহানাদ উহাদেরকে আঘাত করিল; আর আমি জনপদকে উল্টাইয়া উপর নীচ করিয়া দিলাম এবং উহাদের উপর প্রস্তর-কংকর বর্ষণ করিলাম। অবশ্যই ইহাতে নিদর্শন রহিয়াছে পর্যবেক্ষণ-শক্তিসম্পন্ন ব্যাক্তিদের জন্য। উহা তো লোক চলাচলের পথিপার্শ্বে এখনও বিদ্যমান। অবশ্যই ইহাতে মুমিনদের জন্য রহিয়াছে নিদর্শন। (সুরা নাহল : ৬১-৭৭)।
নবীগণ হলেন নৈতিকতার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক। তার বাড়িতে মেহমান এলো আর সেই মেহমানকে নোংরা উদ্দেশ্যে সেই জাতি ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য আক্রমন পরিচালিত করেছিল। এ থেকেই অনুমান করা যায় যে, সেই জাতি কতটা নিম্নস্তরে নেমে গিয়েছিল। তাদের পশু প্রবৃত্তি কতটা নিকৃষ্ট হয়ে পড়েছিল। নির্লজ্জতা তাদেরকে কিভাবে গ্রাস করে ফেলেছিল এ ঘটনা থেকেই তা অনুমান করা যেতে পারে। একজন নবীর বাড়ীর মেহমান এর যখন জান, মাল ইজ্জতের কোন মূল্য তাদের কাছে ছিল না তাহলে সেই জাতির সাধারণ মানুষের জান মাল ইজ্জতের যে কানাকড়ি মূল্য ছিল না, এ ঘটনা হতে তা স্পষ্ট হয়ে যায়। তালমুদ গ্রন্থে এই সুদুম জাতির আরো বিচিত্র অপরাধের কথা উল্লেখ রয়েছে।
পোড়া মাটির বর্ষণ সম্পর্কে গবেষকগণ বলেন, হতে পারে তা পোড়া মাটিকে পাথরে রুপান্তরিত করে তা বৃষ্টির আকারে বর্ষণ করা হয়েছিল। অথবা উর্ধ্বগগন হতে পোড়া মাটির মত উল্কাপাত ঘটানো হয়েছিল। আবার এমন হতে পারে, আগ্নেয়গিরি অগ্নুৎপাতের ফলে তা মৃত্তিকাগর্ভ হতে বের হযে তাদের উপর চতুর্দিক হতে বৃষ্টির মত বর্ষিত হয়েছিল। অথবা একটা প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় তাদেরকে পরিবেষ্টন করেছিল এবং সেই ঝড় তাদের উপর পাথর বর্ষণ করেছিল।
ধ্বংস প্রাপ্ত এই এলাকাটি লোক চলাচলের পথের পাশে অবস্থিত, হিজাজ থেকে সিরিয়া এবং ইরাক হতে মিসর যাবার পথে এই ধ্বংসপ্রাপ্ত এলাকাটি দেখা যায়। সাধারণত বাণিজ্য যাত্রীদল এ ধ্বংসের নিদর্শনগুলো দেখে থাকে। বার্তমানেও সমগ্র এলাকা জুড়ে এ ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে।
এবার সমকামিতা সম্বন্ধিয় কিছু হাদীস দেখি :-----
রাসূলে পাক (স:) এরশাদ করেন, “আমি তোমাদের সম্পর্কে সবচেয়ে বেশী যে বিষয়টির আশংকা করি, তা হচ্ছে কওমে লুতের জঘন্য কাজ”। অত:পর তিনি এই দুষ্কর্মে লিপ্তদেরকে এই বলে তিনবার অভিসম্পানত করেন: “কওমে লুতের দুষ্কর্ম যে করবে তার উপর আল্লাহর অভিসম্পাত”। (ইবনে মাজাহ, তিরমিযী, হাকেম)।
হযরত ইবনে আব্বাস (রা:) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন : “কওমে লুত দশটি কুঅভ্যাসে অভ্যস্ত ছিল : (১) মেয়েরা পুরুষদের মত ছোট এবং পুরুষরা মোয়েদের মত বড় বড় চুল রাখা, (২) ছতর প্রকাশ করা, (৩) মাটির গুলাল চালানো, (৪) কংকর নিক্ষেপ করা, (৫) উড়ন্ত কবুতরের বাজি খেলা, (৬) আঙ্গুল মুখে পুরে শিস দেয়া, (৭) পায়ের হাটু বের করা বা গিরা ফোটানো, (৮) অহংকারের সাথে টাখনুর নীচে কাপড় ঝুলানো।, (৯) মদ পান করা, (১০) পুরুষে পুরুষে সমকাম। এ উম্মতের মধ্যে অতিরিক্ত আরো একটি দুষ্কর্ম দেখা দেবে : নারীর সাথে নারীদের যৌন মিলন।
রাসূল (স:) বলেছেন, যৌন আবেগের সাথে নারীদের পারস্পরিক আলিঙ্গনও ব্যাভিচারের পর্যায়ভুক্ত। (তাবরানী)।
হযরত আবু হোরায়রা (রা:) বর্ণনা বনের, রাসূলে পাক (স:) বলেছেন : চার শ্রেনীর মানুষ সকাল সন্ধ্যা (অর্থাৎ সার্বক্ষণিকভাবে) আল্লাহর গযবের আওতায় থাকে। জানতে চাওয়া হলো : হে আল্লাহর রাসূল (স:) ! তারা কারা ? তিনি বললেন, নারীর বেশ ভুষা গ্রহণকারী পুরুষ, পুরুষের বেশ ভুষা গ্রহণকারী নারী, পশুর সাথে যৌন সঙ্গমকারী এবং কওমে লুতের আচরণকারী অর্থাৎ সমকামী। (তাবরানী, বায়হাকী)
আরেক হাদীসে হযরত রাসূলে পাক (স:) এরশাদ করেন : সাত শ্রেনীর মানুষের উপর আল্লাহ অভিশাপ বর্ষন করেন, হাশরের দিন আল্লাহ পাক তাদের দিকে তাকাবেন না, তাদেরকে বলবেন : “তোমরা জাহান্নামীদের সাথে প্রবেশ কর।” তারা হচ্ছে (১) সমকামী, (২) যার সাথে সমকাম করা হয়, (৩) পশুর সাথে সঙ্গমকারী, (৪) কোন মহিলা ও তার মেয়েকে একত্রে বিয়েকারী, (৫) বোনের সাথে ব্যাভিচারী, (৬) কণ্যার সাথে ব্যাভিচারি, (৭) হস্ত মৈথুনকারী। তবে তওবা করলে আল্লাহ পাক মাফ করতে পারেন।”
রাসূল (স:) বলেছেন, “যে লোক সমকাম কিংবা মহিলাদের মলদ্বার দিয়ে যৌন সঙ্গম করবে, (হাশরের দিন) আল্লাহ পাক তার দিকে ফিরেও তাকাবেন না। (তিরমিযী, নাসায়ী, ইবনে হোব্বান)।
কামভাবের সাথে কোন মাহিলা কিংবা সুদর্শন তরুনের দিকে তাকানোও ব্যাভিচারের পর্যায়ভুক্ত। কেননা পূর্বোল্লিাখিত রাসূল (স:) এর এক হাদীসে আছে, “লালসার দৃষ্টি চোখের ব্যাভিচার, লালসার বাক্যালাপ জিহ্বার ব্যাভিচার, কামভাবে স্পর্শ করা হাতের ব্যাভিচার, এ উদ্দেশ্যে হেটে যাওয়া পায়ের ব্যাভিচার, অশ্লিল কথাবার্তা শুনা কানের ব্যাভিচার, কামনা বাসনা মনের ব্যভিচার, গুপ্তাঙ্গ – যা বাস্তবে রুপদান করে কিংবা দমন করে”। (বোখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিযী)।
“কোন পুরুষ যখন কোন মাহিলার সাথে নিভৃতে অবস্থান করে শয়তান তখন তৃতীয় ব্যাক্তি হিসেবে সেখানে অবস্থান করে। ” (তিরমিযী, তাবরানী)।
আল্লাহ পাক আমাদেরকে ধর্ম মেনে নৈতিকতার অনুশীলন করে সচ্চিরিত্রবান মুসলিম হয়ে ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তি অর্জন করার তৌফিক দান করুন।
(সংগৃহীত)


                           ----------------------------------------------------------------------------------
                         '' শুধু নিজে শিক্ষিত হলে হবেনা, প্রথমে বিবেকটাকে শিক্ষিত করুন। ''

কোন মন্তব্য নেই:

Comment here />

Widget ByBlogger Maruf
Widget ByBlogger Maruf