মুুসলমানদের ধর্মীয় অনুভুতির সাথে জমজম কুপের রয়েছে নিবীঢ় সম্পর্ক। মক্কায় অবস্থিত এই কুপের পানির অলৌকিকত্ব নিয়ে যে মীথ চালু আছে, তা নিছক ভাবাবেগ বা অনুভূতি তাড়িত কোন ভিত্তিহীন বিষয় নয়, এই কুপের পানি, উৎস্য এবং অদ্যাবধি এই পানির ধারা বহমান থাকা আল্লাহর অশেষ কুদরতের বহিঃপ্রকাশ।
পৌত্তলিকতার বিরুদ্ধে আপোষহীন মুজাহিদ নবী হযরত ইবরাহীম (আঃ) এর জীবনে যে কয়টি পরীক্ষা আল্লাহ নেন, তার মধ্যে একটি হচ্ছে আরবের মক্কার বর্তমান জমজম কুপের নিকটবর্তী বিজান মরুভুমিতে স্ত্রী হাজেরা এবং শিশুপুত্র ইসমাইলকে ফেলে আসে।
তৃষ্ণায় ব্যাকুল বিবি হাজেরার সাফা মারওয়া পর্বতের মধ্যে উৎকন্ঠিত পদচারণার এক পর্যায়ে ইসমাইলের পদাঘাতে পানির যে স্রোতধারা সূচিত হয়, সেই স্রোতধারা পৌত্তলিকতাকে শোধন করার শ্রোত ধারা। এটি কেবল কুপই নয়, এটি দুনিয়ার বুকে চর্চিত শিরক বিদাতের গ্লানিমা মুছে দেবার একটি চিরঞ্জীব স্রোতধারা। এই স্রোতধারা ব্যতিক্রম বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল। এর পানি পঁচে না, দুর্গন্ধ হয় না, এর স্রোতধারা স্তব্ধ হয় না। যখন দুর দুরান্ত থেকে হাজীরা সেখানে যান, তারা জমজমের পানি পান করেন। হাজার লিটার পানি উত্তোলিত হলেও অনি:শেষ এর করুণার ধারা।পৌত্তলিকতার বিরুদ্ধে আপোষহীন মুজাহিদ নবী হযরত ইবরাহীম (আঃ) এর জীবনে যে কয়টি পরীক্ষা আল্লাহ নেন, তার মধ্যে একটি হচ্ছে আরবের মক্কার বর্তমান জমজম কুপের নিকটবর্তী বিজান মরুভুমিতে স্ত্রী হাজেরা এবং শিশুপুত্র ইসমাইলকে ফেলে আসে।
পৃথিবীর অনেক নদীর বাক পরিবর্তন করেছে, মৃত হয়েছে, অনেক স্রোতধারা চিরকালের জন্য স্তব্ধ হয়ে গেছে, কিন্তু শিরকের বিরুদ্ধে জেহাদরত মুজাহিদ ইব্রাহীমের পরিবারের জন্য আল্লাহর যে সুধা, জমজমের পানি, তা আজও অনিঃশেষ। হয়ত কেয়ামতের আগেও এটি অনিঃশেষ থেকে যাবে। এই কূপ নিয়ে বিস্ময়ের অন্ত নেই। অনেকেই এর অনন্য বৈশিষ্ট্যের কথা স্বীকার করেছেন। কিন্তু জাপানী পানি বিজ্ঞানী মাসারু ইমোটো (Masaru Emoto) ’র একটি গবেষণায় জমজমের পানির বিশেষত্ব প্রচলিত বৈজ্ঞানিক মানদন্ডে ফুটে উঠেছে, যেটি বিশেষত্বের দাবী রাখে। “মেসেজ ফ্রম ওয়াটার” ( Message from water) গ্রন্থে তিনি বলেন, “I have proven that water, that peculiar liquid, is capable of thinking, fathoming, feeling, getting excited, and expressing itself.” ( আমি প্রমাণ করেছি যে এই অদ্ভুত পানি চিন্তা করতে, উপলব্ধি করতে, উদ্ধীপ্ত হতে এবং নিজেকে প্রকাশ করার সামর্থ্য রাখে।)
তার বর্ণিত পেকুলিয়ার লিকুইড বা অদ্ভুত পনি মানে জমজমের পানি, যা বিস্তারিত বর্ণনা আছে। এই প্রসঙ্গে একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে এই সাইটে :লিংকে ক্লিক করুন দেখতে
এর তথ্যালোকে কিছু আলোচনা করতে চাই। উক্ত নিবন্ধে উল্লেখিত “মেসেজ ফ্রম ওয়াটার” ( Message from water) গ্রন্থটি ১৫ বছর আগে প্রকাশিত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ১৫ বছর ধরলে ১৯৯৯-২০০০ সাল হবে। জাপানী বিজ্ঞানী মাসারু ইমোটো (Masaru Emoto) এর বই “মেসেজ ফ্রম ওয়াটার” ( Message from water) গ্রন্থটি আমাদের হাতে আসেনি এবং আমরা পাঠও করিনি। তবে ইমোটো এরটি নিজস্ব সাইট আছে, যার নামhttp://emotopeaceproject.blogspot.com/ এবং নেটে বইয়ের প্রচ্ছদ দেখার সৌভাগ্য হয়েছে।
উইকিপিডিয়া (http://en.wikipedia.org/wiki/Masaru_Emoto#cite_note-Neimark2005-3) তার একটি জীবনী ছেপেছে, যা থেকে তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়। উইকিপিডিয়া অবশ্য তাকে বিজ্ঞানী বলেনি, বলেছে এনটারপ্রেনার বা উদ্যোক্তা এবং লেখক। ১৯৪৩ সালের ২২ জুলাই জাপানের ইয়োকোহামায় জন্ম গ্রহণ করেন। আর্ন্তজাতিক সম্পর্ক বিভাগে কোর্স সম্পন্ন করার পর তিনি ইয়োকোহামা মিউনিসিপ্যাল বিশ^বিদ্যালয় হতে স্নাতক প্রাপ্ত হন। ১৯৮৬ সালে আই,এইচ,এম কর্পোরেশ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন এবং ১৯৯০ সালের মধ্যভাগ থেকে পানি নিয়ে গবেষণা করেন। ২০১৪ সালের ১৭ই অক্টোবর এই ক্ষণজন্মা ব্যক্তিত্ব মৃত্যুবরণ করেন এবং মৃত্যুও আগে বর্তমানে তিনি একটি এনজিও the International Water For Life Foundation এর প্রেসিডেন্ট এমিরাটাস হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বিকল্প চিকিৎসায় তিনি চিকিৎসক হিসেবে ১৯৯২ সালে ভারত হতে স্বীকৃতি লাভ করেন। Neimark, Jill (September–October 2005). “Messages from water?”. Spirituality & Health মাসারু ইমোটো এর একটি তত্ত্ব প্রকাশ করে। থিওরী হচ্ছে : Water could react to positive thoughts and words, and that polluted water could be cleaned through prayer and positive visualization. (পানি ইতিবাচক চিন্তা এবং বাক্যের উপর প্রতিক্রিয়া দেখায় এবং প্রাথনা এবং ইতিবাচক মানসিক শক্তি দিয়ে দূষিত পানিও পরিস্কার করা যায়।) তবে এই প্রতিক্রিয়া যে অন্য কোন পানিতে নেই, তা তিনি ইতোপূর্বে বলেছেন।
আমরা পানির উপর কোরানের আয়াত পড়ে ফু দিয়ে কোন কল্যান লাভের চেষ্টা করি, যেটি এতদিন, স্রেফ অবৈজ্ঞানিক বলে মনে করা হোত, কিন্তু এই নিবন্ধে এর বলা হচ্ছে : জমজমের পানির উপর কোন কিছু পাঠ করলে তা ক্ষতিগ্রস্থ হয়, এখানে ‘ধভভবপঃবফ” শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে, তবে প্রকৃত শব্দ হবে “ ঊভভবপঃবফ” অর্থাৎ প্রভাবিত হবে, এটি ইতিবাচক অথবা নেতিবাচক দুই অর্থই প্রকাশ করে। এই অর্থে জমজম পানির উপর আল-কোরানের আয়াতের প্রভাব নিয়ে একটি সত্য প্রকাশিত হল। সাধারণ পানির উপর পাঠ করলেও এই পরিবর্তন ঘটে বলে তিনি জানান। এটি জাপানী বিজ্ঞানীর আবিষ্কারের অন্যতম দিক। তবে এই সূত্র ধরে, আগেই বলি আমাদের দেশে হুজুররা বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে অনেক সময় পানি পড়ে দিয়ে আসেন। এটি দীর্ঘদিন ধরে চলছে। এতে উপকার হয় কি হয়না, সেটি নিয়ে সংশয় থাকলেও জাপানী বিজ্ঞানীর জমজমের পানির উপর আয়াতের প্রভাব নিয়ে গবেষণার ফলাফল থেকে একটি বাড়তি চেষ্টাও করা যেতে পারে, জমজমের পানির মত অন্য পানিকে কি প্রভাবিত করা যাবে? এটি ভিন্নভাবে গবেষণা হতে পারে। তবে এই সত্য কিঞ্চিৎ প্রকাশ পেল যে, আয়াত কোন ব্যক্তি বিশেষ পাঠ করলেই কার্যকর হয়, তা নয়, যে কোন ব্যক্তিই পাঠ করলে হতে পারে। এখানে কৃতিত্ব কোরানের আয়াত। এটিই একটি রহস্যময় গায়েবী ফায়সালা, যাও একসময় উন্মোচিত হবে। জাপানী বিজ্ঞানীর জমজম পানি নিয়ে গবেষণায় আয়াতের প্রভাব কেরানে বর্ণিত “চিন্তাশীল লোকদের” জন্য নব-দুয়ার খুলে দিতে পারে। এখন আলোচনা করা দরকার জাপানী বিজ্ঞানীর জম জম পানি নিয়ে গবেষণার প্রেক্ষাপট কী? মাসারু ইমোটো স্নোফ্লেক নিয়ে গবেষণা করছিলেন। স্নোফ্লেক হচ্ছে সাদা বর্ণের পাতলা বরফ কণা, যা বিভিন্ন জ্যামিতিক আকার ধারন করে ভৃপৃষ্টে পতিত হয়। এটি পৃথিবীর উপরের স্তরে থাকা মেঘ জমে বরফ হয়ে পতিত বলেই প্রাথমিকভাবে ধরা যেতে পারে। তার কাছে প্রাপ্ত জনশ্রুতি ছিল যে, আকাশ থেকে পড়া এই স্নোফ্লেক একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল। তার প্রশ্ন হচ্ছে, এটি জ্যামিতিক আকার বিশিষ্ট বটে, এর পারমানবিক গঠন তো একই দুইটি হাইড্রোজেন পরমানু এবং একটি অক্সিজেন পরমানু । তাহলে স্নোফ্লেক কী এমন ব্যতিক্রম আছে? তার দৃষ্টিতে এটি ভিত্তিহীন মনে হয়েছে। তিনি এই ধারনার সত্যাসত্য প্রমাণে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হন। এ জন্য তিনি একটি গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা করেন। সেখানে রেগুলেটর যুক্ত একটি ড্রিপ ফ্রিজার বসান। কারণ কোন তরল শীতলীকরণ করা ছাড়া জ্যামিতিক আকার ধারণ করে না। শীতলীকরণ প্রক্রিয়াটি দ্রুত হতে হবে, যাতে পানি স্ফটীকৃত (crystallize) হয়ে আল্লাহর নির্ধারিত আকার ধারণ করে। তার বক্তব্য থেকে এই আকার ধারণ মানুষের ইচ্ছার বাইরে সংগঠিত একটি ঘটনা। তিনি যে, রেগুলেটরসংযুক্ত ড্রিপ ফিজার স্থাপন করেন, তার রুম টেমপারেচার দাঁড়ায় -৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস (মাইনাস সাত ডিগ্রী সেলসিয়াস)। এর সাথে তিনি একটি ক্যামেরা সংযুক্ত মাইক্রোস্কপও স্থাপন করেন, যাতে স্নোফ্লেক গলে যাবার আগে তার একটি আলোকচিত্র ধারণ করা যায়। গবেষণার সময় বিজ্ঞানীরা গরম কাপড় পরিধান করে নেন। তিনি বলেন, “আমি গবেষণাগারের কল থেকে পানির দুইটি নমুনা সংগ্রহ করি। সেটি শীতল করি, এবং প্রতিটি নমুনা আমাকে ভিন্ন স্নোফ্লেক বা বরফের পাতলা আকার প্রদান করে। নমুনা দুইটি ভিন্ন কুপ থেকে, দুইটি ভিন্ন নদী, দুইটি ভিন্ন হ্রদ থেকে নেওয়া। আমি অনেকটা উন্মত্ত হয়ে পড়ি, আমার কাছে এটি ডাইনীবিদ্যা বলেই মনে হয়েছিল।”
এদিকে হঠাৎ টোকিও বিশ^বিদ্যালয়ে পাঠরত এক সৌদি ছাত্রের সাথে তার দেখা হয়। সাক্ষাতে মাসারু ইমোটো তাকে তার গবেষণার বিষয়টি অবহিত করেন। তখন সে তাকে বলে যে, তাদের দেশে একটি রহমতপূর্ণ পানি আছে, যাকে জমজমের পানি বলে, যা নিয়ে সে গবেষণা করতে পারে। সে আরও জানায় যে, জমজমের পানি ডাইনী বিদ্যা বা জিনের কারসাজিতে কোনভাবেই ক্ষতিগ্রস্থ হয় না। সে পরামর্শ দিল, এই পানি নিয়ে সে তার তত্ত্ব-এর সত্যাসত্য পরীক্ষা করতে পারে। অবশেষে মাসারু ইমোটো জমজমের পানি নিয়ে গবেষণা করতে শুরু করলেন। গবেষণা করে মাসারু ইমোটো বললেন, আমি সেটিকে স্ফটীকীকরণ করতে সক্ষম হয়নি, এমনকি এটিকে ১০০০ ভাগে বিভক্ত করেও না, যাকে ডিলিউটিং বলে। অর্থাৎ তিনি এক ঘনসেন্টিমিটার পানিকে এক লিটারে পরিণত করলেন। আর ঠিক তখনই তিনি বিশেষ কিছু প্রত্যক্ষ করলেন। জমজমের পানি ১০০০ ভাগে ডিলিউট করার ফলে জমজমের পানিতে একটি বিশেষ অথচ একক বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জল আকৃতি বিশিষ্ট ক্রিস্টাল বা স্ফটিক পান। এই দুইটি ক্রিস্টাল একটি আরেকটির উপরে অবস্থান করল। কিন্তু এটিই তাদের কাছে একক এবং অনন্য বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ক্রিস্টাল। মুসলমান ওই ছাত্রকে জিজ্ঞেস করা হয়, দুইটি ক্রিস্টাল বা স্ফটিক কেন? তখন তিনি মাসারু ইমোটোকে বলেন, এর কারণ জমজম দুইটি শব্দ জম জম নিয়ে গঠিত। মাসারু ইমোটো বলেন, আমার মুসলামান সহযোগী উক্ত পানির উপর কোরানের আয়াত পাঠ করে ফু দিতে বলেন। সে একটি টেপরেকর্ডার আনে এবং কোরানের তেলাওয়াত পাঠ করার জন্য সুইচ অন করে দেয়, আর ঠিক তখনই সর্বোত্তম একটি ক্রিস্টাল বা স্ফটীক পাওয়া যায়। তখন সে আল্লাহর ৯৯টি নাম বা আসমাউল হুসনা পাঠ করে। প্রতিটি নাম পাঠ করলে ক্রিস্টাল একটি নিজস্ব আকৃতি ধারণ করে। প্রায় পনের বছর আগে মাসারু ইমোটো এই গবেষণা সম্পন্ন করার পর, পাঁচ খন্ডের মেসেজ ফ্রম ওয়াটার বা “পানির বার্তা” শিরোনামে একটি গ্রন্থ রচনা করেন। আর ঠিক তখনই তিনি তার গবেষনার সারগর্ভে বলেন, “I have proven that water, that peculiar liquid, is capable of thinking, fathoming, feeling, getting excited, and expressing itself.” (আমি প্রমাণ করেছি যে এই অদ্ভুত পানি চিন্তা করতে, উপলব্ধি করতে, উদ্ধীপ্ত হতে এবং নিজেকে প্রকাশ করার সামর্থ্য রাখে।)
মাসারু ইমোটো তার গবেষণায় যা বলেন,
১। জমজমের পানির গুণগত বৈশিষ্ট্য এবং শুদ্ধতা পৃথিবীর কোন পানিতে নেই।
২। তিনি ন্যানো প্রযুক্ত ব্যবহার করে জমজমের পানি পরীক্ষা করেন। তিনি পরীক্ষা করে দেখেন যদি এক ফোটা জমজমের পানির মধ্যে ১০০০ ফোটা সাধারণ পানি মিশ্রিত করা হয়, তবে সেই পানীর বৈশিষ্ট্য জমজমের পানির বৈশিষ্ট্য লাভ করে।
৩। এক ফোটা জমজমের পানির মধ্যে যে খনিজ উপাদান(mineral) উপাদান রয়েছে, তা অন্য কোন পানির মধ্যে পাওয়া যাবে না।
৪। তিনি কয়েকটি পরীক্ষায় প্রমাণ করতে পেরেছেন যে, জমজমের পানির গুনগত মান এবং উপাদান কোনভাবেই পরিবর্তিত হয় না । এর কী কারণ, তিনি তা আবিষ্কার করতে পারেননি। এটি কয়েকবার করা হলেও তাতেও এর গুণগত মানের কোন পরিবর্তন হয় নি।
এই বিজ্ঞানী মুসলমানদের পানি খাওয়ার পূর্বে বিসমিল্লাহির রাহমানির রহিম অর্থাৎ রহমানুর রহিম বা পরম দয়ালু আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে পানি পানি করে। খাবার আগে বা পরে বিসমিল্লাহ পাঠ করলে সাধারণ পানির গুনগত মানও পরিবর্তিত হয়ে যায়।
তিনি আরও দেখতে পান কেউ যদি সাধারণ পানির উপর আল-কোরানের আয়াত তেলাওয়াত করে, তবু সেই পানি বিভিন্ন রোগের নিরাময়ে কাজে লাগে।
জম জম কুপের পানি ভুমিতল হতে ১০.৬ ফুট নিচে। কিন্তু এই প্রতি সেকেন্ডে ৮০০০ লিটার পানি যদি ২৪ ঘন্টা ধরে উত্তোলন করা যায়, তবে এর পানির স্তর প্রায় ৪৪ ফুট নিচে নেমে যায়। কিন্তু পানি উত্তোলন বন্ধ করা হলে, ১১ মিনিটের মধ্যে পুনরায় এর পানির স্তর ১৩ ফুট উপরে উঠে যায়।
প্রতি সেকেন্ডে ৮০০ লিটার মানে, ৮০০০ x ৬০ = ৪৮০,০০০ লিটার/ মিনিট।
৪৮০,০০০ লিটার/ মিনিট মানে ৪৮০,০০০ x ৬০ = ২৮.৮ লিটার /ঘন্টা
এবং ২৮.৮ x ২৪ =৬৯১.২ মিলিয়ন লিটার/ দিন। অর্থাৎ ২৪ ঘন্টায় ৬৯০ মিলিয়ন লিটার পানি উত্তোলন করার পর মাত্র ১১ মিনিটের মধ্যে পুনরায় (গায়েবী) মদতে সেই পানির ঘাটতি পূরিত হয়।
এখানে দুইটি মুজীযা। একটি হচ্ছে এটি তাৎক্ষণিক পানি দ্বারা পরিপূর্ণ হয় এবং সেখানে আল্লাহ অসাধারণ ক্ষমতাধর একটি একুয়াফায়ার সংযুক্ত রেখেছেন, যাতে পানি বেরিয়ে যায় না, অন্যথায় জমজমের পানিতে দুনিয়া প্লাবিত হোত।
এ প্রসঙ্গে আল -কোরানে আল্লাহপাক বলেন, “এখন আমি তাদেরকে আমার নিদর্শনাবলী প্রদর্শন করাব পৃথিবীর দিগন্তে এবং তাদের নিজেদের মধ্যে; ফলে তাদের কাছে ফুটে উঠবে যে, এ কোরআন সত্য। আপনার পালনকর্তা সর্ববিষয়ে সাক্ষ্যদাতা, এটা কি যথেষ্ট নয়?” (সুরা হামীম সেজদার ৫৩ নং আয়াত) ।
মাসারু ইমোটোর গবেষণা দৃশ্যতঃ সত্য বলে মেনে নেওয়া যায়। এই সূত্রধরে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলমান দেশসহ পৃথিবীর অপরাপর আগ্রহী সরকারী অথবা বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মুসলমান অমুসলমান বিজ্ঞানীরা গবেষণা করতে পারেন। বাংলাদেশে সাইন্স ল্যাবরেটরি অথবা বিশ^বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরা এই সূত্র ধরে গবেষণা চালাতে পারেন। এই গবেষনায় নিশ্চয়ই বাড়তি কোন আবিষ্কার সম্ভব হতে পারে। আমরা এমন প্রাতিষ্ঠানিক আবিষ্কার সম্পন্ন করার দাবী জানাচ্ছি।
আমরা পানির উপর কোরানের আয়াত পড়ে ফু দিয়ে কোন কল্যান লাভের চেষ্টা করি, যেটি এতদিন, স্রেফ অবৈজ্ঞানিক বলে মনে করা হোত, কিন্তু এই নিবন্ধে এর বলা হচ্ছে : জমজমের পানির উপর কোন কিছু পাঠ করলে তা ক্ষতিগ্রস্থ হয়, এখানে ‘ধভভবপঃবফ” শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে, তবে প্রকৃত শব্দ হবে “ ঊভভবপঃবফ” অর্থাৎ প্রভাবিত হবে, এটি ইতিবাচক অথবা নেতিবাচক দুই অর্থই প্রকাশ করে। এই অর্থে জমজম পানির উপর আল-কোরানের আয়াতের প্রভাব নিয়ে একটি সত্য প্রকাশিত হল। সাধারণ পানির উপর পাঠ করলেও এই পরিবর্তন ঘটে বলে তিনি জানান। এটি জাপানী বিজ্ঞানীর আবিষ্কারের অন্যতম দিক। তবে এই সূত্র ধরে, আগেই বলি আমাদের দেশে হুজুররা বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে অনেক সময় পানি পড়ে দিয়ে আসেন। এটি দীর্ঘদিন ধরে চলছে। এতে উপকার হয় কি হয়না, সেটি নিয়ে সংশয় থাকলেও জাপানী বিজ্ঞানীর জমজমের পানির উপর আয়াতের প্রভাব নিয়ে গবেষণার ফলাফল থেকে একটি বাড়তি চেষ্টাও করা যেতে পারে, জমজমের পানির মত অন্য পানিকে কি প্রভাবিত করা যাবে? এটি ভিন্নভাবে গবেষণা হতে পারে। তবে এই সত্য কিঞ্চিৎ প্রকাশ পেল যে, আয়াত কোন ব্যক্তি বিশেষ পাঠ করলেই কার্যকর হয়, তা নয়, যে কোন ব্যক্তিই পাঠ করলে হতে পারে। এখানে কৃতিত্ব কোরানের আয়াত। এটিই একটি রহস্যময় গায়েবী ফায়সালা, যাও একসময় উন্মোচিত হবে। জাপানী বিজ্ঞানীর জমজম পানি নিয়ে গবেষণায় আয়াতের প্রভাব কেরানে বর্ণিত “চিন্তাশীল লোকদের” জন্য নব-দুয়ার খুলে দিতে পারে। এখন আলোচনা করা দরকার জাপানী বিজ্ঞানীর জম জম পানি নিয়ে গবেষণার প্রেক্ষাপট কী? মাসারু ইমোটো স্নোফ্লেক নিয়ে গবেষণা করছিলেন। স্নোফ্লেক হচ্ছে সাদা বর্ণের পাতলা বরফ কণা, যা বিভিন্ন জ্যামিতিক আকার ধারন করে ভৃপৃষ্টে পতিত হয়। এটি পৃথিবীর উপরের স্তরে থাকা মেঘ জমে বরফ হয়ে পতিত বলেই প্রাথমিকভাবে ধরা যেতে পারে। তার কাছে প্রাপ্ত জনশ্রুতি ছিল যে, আকাশ থেকে পড়া এই স্নোফ্লেক একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল। তার প্রশ্ন হচ্ছে, এটি জ্যামিতিক আকার বিশিষ্ট বটে, এর পারমানবিক গঠন তো একই দুইটি হাইড্রোজেন পরমানু এবং একটি অক্সিজেন পরমানু । তাহলে স্নোফ্লেক কী এমন ব্যতিক্রম আছে? তার দৃষ্টিতে এটি ভিত্তিহীন মনে হয়েছে। তিনি এই ধারনার সত্যাসত্য প্রমাণে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হন। এ জন্য তিনি একটি গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা করেন। সেখানে রেগুলেটর যুক্ত একটি ড্রিপ ফ্রিজার বসান। কারণ কোন তরল শীতলীকরণ করা ছাড়া জ্যামিতিক আকার ধারণ করে না। শীতলীকরণ প্রক্রিয়াটি দ্রুত হতে হবে, যাতে পানি স্ফটীকৃত (crystallize) হয়ে আল্লাহর নির্ধারিত আকার ধারণ করে। তার বক্তব্য থেকে এই আকার ধারণ মানুষের ইচ্ছার বাইরে সংগঠিত একটি ঘটনা। তিনি যে, রেগুলেটরসংযুক্ত ড্রিপ ফিজার স্থাপন করেন, তার রুম টেমপারেচার দাঁড়ায় -৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস (মাইনাস সাত ডিগ্রী সেলসিয়াস)। এর সাথে তিনি একটি ক্যামেরা সংযুক্ত মাইক্রোস্কপও স্থাপন করেন, যাতে স্নোফ্লেক গলে যাবার আগে তার একটি আলোকচিত্র ধারণ করা যায়। গবেষণার সময় বিজ্ঞানীরা গরম কাপড় পরিধান করে নেন। তিনি বলেন, “আমি গবেষণাগারের কল থেকে পানির দুইটি নমুনা সংগ্রহ করি। সেটি শীতল করি, এবং প্রতিটি নমুনা আমাকে ভিন্ন স্নোফ্লেক বা বরফের পাতলা আকার প্রদান করে। নমুনা দুইটি ভিন্ন কুপ থেকে, দুইটি ভিন্ন নদী, দুইটি ভিন্ন হ্রদ থেকে নেওয়া। আমি অনেকটা উন্মত্ত হয়ে পড়ি, আমার কাছে এটি ডাইনীবিদ্যা বলেই মনে হয়েছিল।”
এদিকে হঠাৎ টোকিও বিশ^বিদ্যালয়ে পাঠরত এক সৌদি ছাত্রের সাথে তার দেখা হয়। সাক্ষাতে মাসারু ইমোটো তাকে তার গবেষণার বিষয়টি অবহিত করেন। তখন সে তাকে বলে যে, তাদের দেশে একটি রহমতপূর্ণ পানি আছে, যাকে জমজমের পানি বলে, যা নিয়ে সে গবেষণা করতে পারে। সে আরও জানায় যে, জমজমের পানি ডাইনী বিদ্যা বা জিনের কারসাজিতে কোনভাবেই ক্ষতিগ্রস্থ হয় না। সে পরামর্শ দিল, এই পানি নিয়ে সে তার তত্ত্ব-এর সত্যাসত্য পরীক্ষা করতে পারে। অবশেষে মাসারু ইমোটো জমজমের পানি নিয়ে গবেষণা করতে শুরু করলেন। গবেষণা করে মাসারু ইমোটো বললেন, আমি সেটিকে স্ফটীকীকরণ করতে সক্ষম হয়নি, এমনকি এটিকে ১০০০ ভাগে বিভক্ত করেও না, যাকে ডিলিউটিং বলে। অর্থাৎ তিনি এক ঘনসেন্টিমিটার পানিকে এক লিটারে পরিণত করলেন। আর ঠিক তখনই তিনি বিশেষ কিছু প্রত্যক্ষ করলেন। জমজমের পানি ১০০০ ভাগে ডিলিউট করার ফলে জমজমের পানিতে একটি বিশেষ অথচ একক বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জল আকৃতি বিশিষ্ট ক্রিস্টাল বা স্ফটিক পান। এই দুইটি ক্রিস্টাল একটি আরেকটির উপরে অবস্থান করল। কিন্তু এটিই তাদের কাছে একক এবং অনন্য বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ক্রিস্টাল। মুসলমান ওই ছাত্রকে জিজ্ঞেস করা হয়, দুইটি ক্রিস্টাল বা স্ফটিক কেন? তখন তিনি মাসারু ইমোটোকে বলেন, এর কারণ জমজম দুইটি শব্দ জম জম নিয়ে গঠিত। মাসারু ইমোটো বলেন, আমার মুসলামান সহযোগী উক্ত পানির উপর কোরানের আয়াত পাঠ করে ফু দিতে বলেন। সে একটি টেপরেকর্ডার আনে এবং কোরানের তেলাওয়াত পাঠ করার জন্য সুইচ অন করে দেয়, আর ঠিক তখনই সর্বোত্তম একটি ক্রিস্টাল বা স্ফটীক পাওয়া যায়। তখন সে আল্লাহর ৯৯টি নাম বা আসমাউল হুসনা পাঠ করে। প্রতিটি নাম পাঠ করলে ক্রিস্টাল একটি নিজস্ব আকৃতি ধারণ করে। প্রায় পনের বছর আগে মাসারু ইমোটো এই গবেষণা সম্পন্ন করার পর, পাঁচ খন্ডের মেসেজ ফ্রম ওয়াটার বা “পানির বার্তা” শিরোনামে একটি গ্রন্থ রচনা করেন। আর ঠিক তখনই তিনি তার গবেষনার সারগর্ভে বলেন, “I have proven that water, that peculiar liquid, is capable of thinking, fathoming, feeling, getting excited, and expressing itself.” (আমি প্রমাণ করেছি যে এই অদ্ভুত পানি চিন্তা করতে, উপলব্ধি করতে, উদ্ধীপ্ত হতে এবং নিজেকে প্রকাশ করার সামর্থ্য রাখে।)
মাসারু ইমোটো তার গবেষণায় যা বলেন,
১। জমজমের পানির গুণগত বৈশিষ্ট্য এবং শুদ্ধতা পৃথিবীর কোন পানিতে নেই।
২। তিনি ন্যানো প্রযুক্ত ব্যবহার করে জমজমের পানি পরীক্ষা করেন। তিনি পরীক্ষা করে দেখেন যদি এক ফোটা জমজমের পানির মধ্যে ১০০০ ফোটা সাধারণ পানি মিশ্রিত করা হয়, তবে সেই পানীর বৈশিষ্ট্য জমজমের পানির বৈশিষ্ট্য লাভ করে।
৩। এক ফোটা জমজমের পানির মধ্যে যে খনিজ উপাদান(mineral) উপাদান রয়েছে, তা অন্য কোন পানির মধ্যে পাওয়া যাবে না।
৪। তিনি কয়েকটি পরীক্ষায় প্রমাণ করতে পেরেছেন যে, জমজমের পানির গুনগত মান এবং উপাদান কোনভাবেই পরিবর্তিত হয় না । এর কী কারণ, তিনি তা আবিষ্কার করতে পারেননি। এটি কয়েকবার করা হলেও তাতেও এর গুণগত মানের কোন পরিবর্তন হয় নি।
এই বিজ্ঞানী মুসলমানদের পানি খাওয়ার পূর্বে বিসমিল্লাহির রাহমানির রহিম অর্থাৎ রহমানুর রহিম বা পরম দয়ালু আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে পানি পানি করে। খাবার আগে বা পরে বিসমিল্লাহ পাঠ করলে সাধারণ পানির গুনগত মানও পরিবর্তিত হয়ে যায়।
তিনি আরও দেখতে পান কেউ যদি সাধারণ পানির উপর আল-কোরানের আয়াত তেলাওয়াত করে, তবু সেই পানি বিভিন্ন রোগের নিরাময়ে কাজে লাগে।
জম জম কুপের পানি ভুমিতল হতে ১০.৬ ফুট নিচে। কিন্তু এই প্রতি সেকেন্ডে ৮০০০ লিটার পানি যদি ২৪ ঘন্টা ধরে উত্তোলন করা যায়, তবে এর পানির স্তর প্রায় ৪৪ ফুট নিচে নেমে যায়। কিন্তু পানি উত্তোলন বন্ধ করা হলে, ১১ মিনিটের মধ্যে পুনরায় এর পানির স্তর ১৩ ফুট উপরে উঠে যায়।
প্রতি সেকেন্ডে ৮০০ লিটার মানে, ৮০০০ x ৬০ = ৪৮০,০০০ লিটার/ মিনিট।
৪৮০,০০০ লিটার/ মিনিট মানে ৪৮০,০০০ x ৬০ = ২৮.৮ লিটার /ঘন্টা
এবং ২৮.৮ x ২৪ =৬৯১.২ মিলিয়ন লিটার/ দিন। অর্থাৎ ২৪ ঘন্টায় ৬৯০ মিলিয়ন লিটার পানি উত্তোলন করার পর মাত্র ১১ মিনিটের মধ্যে পুনরায় (গায়েবী) মদতে সেই পানির ঘাটতি পূরিত হয়।
এখানে দুইটি মুজীযা। একটি হচ্ছে এটি তাৎক্ষণিক পানি দ্বারা পরিপূর্ণ হয় এবং সেখানে আল্লাহ অসাধারণ ক্ষমতাধর একটি একুয়াফায়ার সংযুক্ত রেখেছেন, যাতে পানি বেরিয়ে যায় না, অন্যথায় জমজমের পানিতে দুনিয়া প্লাবিত হোত।
এ প্রসঙ্গে আল -কোরানে আল্লাহপাক বলেন, “এখন আমি তাদেরকে আমার নিদর্শনাবলী প্রদর্শন করাব পৃথিবীর দিগন্তে এবং তাদের নিজেদের মধ্যে; ফলে তাদের কাছে ফুটে উঠবে যে, এ কোরআন সত্য। আপনার পালনকর্তা সর্ববিষয়ে সাক্ষ্যদাতা, এটা কি যথেষ্ট নয়?” (সুরা হামীম সেজদার ৫৩ নং আয়াত) ।
মাসারু ইমোটোর গবেষণা দৃশ্যতঃ সত্য বলে মেনে নেওয়া যায়। এই সূত্রধরে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলমান দেশসহ পৃথিবীর অপরাপর আগ্রহী সরকারী অথবা বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মুসলমান অমুসলমান বিজ্ঞানীরা গবেষণা করতে পারেন। বাংলাদেশে সাইন্স ল্যাবরেটরি অথবা বিশ^বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরা এই সূত্র ধরে গবেষণা চালাতে পারেন। এই গবেষনায় নিশ্চয়ই বাড়তি কোন আবিষ্কার সম্ভব হতে পারে। আমরা এমন প্রাতিষ্ঠানিক আবিষ্কার সম্পন্ন করার দাবী জানাচ্ছি।
----------------------------------------------------------------------------------
'' শুধু নিজে শিক্ষিত হলে হবেনা, প্রথমে বিবেকটাকে শিক্ষিত করুন। ''
কোন মন্তব্য নেই:
/>