ইসলাম এমন একটি ধর্ম যেখানে ব্যক্তিগত, সামাজিক, পারিবারিক সকল বিষয়ে দিকনির্দেশনা পাওয়া যায়। এমন কোন বিষয় বাদ নেই যা সম্পর্কে ইসলাম নির্দেশনা প্রদান করেনি। আমরা যদি ইসলামের নিয়ম-কানূন মোতাবেক জীবন পরিচালিত করি তাহলে সকল প্রকার অকল্যাণ থেকে নিরাপদ থাকতে পারি। আর ইসলামের নবী শ্রেষ্ঠ নবী, খাতামান্নাবীঈন (সাঃ) নিজ জীবনে সব বিষয়ে আমল করে দেখিয়ে গেছেন কিভাবে তা পালন করতে হয়। হজরত রাসূল করিম (সাঃ) মানব শরীর কর্তৃক প্রত্যেক প্রকারের অপবিত্রতা ও নোংরামী সৃষ্টির উৎসমূলকে কঠোরতার সাথে দমন করে সেগুলোর মুন্ডপাত করেছেন। এছাড়া তিনি রোগ বিসত্মারের অন্যান্য ড়্গত্রেকেও চিহ্নিত করেছেন। আজ আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত গবেষণা দ্বারাও এটা প্রমাণিত। বর্তমানে মারাত্মক কিছু রোগ ও মহামারীর বিসত্মার বিশেষত দু’টি কারণে হয়ে থাকে, যেমন-(১) আমরা আমাদের কফ, থুথু, নির্দ্বিধায় অলিতে-গলিতে, পথে-ঘাটে, খোলা জায়গায় ফেলে থাকি। এই নিড়্গপ্তি কফ-থুথুর বিষাক্ত জীবাণুগুলি বাতাসের সাথে মিশে নাক-মুখের মাধ্যমে সুস’্য ব্যক্তির দেহে প্রবেশ করে। (২) যখন বিভিন্ন প্রকারের পোকা-মাকড়, কীট-পতঙ্গ এই নিড়্গপ্তি আবর্জনায় মুখ দিয়ে খাদ্য-দ্রব্য বা পানিতে এসে পড়ে যার সাথে করে তারা অসংখ্য জীবাণু বয়ে নিয়ে আসে, যেগুলি পানি ও খাবারের সাথে মিশে মহামারী ভয়াবহ বিসত্মার ঘটায়। আর এ জন্যই সারাদেশে আজ বিভিন্ন রোগে হাজার হাজার অকাল মৃত্যু ঘটছে। কলেরা হাসপাতালে বা যে কোন হাসপাতালে গেলে দেখা যায় রোগীর অভাব নেই।
হজরত রাসূল করিম (সাঃ)-এর এমন অসংখ্য উপদেশবাণী রয়েছে যার ওপর আমল করলে এ সকল রোগের হাত থেকে বাঁচা যায়। উদাহরণস্বরূপ তিনি রাতের বেলায় পেস্নট, হাড়ি-পাতিল, গস্নাস প্রভৃতি খোলা না রাখতে বলেছেন। কেননা বিভিন্ন প্রকারের পোকা-মাকড়, কীট-পতঙ্গ রাতের বেলায় উড়ে বেড়ায় এবং সেগুলির আকর্ষণ সাধারণত খাদ্য-দ্রব্যের প্রতিই হয়। একটি হাদিস হজরত জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূল করিম (সাঃ) বলেছেন-“সন্ধ্যা হয়ে গেলে তোমরা তোমাদের সনত্মানদের ঘর থেকে বের হতে দিও না কেননা শয়তান সেই সময় চারিদিকে ঘোরাফেরা করে। (হাদীসের দৃষ্টিতে শয়তানকে পারিভাষিক অর্থে বুঝিয়ে এর আওতায় চোর, ডাকাত, কুকুর অন্যান্য হিংস্র জন’, সাপ, বিচ্ছু, বিষাক্ত পোকা-মাকড় এবং ব্যাকটেরিয়া অনত্মর্ভুক্ত বলে বুঝানো হয়েছে) যখন রাতের একটি অংশ অতিবাহিত হয় তখন বিসমিলস্নাহ্ বলে ঘরের দরজা বন্ধ করে দাও কেননা শয়তান বন্ধ দরজা খুলতে পারে না। পানির পাত্র বিসমিলস্নাহ্ বলে ঢাকনা বা পর্দা দিয়ে ঢেকে দাও এবং বাতি নিভিয়ে দাও” [বুখারী, মুসলিম]।
এটা মনে করা সমীচীন নয় রাসূল (সাঃ) রাতের বেলায় কেবলমাত্র খাদ্যদ্রব্য ঢেকে রাখার উপদেশ দিয়েছেন বরং দিনের বেলাতেও খাবারের পাত্রাদি ঢাকার নির্দেশ দিয়ে এ কথার দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছেন যে, দিনের বেলাতেও বিভিন্ন জীবাণু বাতাসের মধ্যে ঘুরে বেড়ায়। নিম্নোক্ত হাদিস পাঠে আমরা তা জানতে পারি-এক আনসারী সাহাবীর নাম আবু হামিদ, সে ব্যক্তি নওকি নামক স’ান থেকে এক পেয়ালা দুধ তোহফাস্বরূপ আনল। রাসূল (সাঃ) তাকে বললেন, ‘তুমি কেন এটি না ঢেকে এনেছ। তুমিতো কমপড়্গে একটি কাঠের খন্ডও এর ওপর রেখে দুধের পেয়ালাটি ঢেকে আনতে পারতে’। [বুখারী, মুসলিম]
যত্রতত্র কফ-থুথু না ফেলার জন্য রাসূল (সাঃ) আমাদের কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। হাদিস থেকে এ সম্পর্কে আমরা অবগত হতে পারি। মসজিদের বারান্দায় থুথু ফেলে সেটিকে না মিটানোকে রাসূল (সাঃ) গুনাহের কাজ বলে উলেস্নখ করেছেন। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, “মসজিদে থুথু ফেলা গুনাহর কাজ। এর কাফফারা হল যদি থুথু ফেলাই হয় তা যেন মিটিয়ে দেয়া হয়।” [বুখারী] এই হাদিসে বিশেষভাবে মসজিদ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার কথা এজন্য বলা হয়েছে, মসজিদ সর্বাধিক ব্যবহৃত একটি গুরূত্বপূর্ণ স’ান। এটি পরিচ্ছন্ন সৌন্দর্য বর্ধ্বনকারী জায়গাও বটে। সামান্য অসাবধানতাবশত এস’ান থেকে রোগ ব্যাধি মানুষের মাঝে ছড়াতে পারে। গভীর দৃষ্টি দিয়ে যদি অন্যান্য পাবলিক স’ানগুলির দিকেও লড়্গ্য করা হয় তাহলে সে স’ানগুলোতেও যত্রতত্র কফ-থুথু না ফেলার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রোগ-জীবাণু বিসত্মার অনেকটা রোধ করা যেতে পারে।
ইসলাম গোসল করার জন্য কিছু নসীহত করা পর্যনত্মই সীমাবদ্ধ থাকেনি বরং এড়্গেেত্র সময় ও প্রয়োজনানুসারে কোন কোন গোসলকে ওয়াজিব আবার কোন কোন গোসলকে ফরজ বলে চিহ্নিত করেছে। জুমার দিনে গোসল করার ব্যাপারে বুখারি শরিফে নিম্নোক্ত হাদিস রয়েছে “জুমার দিনে গোসল করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ওয়াজীব”।
তাই ইসলাম একজন প্রকৃত মু’মিনের জন্য কোন বাধ্য-বাধকতা ব্যতীত এক সপ্তাহের অধিক গোসল না করে থাকাকে কখনোই সমর্থন করে না। ইসলাম এড়্গেেত্র আরেকটু অগ্রসর হয়ে, বিশেষ-বিশেষ অবস’ায় গোসল করা ফরজ বলে নির্ধারণ করেছে। মু’মিন নারী-পুরম্নষ উভয়ের জন্য বিশেষ সময় গোসল করা অত্যাবশ্যক। অত্যাধিক সভ্য বলে পরিচিত পশ্চিমা কোন ব্যক্তি এই কথা বলতে পারে, গোসলতো একটি জরম্নরী বিষয়। একে ফরজ করার কিবা ভিত্তি আছে? কিন’ এই আপত্তির জবাব আজ নামধারী পশ্চিমা সভ্যতার লোকেরাই খন্ডন করেছে। সেখানকার অনেক উন্নত পরিবারে প্রতিদিন একবার গোসল করার অভ্যাস আছে। কিন’ সরকার কিংবা ধর্মীয় কোন স’ান থেকেই নিয়মিত গোসল করার ব্যাপারে কার্যকরী আদেশ ও ব্যবস’া না থাকার ফলে সেই দেশগুলোতে বসবাসকারী এমন অনেক গরীব ও অসহায় পরিবার আছে যারা নিজেদের আর্থিক দৈন্যদশার কারণে দিনে তো দূরের কথা, সপ্তাহে এমনকি মাসেও একবার গোসল করে না। কেননা সেখানে প্রচুর ঠান্ডা পড়ে যার ফলে গরম পানি করে গোসল করতে হয়। দু:খের সাথে বলতে হয়, তাদের সভ্যতা তাদের বাহ্যিক চাকচিক্য ও লৌকিকতাকে তারা প্রাধান্য দিয়ে থাকে। তারা উজ্জ্বল ও রঙ-বেরঙের জামা-কাপড় পরিধান করে, অত্যাধিক সাজ-সজ্জা ও আড়ম্বতা দেখিয়ে সন্ধ্যা বেলা বের হয়-তখন তাদের আধুনিক সভ্যতার এক আকর্ষণীয় মনোমুগ্ধকর চিত্র ফুটে উঠে। কিন’ যখন তাদের বাহ্যিক আড়ম্বরতার দিকে দৃষ্টি না দিয়ে এর গভীরে গিয়ে প্রবেশ করা হবে এবং তাদের অভ্যনত্মরীণ জীবনের দিকে দৃষ্টি দেয়া হবে তখন দুনিয়ার সম্মুখে তাদের অপরিচ্ছন্নতা, অন্ধকারময় এবং পূঁতিগন্ধে পূর্ণ এক জীবন চিত্র ভেসে উঠবে।
এরূপ এক ব্যক্তি যে প্রাকৃতিক কার্যাদি সম্পাদন করার পর পানির ব্যবহার না করে ডান হাত, বাম হাতের যথেচ্ছা ব্যবহার করে। সেভের কিঞ্চিৎ পানি বা নরম টিস্যু ব্যতীত তাঁর মুখে সপ্তাহে একবারও পানির স্পর্শ পড়ে না, দেহের অন্যান্য অংশও পানির স্পর্শ থেকে বঞ্চিত থাকে, সে তাঁর নখ ও বগলের নিম্নাংশের চুল কাটে না, খাবার খাওয়ার পর ব্রাশ বা কুলি না করার কারণে দাঁতে ময়লার সত্মর পড়ে মুখে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়, প্রসাবের পর লিংগ পরিস্কার করার জন্য সামান্য টিস্যু ব্যবহার পর্যনত্ম অপ্রয়োজনীয় মনে করে-তাকে কি দুনিয়ার কোন চাকচিক্যময় সুন্দর পোষাক পবিত্র বানাতে পারে? হাজার ধরনের উজ্জ্বলতা কি তার অপবিত্রতাকে ঢেকে দিতে পারে? কখনোই নয়! সে ব্যক্তি কায়সার ও কিসরার মণি-মুক্তাযুক্ত অনিন্দ্য সুন্দর পোষাক পরিধান করে লন্ডন কিংবা প্যারিসের রাতকে যত সুন্দরই করম্নক না কেন, সে এক খন্ড সাধারণ কাপড় পরিহিত একজন মুসলমানের পাঁ বরাবরও পবিত্রতা লাভ করতে সড়্গম নয়। কেননা একজন মুমিন মুসলমান বান্দা কেবলমাত্র তাঁর প্রভুকে স্মরণ করার উদ্দেশ্যেই দৈনিক পাঁচ-ছয়বার তাঁর হাত মুখ ধৌত করে থাকে। নোংরা, অপরিস্কার ও উদ্ভট জীবন যাপন করা কোন পূণ্য নয়।
হজরত রাসূল করিম (সাঃ)-এর এমন অসংখ্য উপদেশবাণী রয়েছে যার ওপর আমল করলে এ সকল রোগের হাত থেকে বাঁচা যায়। উদাহরণস্বরূপ তিনি রাতের বেলায় পেস্নট, হাড়ি-পাতিল, গস্নাস প্রভৃতি খোলা না রাখতে বলেছেন। কেননা বিভিন্ন প্রকারের পোকা-মাকড়, কীট-পতঙ্গ রাতের বেলায় উড়ে বেড়ায় এবং সেগুলির আকর্ষণ সাধারণত খাদ্য-দ্রব্যের প্রতিই হয়। একটি হাদিস হজরত জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূল করিম (সাঃ) বলেছেন-“সন্ধ্যা হয়ে গেলে তোমরা তোমাদের সনত্মানদের ঘর থেকে বের হতে দিও না কেননা শয়তান সেই সময় চারিদিকে ঘোরাফেরা করে। (হাদীসের দৃষ্টিতে শয়তানকে পারিভাষিক অর্থে বুঝিয়ে এর আওতায় চোর, ডাকাত, কুকুর অন্যান্য হিংস্র জন’, সাপ, বিচ্ছু, বিষাক্ত পোকা-মাকড় এবং ব্যাকটেরিয়া অনত্মর্ভুক্ত বলে বুঝানো হয়েছে) যখন রাতের একটি অংশ অতিবাহিত হয় তখন বিসমিলস্নাহ্ বলে ঘরের দরজা বন্ধ করে দাও কেননা শয়তান বন্ধ দরজা খুলতে পারে না। পানির পাত্র বিসমিলস্নাহ্ বলে ঢাকনা বা পর্দা দিয়ে ঢেকে দাও এবং বাতি নিভিয়ে দাও” [বুখারী, মুসলিম]।
এটা মনে করা সমীচীন নয় রাসূল (সাঃ) রাতের বেলায় কেবলমাত্র খাদ্যদ্রব্য ঢেকে রাখার উপদেশ দিয়েছেন বরং দিনের বেলাতেও খাবারের পাত্রাদি ঢাকার নির্দেশ দিয়ে এ কথার দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছেন যে, দিনের বেলাতেও বিভিন্ন জীবাণু বাতাসের মধ্যে ঘুরে বেড়ায়। নিম্নোক্ত হাদিস পাঠে আমরা তা জানতে পারি-এক আনসারী সাহাবীর নাম আবু হামিদ, সে ব্যক্তি নওকি নামক স’ান থেকে এক পেয়ালা দুধ তোহফাস্বরূপ আনল। রাসূল (সাঃ) তাকে বললেন, ‘তুমি কেন এটি না ঢেকে এনেছ। তুমিতো কমপড়্গে একটি কাঠের খন্ডও এর ওপর রেখে দুধের পেয়ালাটি ঢেকে আনতে পারতে’। [বুখারী, মুসলিম]
যত্রতত্র কফ-থুথু না ফেলার জন্য রাসূল (সাঃ) আমাদের কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। হাদিস থেকে এ সম্পর্কে আমরা অবগত হতে পারি। মসজিদের বারান্দায় থুথু ফেলে সেটিকে না মিটানোকে রাসূল (সাঃ) গুনাহের কাজ বলে উলেস্নখ করেছেন। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, “মসজিদে থুথু ফেলা গুনাহর কাজ। এর কাফফারা হল যদি থুথু ফেলাই হয় তা যেন মিটিয়ে দেয়া হয়।” [বুখারী] এই হাদিসে বিশেষভাবে মসজিদ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার কথা এজন্য বলা হয়েছে, মসজিদ সর্বাধিক ব্যবহৃত একটি গুরূত্বপূর্ণ স’ান। এটি পরিচ্ছন্ন সৌন্দর্য বর্ধ্বনকারী জায়গাও বটে। সামান্য অসাবধানতাবশত এস’ান থেকে রোগ ব্যাধি মানুষের মাঝে ছড়াতে পারে। গভীর দৃষ্টি দিয়ে যদি অন্যান্য পাবলিক স’ানগুলির দিকেও লড়্গ্য করা হয় তাহলে সে স’ানগুলোতেও যত্রতত্র কফ-থুথু না ফেলার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রোগ-জীবাণু বিসত্মার অনেকটা রোধ করা যেতে পারে।
ইসলাম গোসল করার জন্য কিছু নসীহত করা পর্যনত্মই সীমাবদ্ধ থাকেনি বরং এড়্গেেত্র সময় ও প্রয়োজনানুসারে কোন কোন গোসলকে ওয়াজিব আবার কোন কোন গোসলকে ফরজ বলে চিহ্নিত করেছে। জুমার দিনে গোসল করার ব্যাপারে বুখারি শরিফে নিম্নোক্ত হাদিস রয়েছে “জুমার দিনে গোসল করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ওয়াজীব”।
তাই ইসলাম একজন প্রকৃত মু’মিনের জন্য কোন বাধ্য-বাধকতা ব্যতীত এক সপ্তাহের অধিক গোসল না করে থাকাকে কখনোই সমর্থন করে না। ইসলাম এড়্গেেত্র আরেকটু অগ্রসর হয়ে, বিশেষ-বিশেষ অবস’ায় গোসল করা ফরজ বলে নির্ধারণ করেছে। মু’মিন নারী-পুরম্নষ উভয়ের জন্য বিশেষ সময় গোসল করা অত্যাবশ্যক। অত্যাধিক সভ্য বলে পরিচিত পশ্চিমা কোন ব্যক্তি এই কথা বলতে পারে, গোসলতো একটি জরম্নরী বিষয়। একে ফরজ করার কিবা ভিত্তি আছে? কিন’ এই আপত্তির জবাব আজ নামধারী পশ্চিমা সভ্যতার লোকেরাই খন্ডন করেছে। সেখানকার অনেক উন্নত পরিবারে প্রতিদিন একবার গোসল করার অভ্যাস আছে। কিন’ সরকার কিংবা ধর্মীয় কোন স’ান থেকেই নিয়মিত গোসল করার ব্যাপারে কার্যকরী আদেশ ও ব্যবস’া না থাকার ফলে সেই দেশগুলোতে বসবাসকারী এমন অনেক গরীব ও অসহায় পরিবার আছে যারা নিজেদের আর্থিক দৈন্যদশার কারণে দিনে তো দূরের কথা, সপ্তাহে এমনকি মাসেও একবার গোসল করে না। কেননা সেখানে প্রচুর ঠান্ডা পড়ে যার ফলে গরম পানি করে গোসল করতে হয়। দু:খের সাথে বলতে হয়, তাদের সভ্যতা তাদের বাহ্যিক চাকচিক্য ও লৌকিকতাকে তারা প্রাধান্য দিয়ে থাকে। তারা উজ্জ্বল ও রঙ-বেরঙের জামা-কাপড় পরিধান করে, অত্যাধিক সাজ-সজ্জা ও আড়ম্বতা দেখিয়ে সন্ধ্যা বেলা বের হয়-তখন তাদের আধুনিক সভ্যতার এক আকর্ষণীয় মনোমুগ্ধকর চিত্র ফুটে উঠে। কিন’ যখন তাদের বাহ্যিক আড়ম্বরতার দিকে দৃষ্টি না দিয়ে এর গভীরে গিয়ে প্রবেশ করা হবে এবং তাদের অভ্যনত্মরীণ জীবনের দিকে দৃষ্টি দেয়া হবে তখন দুনিয়ার সম্মুখে তাদের অপরিচ্ছন্নতা, অন্ধকারময় এবং পূঁতিগন্ধে পূর্ণ এক জীবন চিত্র ভেসে উঠবে।
এরূপ এক ব্যক্তি যে প্রাকৃতিক কার্যাদি সম্পাদন করার পর পানির ব্যবহার না করে ডান হাত, বাম হাতের যথেচ্ছা ব্যবহার করে। সেভের কিঞ্চিৎ পানি বা নরম টিস্যু ব্যতীত তাঁর মুখে সপ্তাহে একবারও পানির স্পর্শ পড়ে না, দেহের অন্যান্য অংশও পানির স্পর্শ থেকে বঞ্চিত থাকে, সে তাঁর নখ ও বগলের নিম্নাংশের চুল কাটে না, খাবার খাওয়ার পর ব্রাশ বা কুলি না করার কারণে দাঁতে ময়লার সত্মর পড়ে মুখে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়, প্রসাবের পর লিংগ পরিস্কার করার জন্য সামান্য টিস্যু ব্যবহার পর্যনত্ম অপ্রয়োজনীয় মনে করে-তাকে কি দুনিয়ার কোন চাকচিক্যময় সুন্দর পোষাক পবিত্র বানাতে পারে? হাজার ধরনের উজ্জ্বলতা কি তার অপবিত্রতাকে ঢেকে দিতে পারে? কখনোই নয়! সে ব্যক্তি কায়সার ও কিসরার মণি-মুক্তাযুক্ত অনিন্দ্য সুন্দর পোষাক পরিধান করে লন্ডন কিংবা প্যারিসের রাতকে যত সুন্দরই করম্নক না কেন, সে এক খন্ড সাধারণ কাপড় পরিহিত একজন মুসলমানের পাঁ বরাবরও পবিত্রতা লাভ করতে সড়্গম নয়। কেননা একজন মুমিন মুসলমান বান্দা কেবলমাত্র তাঁর প্রভুকে স্মরণ করার উদ্দেশ্যেই দৈনিক পাঁচ-ছয়বার তাঁর হাত মুখ ধৌত করে থাকে। নোংরা, অপরিস্কার ও উদ্ভট জীবন যাপন করা কোন পূণ্য নয়।
আমাদের সর্বোত্তম শিড়্গক বিশ্বনবী (সা.) দেহ পবিত্র ও পরিস্কার রাখার পাশাপাশি কাপড়-চোপড় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার প্রতিও আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। চুলে তেল দিতে এবং চিরম্ননী করতেও নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি (সাঃ) বলেছেন, “আলস্নাহ্তায়ালা নিজে সুন্দর এবং তিনি সুন্দরকে পছন্দ করেন।” অতএব একজন মু’মিনের দৃষ্টানত্ম এরূপ হতে হবে, সে সর্বদা পবিত্রতার উৎকৃষ্টমান নিজের মাঝে ধারণ করবে। তাই আমাদের রাসূল (সাঃ) এর এই পবিত্রবাণীর প্রতি পূর্ণ দৃষ্টি দেয়া উচিত। হুজুর (সাঃ) লৌকিকতা এবং বাহ্যিক চাকচিক্যতাকে অপছন্দ করতেন। কিন’ তিনি অত্যনত্ম অনাড়ম্বর জীবন যাপন করা সত্ত্বেও তাঁর পোষাক-পরিচ্ছদ খুবই পরিস্কার থাকতো। জীর্ণ-শীর্ণ এবং তালি দেয়া কাপড় পরিধান করার পরও তাঁর কাপড়ের মাঝে কোন ধরণের ময়লা পাওয়া যেত না। তিনি সর্বদা হালাল এবং পবিত্র খাবার খেতেন কিন’ এড়্গেেত্র তিনি কখনো সীমালংঘন করেন নি। স্বচ্ছ কাঁচের ন্যায় উজ্বল ও পরিস্কার থাকতো তাঁর মোবারক দেহ ও কাপড়-চোপড় হুজুর (সাঃ)-এর পবিত্র হৃদয় সর্বদা যিকরে ইলাহীতে মশগুল ছিল। এ সকল অনন্য অসাধারণ কার্যাবলীর সন্নিবেশ রাসূলুলস্নাহ্ (সাঃ)-এর ঘামকে পর্যনত্ম সুরোভিত ও সুগন্ধময় করে দিয়েছিল। আমরা যদি রাসূল করিম (সাঃ)-এর আদর্শ মোতাবেক জীবন পরিচালিত করি তাহলেই আমরা অনেক রোগব্যাধি থেকে মুক্ত থাকতে পারব এবং সমাজেও ফিরে আসবে শানিত্ম।
কোন মন্তব্য নেই:
/>