সোমবার, ১৫ এপ্রিল, ২০১৩

বিপ্লব চাই !!!




বিপ্লব চাই

১. চিন্তার বিপ্লবঃ
  স্রষ্টা সর্বশেষ বার্তা মারফত সর্বশেষ বার্তাবাহককে নির্দেশ দিয়েছেন সকল ধর্মের মানুষকে আহবান জানাতেঃ “আসুন ঐ কথার দিকে, যাতে মিল আছে আমাদের পরস্পরে, আমরা সবাই এক স্রষ্টার সৃষ্টি, উপাসনা করব না তিনি ছাড়া অন্য কারো, তার সাথে অংশিদার করব না অন্য কাউকেই এবং আমরা একে অন্যের উপর প্রভুত্ব করব না বা করতে দেব না।” চিন্তা বিপ্লব হল, বলা ও লিখার মাধ্যমে কোন বিষয়ে জনমত সৃষ্টি করা, যা প্রত্যেক সংস্কারক করেছেন, যা বর্তমানে যুক্তি ও প্রযুক্তির মাধ্যমে করে ডাক্টার জাকির আব্দুল করিম নায়েক (জন্ম ১৮/১০/১৯৬৫, মুম্বাই, ভারত) ধর্মীয় ভ্রাতৃত্ব স্থাপনে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করেন। যার প্রচাম মাধ্যম পিস্ টিভি, যাকে দেখা যায় ইসলামিক টিভিতেও। 



 ২. চরিত্রের বিপ্লবঃ
চরিত্র না থাকলে আর কিছুই থাকে না। নীতি-নৈতিকতা না থাকলে চরিত্র থাকে না। ধর্ম না থাকলে নীতি-নৈতিকতা থাকে না। তাই একমাত্র ধর্ম পালন ও স্রষ্টা ভিতিই পারে মানুষকে চরিত্রবান করতে। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী মানুষকে ধার্মিক ও চরিত্রবান করার জন্য বিনা বেতনে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন কারী ইলিয়াছ (রঃ)(১৮৮৫-১৯৪৪) কর্তৃক ভারতের দিল্লিতে ১৯২০ সালে প্রতিষ্ঠিত তাবলীগ জামায়াত-এর ভায়েরা, যারা ইসলামের প্রাথমিক শিক্ষা দিচ্ছেন সব দেশে সকল ভাষায়। তাদের সিলেবাসভুক্ত বিষয় মোট ৬টি, যথাঃ ইমান, সালাত, ইলম, যিকির, ইকরামুল মুসলিমিন ও ইখলাসে নিয়্যাত। মসজিদ ভিত্তিক তাবলীগী কার্যক্রম সাধারণ মানুষের জন্য অত্যন্ত উপযুক্ত। বাংলাদেশে এর কেন্দ্র কাকরাইল মসজিদ, ঢাকা। 


 ৩. শিক্ষার বিপ্লবঃ
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা দুর্নীতি ও বেকারত্ব। এর জন্য দায়ী ইংরেজ প্রবর্তিত ধর্মহীন চাকুরীমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা। ১৭৫৭ সালে চক্রান্তের মাধ্যমে এ দেশ দখলকারী ইংরেজদেরকে মেনে নিতে না পারায়, ইংরেজ কর্তৃক মুসলিমদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে ১৭৮০ সালে তাদেরই প্রতিষ্ঠিত আলিয়া মাদরাসাকে গ্রহণ করতে না পারায় এবং ১৮৫৭ সালে ইংরেজ বিরুধী বিদ্রোহ ব্যর্থ হওয়ায়, পলাতক অবস্থায় মাওলানা কাসেম নানতবী (১৮৩২-১৮৮০) ও মাওলানা রশীদ আহমদ গাঙ্গোহী (১৮২৯-১৯০৫)-গণ কর্তৃক ১৮৬৬ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশে দারুল উলূম দেওবন্দ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে বিপ্লবী কর্মকান্ড শিক্ষার রূপ ধারন করে। যার অনুসরণে প্রতিষ্ঠা হয় কওমী বা বেসরকারী মাদরাসাসমূহ। বাংলাদেশে এর কেন্দ্র হচ্ছে চট্টগ্রামের দারুল উলুম হাটহজারী (১৯০১) ও জামিয়া ইসলমিয়া পটিয়া (১৯৩৮). এ ক্ষেত্রে নব সংযোজন হচ্ছে প্রাইমারী স্থরে কারী বেলায়ত হুসাইন কর্তৃক আবিস্কৃত নূরানী পদ্ধতির মাদরাসাসমূহ, যা অত্যন্ত জনপ্রিয়, যার প্রধান কেন্দ্র মোহাম্মদপুর, ঢাকা। 


 ৪. অর্থের বিপ্লবঃ
  ইসলামে সুদ নিষিদ্ধ এবং জাকাত বাধ্যতামূলক। জাকাত ও হজ্জ্ব এ দুটি ইসলামের অন্যতম প্রধান রুকন অর্থের সাথে সম্পর্কিত। বিশ্বনবী বাল্যকালে মেষ পালন করে, যৌবন কালে আমদানী-রপ্তানী ব্যবসা করে এবং প্রবীন কালে গাছ লাগিয়ে কৃষি কাজ করে মানুষকে স্বনির্ভরতা ও কর্মমূখী শিক্ষা দিয়ে গেছেন। তিনি নিজ শ্রম, বিশ্বস্ততা ও অভিজ্ঞতা এবং মক্কাবাসীর পূজির সংমিশ্রণে অর্জিত লাভ-ক্ষতি ভাগাভাগী করে আধুনিক ইসলামী ব্যাংকিং সিষ্টেমের মডেল রেখে যান। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিষ্ঠিত হয় সৌদিআরবের জেদ্দায় ইসলামিক ডেভলপমেন্ট ব্যাংক (১৯৭৩). বাংলাদেশে সর্বপ্রথম প্রতিষ্ঠিত হয় ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিঃ (১৯৮৩). অতপর একের পর এক জন্ম নেয় কওমী মাদরাসার যোগ্য ছাত্রদেরকে সর্বপথম মূল্যায়ণকারী আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক (১৯৯৫), সর্বপ্রথম ক্যাশ ওয়াক্ফ সিষ্টেম প্রবর্তনকারী সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক (১৯৯৫), চট্টগ্রাম বিভাগে অগ্রগামী ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক (১৯৯৯), সিলেট বিভাগে অগ্রগামী শাহ জালাল ইসলামী ব্যাংক (২০০১). কোন কোন সাধারন ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকে রুপান্তরিত হয়, যেমন এক্সিম ব্যাংক (১৯৯৯). কোন কোন পুরাতন ব্যাংক নতুন রূপ ধারন করে, যেমন আইসিবি ইসলামী ব্যাংক (১৯৮৭).আবার কোন কোন সাধারণ ব্যাংক ইসলামী শাখা চালু করে, যেমন সাউথইষ্ট ব্যাংক (১৯৯৫)-এর ককসবাজার শাখা। যদিও এ সবের অধিকাংশ কর্মকর্তা কর্মচারী আরবী শিক্ষায় শিক্ষিত না হওয়ায় ব্যবহারিক ক্ষেত্রে শরীয়া আইন পালনে যথেষ্ট ত্রুটি রয়েছে। অন্যদিকে মাদরাসা শিক্ষিতরা সাধারণত অংক ইংরেজীতে দূর্বল হওয়ায় ইসলামী ব্যাংকগুলোতেও চাকুরীর সুযোগ কম পায়। সাধারণ মানুষ সাধারণ প্রতিষ্ঠানের তুলনায় ইসলামী ব্যাংক, বীমা, এমএলএম, এনজিও, সমিতি ইত্যাদির প্রতি বেশি আশক্ত ও সম্পৃক্ত। তাই ইসলামী অর্থনীতির উপর যে কোন আঘাত ইসলামী বিপ্লবকে তরান্নিত করবে। বর্তমানে জাকাত ব্যাংক প্রতিষ্ঠার দাবী গণ দাবীতে পরিণত হচ্ছে, যা দাতা ও গ্রহিতাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জন্ম হবে, যা হবে একটি আন্তর্জাতিক ব্যাংক, যা হলে বাংলাদেশের দরিদ্র মানুষের লাভ হবে সব চেয়ে বেশি এবং সরকার অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভর্তুকী প্রদান থেকে রক্ষা পাবে। 


 ৫. গণ বিপ্লবঃ
গণ মানুষের জাগরণে সবকিছুই পরিবর্তন অনিবার্য হয়ে উঠে। যেমন, আরব বিশ্বে একের পর এক সরকারের পতন, যে পরিবর্তন ইসলামী বিপ্লবকে এক ধাপ এগিয়ে দিচ্ছে। এ সব পরিবর্তনে বড় ভূমিকা রাখছে আধুনিক প্রযুক্তি, তথা ইন্টারনেট ও মিডিয়া। তাই কোন মিডিয়ার উপর আঘাত আসা মূলত গণ মানুষের উপর আঘাত আসার নামান্তর। গণ বিপ্লবে বিশ্বাসী প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক ইসলামী সংগঠন হল ফিলিস্তিনের বিচারপতি তাকিউদ্দিন আন নাবাহানী কর্তৃক ১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হিযবুত তাহরীর, যা বাংলাদেশসহ অনেক দেশেই নিষিদ্ধ হলেও তাদের কার্যক্রম বা অগ্রগতি থামিয়ে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। বাংলাদেশে মাওলানা আব্দুর রহীম কর্তৃক ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত ইসলামী ঐক্য আন্দোলনও গণ বিপ্লবে বিশ্বাসী। আবার কেউ কেউ গণ বিপ্লবে বিশ্বাস করলেও প্রচলিত নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে থাকে প্রচারণা ও সময় ক্ষেপনের উদ্দেশ্যে। আরব দেশের মত যেখানে নির্বাচন নেই সেখানে গণ বিপ্লবে পরিবর্তন আসলেও বাংলাদেশের মত যেখানে নির্দিষ্ট সময় পরপর নির্বাচন হয় সেখানে নির্বাচনের মাধ্যমেই গণ বিপ্লবের প্রকাশ ঘটে। তাই নির্বাচনকে গণ বিপ্লবের পথে প্রতিবন্ধক না ভেবে সহায়ক হিসেবে ব্যবহার করতে পারলেই কেবল কাংক্ষিত পরিবর্তন আসতে পারে দ্রুত। গণ বিপ্লবের মাধ্যমে পরিবর্তনের উদাহরণ হল ইরানী বিপ্লব এবং বাংলাদেশের ইতিহাসে ৬৯ ও ৯০ সালের রাষ্ট্র ও সরকার পরিবর্তন। বর্তমান চলমান আরব বসন্ত। 


 ৬. ব্যালট বিপ্লবঃ
ব্যালটের মাধ্যমে নেতার পরিবর্তন হলেও সাধারণত নীতির পরিবর্তন হতে দেখা যায় না। যাদের মধ্যে পরিবর্তন হয় তাদের পারস্পরিক তেমন কোন মৌলিক পার্থক্যও খোজে পাওয়া যায় না। তবে জনমত নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনে ব্যালটের কোন বিকল্প নেই। ব্যালট বিপ্লবে রাষ্ট্র সৃষ্টির উদাহরণ ১৯৪৭ সালের পাকিস্তান সৃষ্টি এবং ইসলামী সংগঠন কর্তৃক সরকার গঠনের উদাহরণ বর্তমান তুরস্ক। সংখ্যাগরিষ্ট আসন পেয়েও ক্ষমতা না পাওয়ার উদাহরণ হল অতীতের তুরস্ক ও বর্তমান আলজেরিয়া। বর্তমানে ব্যালট বিপ্লবে বিশ্বাসী কয়েকটি সংগঠন হলঃ মিশরে ১৯২৮ সালে হাসানুল বান্না প্রতিষ্ঠিত মুসলিম ব্রাদারহুড বা ইখওয়ানুল মুসলিমিন, যারা ২০২৮ সালেম মধ্যে ক্ষমতায় যাওয়ার আশা করছে। উপমহাদেশে আছে ১৯০৬ সালে ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত মুসলিম লীগ, যার প্রধান মোহাম্মদ আলী জিন্নার নেতৃত্বে ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টি হয়। 
যার সাথে ছিল ১৯৪৫ সালে মাওঃ শাব্বির আহমদ উসমানীর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম। এর রাজনৈতিক শাখা হিসেবে ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের আগে প্রতিষ্ঠিত হয় নেজামে ইসলামী পার্টি। পাকিস্তান বা বাংলাদেশ সৃষ্টিতে ১৯৪১ সালে মাওঃ মওদূদী প্রতিষ্ঠিত জামায়াতে ইসলামীর কোন অবদান না থাকলেও মুক্তিযুদ্ধের সময় ইসলামী দলগুলোর বিতর্কিত অবস্থানের কারনে এখনো তাদের রাজনীতি প্রশ্নবিদ্ধ। স্বাধীন বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭৫ সালে খতীবে আজম মাওলানা ছিদ্দিক আহমদের নেতৃত্বে ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগ, ১৯৮১ সালে হাফেজ্জি হুজুরের নেতৃত্বে খেলাফত আন্দোলন,
 ১৯৮৭ সালে চরমোনাইর পীর মাওঃ ফজলুল করিমের নেতৃত্বাধীন ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন, ১৯৮৯ সালে শাইখুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হকের নেতৃত্বাধীন খেলাফত মজলিস এবং ১৯৯১ সালে মুফতী ফজলুল হক আমিনীর নেতৃত্বাধীন ইসলামী ঐক্যজোট। এর পর উল্লেখযোগ্য কোন সংগঠন জন্ম না নিলেও পুরাতনগুলো ভেঙ্গে কিছু নতুন উপদলের সৃষ্টি হয়। ইসলামী দল থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সংসদ সদস্য ছিল পূর্ব পাকিস্তানে নেজামে ইসলাম পার্টির এবং বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর। নিকট ভবিষ্যতে কোন ইসলামী দল একক ভাবে এ দেশে ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা নেই, তবে সম্মিলিত ইসলামী জোট করতে পারলে অন্য কথা, যদিও স্বার্থদন্দের কারণে তা হতে পারছে না। তবে সাধারণ জোট করে সাধারণ জনগণের সাথে মিশতে পারাও কম অর্জন নয়, যদি তা কাজে লাগানো যায়। তাই প্রত্যেক জোটেই কিছু কিছু ইসলামী দল থাকে। যেমন মাজার ভিত্তিক দলগুলো সমর্থন করে মহাজোটকে। সাফল্য পেতে হলে হয় আদর্শ ভিত্তিক জোট, নতুবা ক্ষমতা ভিত্তিক জোট, নতুবা একক রাজনীতি, নতুবা রাজনীতি পরিত্যাগ। হয় ইহকালে পেতে হবে, নতুবা পরকালে পাওয়ার আশা থাকতে হবে। বিশ্বনবী যেমন মুসলিম, মুশরিক, ইয়াহুদী, খ্রীষ্টান সবার সম্মিলিত সমর্থনেই মদীনা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তেমনি বাংলাদেশে বসবাসকারী হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান মুসলিম সবার সম্মিলিত সমর্থনেই এ দেশে খেলাফত রাষ্ট্র বা রামরাজ্য বা কিংডম অব গড বা শান্তিভূমি প্রতিষ্ঠা হতে পারে। 


৭ .বুলেট বিপ্লবঃ
যেখানে গণ আন্দোলন ও নির্বাচনী ব্যালট অকার্যকর হবে সেখানেই বুলেট অনিবার্য হয়ে উঠবে। যেমন বাংলাদেশে ৬৯ এর গণ আন্দোলন ও ৭০ এর নির্বাচন অকার্যকর হওয়ার পরই ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ অনিবার্য হয়ে উঠে। ফিলিস্তিনে নির্বাচিত হামাসকে আটকে দিলে বুলেট দিয়েই প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করতে হয়। লিবিয়ায় গণ আন্দোলনকে বুলেট দিয়ে দমিয়ে দিতে চায়লে বুলেট দিয়েই বুলেটের উত্তর দেয়া শুরু হয়। আফগানিস্তান, ইরাক, সোমালিয়া প্রভৃতি স্থানে বৃটেন রাশিয়া আমেরিকা গং যদি বুলেট দিয়ে আঘাত না করত তবে ওসামা বিন লাদেনের মত লোকেরাও বিলাসিতা ছেড়ে বুলেট দিয়ে প্রতিরোধ করতে গিয়ে প্রাণ দিত না।
যারাই নির্যাতিত হবে তারাই প্রতিরোধ সৃষ্টি করবে, এটাই স্বাভাবিক এবং আত্মরক্ষার অধিকার প্রত্যেকেরই আছে। তবে বেসামরিক লোক ও বেসামরিক স্থাপনার উপর আঘাত হানার বা আত্মহত্যা করার অধিকার কারো নেই। বিপদগ্রস্থ মানুষের পাশে দাড়ানো প্রত্যেকের নৈতিক দায়িত্ব। দেশের যেমনি নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বাহিনী থাকে তেমনি ধর্মেরও নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বাহিনী থাকার বিধান স্রষ্টাই দিয়েছেন। আল-কোরআনে প্রাই ৭০০ স্থানে জিহাদের আলোচনা আছে এবং বিশ্বনবী নিজেই প্রাই ৩৪টি অভিযানে সেনাপতিত্ব করেন এবং প্রাই ৩৮টি অভিযান প্রেরণ করেন। ধর্মগ্রন্থে শান্তিচুক্তির কথাও আছে এবং বিশ্বনবীও হুদাইবিয়ায় শান্তিচুক্তির দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। তিনি ১৩ বছর মক্কী জীবনে গুপ্তাঘাত করার ক্ষমতা রাখলেও হিজরত ও মদীনা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আগে পাল্টাঘাত শুরু করেননি। প্রথমে দাওয়াত, বিফলে চ্যালেঞ্জ, সর্বশেষ যুদ্ধ, এ হল ইসলামের নীতি। নিরপরাধ কোন প্রাণীকেও হত্যা করার অনুমতি ইসলামে নেই। জিহাদের আগে হিজরত অনিবার্য।
জিহাদকে শুধুমাত্র কাফের, মুশরিক ও মুনাফিকরাই ভয় পায়। জিহাদের নামে সন্ত্রাস করা এবং জিহাদকে সন্ত্রাস বলা, দুটিই ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। বিশ্বব্যাপী জঙ্গীবাদ বন্ধ করতে হলে বিশ্বব্যাপী নির্যাতন বন্ধ করতে হবে এবং প্রত্যেককে স্বাধীন ভাবে মতামত প্রকাশের ও রাজনীতি করার অধিকার দিতে হবে। নতুবা ভিতরে আগুণ বা রুগ রেখে উপরে প্রলেপ দেয়ার মত হবে, যা যে কোন সময় অগ্নিয়গিরির মত বিস্ফোরণ হতে পারে। কারণ জেল-জুলুম-ক্রসফায়ার-ফাসী কোন মতবাদকে ধ্বংশ করে দিতে পারে না, সাময়িক প্রশমিত করতে পারে মাত্র। এ দেশে এ পর্যন্ত জঙ্গীবাদের কারণে কত লোক হতাহত হয়েছে এবং রাজনৈতিক কারণে কত হয়েছে? জঙ্গীবাদ নিয়ে বেশি মাতামাতি করে এ দেশে আমেরিকার আসার পথ পরিস্কার করা হচ্ছে না তো?

কোন মন্তব্য নেই:

Comment here />

Widget ByBlogger Maruf
Widget ByBlogger Maruf