জান্নাতে প্রবেশের চাবী সমূহ
জান্নাতে প্রবেশের চাবী সমূহ
সকল প্রশংসা একমাত্র আল্লাহ তাআলার জন্যে যিনি আমাদেরকে পূর্ণ মুসলমান করে সৃষ্টি করেছেন। দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর পরিবারবর্গ ও সাহাবাগণের উপর।
সম্মানীত পাঠকবৃৃন্দ! আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন একমাত্র তাঁরই ইবাদতের লক্ষ্যে। অতএব যারা তাঁর ইবাদত করবে তাদেরকে তিনি পরকালে উত্তম পুরস্কারে ভূষিত করবেন, আর তাহল জান্নাত। আর যারা অন্যায় ও অবাধ কর্ম করবে তাদেরকে তিনি কঠিনতম শাস্তিতে নিপতিত করবেন, সেই শাস্তি হবে জাহান্নাম। তাই আল্লাহ তাআলা দুনিয়াতে এমন কিছু উপায় ও উপকরণ দিয়েছেন যাতে করে যারাই সে মোতাবেক আমল করবে তারা কিয়ামতের দিন সেই মহান পুরস্কার লাভে ধন্য হবে। তাই নিম্নে কিছু উপায় ও উপকরণ তুলে ধরা হল যা দ্বারা পরকালে মহা পুরস্কার লাভে ধন্য হওয়া যাবে।
সম্মানীত পাঠকবৃৃন্দ! আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন একমাত্র তাঁরই ইবাদতের লক্ষ্যে। অতএব যারা তাঁর ইবাদত করবে তাদেরকে তিনি পরকালে উত্তম পুরস্কারে ভূষিত করবেন, আর তাহল জান্নাত। আর যারা অন্যায় ও অবাধ কর্ম করবে তাদেরকে তিনি কঠিনতম শাস্তিতে নিপতিত করবেন, সেই শাস্তি হবে জাহান্নাম। তাই আল্লাহ তাআলা দুনিয়াতে এমন কিছু উপায় ও উপকরণ দিয়েছেন যাতে করে যারাই সে মোতাবেক আমল করবে তারা কিয়ামতের দিন সেই মহান পুরস্কার লাভে ধন্য হবে। তাই নিম্নে কিছু উপায় ও উপকরণ তুলে ধরা হল যা দ্বারা পরকালে মহা পুরস্কার লাভে ধন্য হওয়া যাবে।
১) মনে প্রাণে আল্লাহ তাআলাকে এক বলে সাক্ষ্য প্রদান করাঃ
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
فَإِنَّ اللَّهَ قَدْ حَرَّمَ عَلَى النَّارِ مَنْ قَالَ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ يَبْتَغِي بِذَلِكَ وَجْهَ اللَّهِ
“যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে বলবে (لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ) আল্লাহ তাআলা তার জন্যে জাহান্নাম হারাম করে দিবেন। (বুখারী)
২) একক ভাবে আল্লাহর ইবাদত করা:
যে ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করবে এমতাবস্থায় যে সে আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করেনি তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। জনৈক সাহাবী এসে আল্লাহর রাসূলকে বললেন আমাকে এমন আমলের সংবাদ দিন যা আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে এবং জাহান্নাম থেকে দূরে রাখবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তাঁকে একটি বিরাট বিষয়ে প্রশ্ন করার তাওফীক প্রদান করা হয়েছে। তারপর বললেন: “তুমি আল্লাহর ইবাদত করবে এতে তাঁর সাথে কাউকে শরীক করবে না, নামায কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে এবং নিকটাত্বীয়দের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে।” (মুসলিম)
৩) পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত ঠিক সময় আদায় করাঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
(خَمْسُ صَلَوَاتٍ كَتَبَهُنَّ اللَّهُ عَلَى الْعِبَادِ فَمَنْ جَاءَ بِهِنَّ لَمْ يُضَيِّعْ مِنْهُنَّ شَيْئًا اسْتِخْفَافًا بِحَقِّهِنَّ كَانَ لَهُ عِنْدَ اللَّهِ عَهْدٌ أَنْ يُدْخِلَهُ الْجَنَّةَ وَمَنْ لَمْ يَأْتِ بِهِنَّ فَلَيْسَ لَهُ عِنْدَ اللَّهِ عَهْدٌ إِنْ شَاءَ عَذَّبَهُ وَإِنْ شَاءَ أَدْخَلَهُ الْجَنَّةَ)
“আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তির উপর দিনে-রাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরয করেছেন। যে ব্যক্তি তা কোন অংশে কম না করে ঠিকভাবে আদায় করবে তার জন্যে আল্লাহ তাআলার প্রতিশ্রুতি হল তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। আর যে আদায় করবে না তার জন্যে আল্লাহর কোন প্রতিশ্রুতি নেই। ইচ্ছা করলে শাস্তি দিবেন বা জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। (আবু দাউদ)
৪) প্রতিদিন ১২ রাকাআত নফল সালাত আদায় করাঃ
عَنْ أُمِّ حَبِيبَةَ أَنَّهَا قَالَتْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ مَا مِنْ عَبْدٍ مُسْلِمٍ يُصَلِّي لِلَّهِ كُلَّ يَوْمٍ ثِنْتَيْ عَشْرَةَ رَكْعَةً تَطَوُّعًا غَيْرَ فَرِيضَةٍ إِلَّا بَنَى اللَّهُ لَهُ بَيْتًا فِي الْجَنَّةِ
উম্মে হাবিবা (রা:) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বলতে শুনেছি তিনি বলেছেনঃ “কোন মুসলিম ব্যক্তি দিনে-রাতে ফরয ব্যতীত বার রাকাআত নফল নামায আদায় করবে তার জন্যে জান্নাতে একটি ঘর তৈরী করা হবে।” (বুখারী ও মুসলিম)
এ বার রাকাআত নামায হলঃ যোহরের আগে চার এবং পরে দুই, মাগরিরের পরে দুই, এশার পরে দুই এবং ফজরের আগে দুই রাকাআত।”
এ বার রাকাআত নামায হলঃ যোহরের আগে চার এবং পরে দুই, মাগরিরের পরে দুই, এশার পরে দুই এবং ফজরের আগে দুই রাকাআত।”
৫) আসর ও ফজর নামাযঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
(مَنْ صَلَّى الْبَرْدَيْنِ دَخَلَ الْجَنَّةَ)
“যে ব্যক্তি দুই ঠান্ডার নামায আদায় করবে সে জান্নাতে যাবে।” (বুখারী ও মুসলিম)
৬) অযু করার পর একনিষ্ঠ হৃদয়ে দু রাকাআত নামায আদায় করাঃ
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
(مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَتَوَضَّأُ فَيُحْسِنُ وُضُوءَهُ ثُمَّ يَقُومُ فَيُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ مُقْبِلٌ عَلَيْهِمَا بِقَلْبِهِ وَوَجْهِهِ إِلَّا وَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةُ)
“যে কোন ব্যক্তি সুন্দর ভাবে অযু করে, একাগ্রতা ও একনিষ্ঠতার সাথে দুরাকাআত নামায আদায় করে তার জন্যে জান্নাত অবধারিত হয়ে যায়।” (মুসলিম)
৭) প্রত্যেক ফরয সালাতের পর আয়াতুল কুরসী পাঠ করাঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
) منْ قَرَأ آيَةِ الْكُرْسِيْ دُبُرَ كُلِّ صَلَاٍة لَمْ يَمْنَعهُ مِنْ دُخُوْلِ الجَنَّةِ إلَّا أنْ يَمُوْتَ)
“যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয সালাতের পর আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে তাকে জান্নাতে যাওয়া থেকে মৃত্যু ব্যতীত কোন কিছুই বাধা দিতে পারবে না।” (মুসলিম, নাসাঈ)
৮) আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে রোযা রাখাঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
)مَنْ صَامَ يَوْمًا فِي سَبِيلِ اللَّهِ بَاعَدَ اللَّهُ وَجْهَهُ عَنْ النَّارِ سَبْعِينَ خَرِيفًا)
“যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে একদিন রোযা রাখবে আল্লাহ তার বিনিময় তাকে জাহান্নাম থেকে সত্তর বছরের দূরত্বে রাখবেন।” (মুসলিম)
৯) অযুর দুআ পাঠ করাঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
(مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ يَتَوَضَّأُ فَيُحْسِنُ الْوُضُوءَ ثُمَّ يَقُولُ حِينَ يَفْرُغُ مِنْ وُضُوئِهِ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ إِلَّا فُتِحَتْ لَهُ أَبْوَابُ الْجَنَّةِ الثَّمَانِيَةُ يَدْخُلُ مِنْ أَيِّهَا شَاءَ)
“যে ব্যক্তি সুন্দর ভাবে অযু করবে অত:পর অযুর শেষে নিম্ন বর্ণিত দুআ পাঠ করবে তার জন্যে জান্নাতের আটটি দরজাই খুলে দেয়া হবে, যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশ করতে পারবে।” দুআটি হলঃ
(أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ)
উচ্চারণ:“আশহাদু আল্লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারীকালাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু।”(মুসলিম)
১০) সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার পাঠ করাঃ
((اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ )
উচ্চারণ:“আল্লাহুম্মা আনতা রব্বী লা-ইলাহা ইল্লা আনতা খালাকতানী ওয়া আনা আবদুকা ওয়া আনা আলা আহ্দিকা ওয়া ও’য়াদিকা মাসতাত’্বতু আউযুবিকা মিন শার্রি মা ছা’নাতু আবূউলাকা বিনিমাতিকা আলাইয়্যা ওয়া আবূউলাকা বিযানবী ফাগ্ফির্লী ফাইন্নাহু লা-ইয়াগফিরুয্যুনূবা ইল্লা আনতা” রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “যে কেউ ইয়াকিনের সাথে দিনের বেলা এই দুআ পাঠ করবে ঐ দিন সন্ধ্যা হওয়ার পূর্বে মৃত্যু বরণ করলে সে জান্নাতবাসী হবে এবং যে কেউ ইয়াকিনের সাথে রাত্রিতে পাঠ করবে ঐ রাত্রিতে মৃত্যুবরণ করলে সে জান্নাতবাসী হবে।” (বুখারী)
১১) জান্নাত লাভের প্রার্থনা করাঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
(مَنْ سَأَلَ اللَّهَ الْجَنَّةَ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ قَالَتْ الْجَنَّةُ اللَّهُمَّ أَدْخِلْهُ الْجَنَّةَ وَمَنْ اسْتَجَارَ مِنْ النَّارِ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ قَالَتْ النَّارُ اللَّهُمَّ أَجِرْهُ مِنْ النَّارِ)
“যে ব্যক্তি তিনবার আল্লাহর কাছে জান্নাতের প্রার্থনা করে, জান্নাত বলে হে আল্লাহ! তাকে জান্নাতে প্রবেশ করান। আর যে ব্যক্তি তিনবার জাহান্নাম থেকে মুক্তি চায়, জাহান্নাম বলে হে আল্লাহ! তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করুন।” (তিরমিযী)
১২) আযানের জবাব দেয়াঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
“যখন মুয়াজ্জিন বলবে ‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার’ তখন তোমাদের কেউ বলবে ‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার’ এভাবে শেষ পর্যন্ত, কেবল মুয়াজ্জিন ‘হাইয়্যা আলাস্ সালাহ’ ও ‘হাইয়্যা আলাল ফালাহ’ বললে বলবে “লা-হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ”। তারপর মুয়াজ্জিন যখন বলবে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ তখন যদি কেউ একনিষ্ঠ হৃদয়ে বলে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (মুসলিম)
১৩) নিম্ন লিখিত দুআটি পাঠ করাঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সকালে বা সন্ধ্যায় এ দুআটি এক বার পাঠ করবে সে তার শরীরের একচতুর্থাংশ জাহান্নাম থেকে মুক্ত করে দিল। যে ব্যক্তি দুবার পাঠ করবে সে তার শরীরের অর্ধেক মুক্ত করে দিল। যে ব্যক্তি তিনবার পাঠ করবে সে তার শরীরের তিন ভাগ মুক্তি করে দিল। যে ব্যক্তি চার বার পাঠ করবে সে তার পূর্ণ শরীরকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করে দিল।
(اللَّهُمَّ إِنِّي أَصْبَحْتُ أُشْهِدُكَ وَأُشْهِدُ حَمَلَةَ عَرْشِكَ وَمَلَائِكَتَكَ وَجَمِيعَ خَلْقِكَ أَنَّكَ أَنْتَ اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُكَ وَرَسُولُكَ )
উচ্চারণঃ “আল্লাহুম্মা ইন্নী আসবাহতু উশহিদুকা ওয়া উশহিদু হামালাতা আরশিকা ওয়া মালাইকাতাকা ওয়া জামীয়া খালকিকা আন্কা আনতাল্লাহু লা-ইলাহা ইল্লা আনতা ওয়া আন্না মুহাম্মাদান আবদুকা ওয়া রাসূলুকা।” সন্ধ্যাবেলা আসবাহ্তু এর স্থানে অ্মমসাইতু পড়বে।” (আবু দাউদ)
১৪) সালামের প্রচলন করাঃ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
(لَا تَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ حَتَّى تُؤْمِنُوا وَلَا تُؤْمِنُوا حَتَّى تَحَابُّوا أَوَلَا أَدُلُّكُمْ عَلَى شَيْءٍ إِذَا فَعَلْتُمُوهُ تَحَابَبْتُمْ أَفْشُوا السَّلَامَ بَيْنَكُمْ)
“তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না যতক্ষন না ঈমানদার হবে, আর ঈমানদার হতে পারবে না যে পর্যন্ত একে অপরকে ভাল না বাসবে, আমি কি তোমাদেরকে বলে দিব না কোন্ কাজ করলে তোমরা একে অপরকে ভালবাসতে পারবে? আর তা হল: পরস্পরের মাঝে সালামের বিস্তার ঘটানো।” (মুসলিম )
১৫) ইসলামী জ্ঞান অর্জন করাঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
(مَنْ سَلَكَ طَرِيقًا يَلْتَمِسُ فِيهِ عِلْمًا سَهَّلَ اللَّهُ لَهُ بِهِ طَرِيقًا إِلَى الْجَنَّةِ)
“যে ব্যক্তি ইসলামী জ্ঞান অর্জন করার লক্ষ্যে পথ চলে আল্লাহ তাআলা তার জন্যে জান্নাতের পথ সুগম করে দিবেন।” (মুসলিম)
১৬) সত্য কথা বলা, প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা, আমানত আদায় করা, লজ্জাস্থান হেফাযত করা ও দৃষ্টি অবনত রাখাঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
(اضْمَنُوا لِي سِتًّا مِنْ أَنْفُسِكُمْ أَضْمَنْ لَكُمْ الْجَنَّةَ اصْدُقُوا إِذَا حَدَّثْتُمْ وَأَوْفُوا إِذَا وَعَدْتُمْ وَأَدُّوا إِذَا اؤْتُمِنْتُمْ وَاحْفَظُوا فُرُوجَكُمْ وَغُضُّوا أَبْصَارَكُمْ وَكُفُّوا أَيْدِيَكُمْ)
“তোমরা আমাকে তোমাদের নিজেদের ছয়টি জিনিসের যামানত দাও আমি তোমাদেরকে জান্নাতের যামানত দিব।
(১) যখন কথা বলবে সত্য বলবে
(২) প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করবে
(৩) আমানত রক্ষা করবে
(৪) তোমাদের লজ্জাস্থান হেফাযত করবে
(৫) দৃষ্টি অবনত রাখবে
(৬) তোমাদের হাতকে গুটিয়ে রাখবে।” (আহমাদ)
(১) যখন কথা বলবে সত্য বলবে
(২) প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করবে
(৩) আমানত রক্ষা করবে
(৪) তোমাদের লজ্জাস্থান হেফাযত করবে
(৫) দৃষ্টি অবনত রাখবে
(৬) তোমাদের হাতকে গুটিয়ে রাখবে।” (আহমাদ)
১৭) জিহ্বা ও লজ্জাস্থানকে হেফাযত করাঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
(مَنْ يَضْمَنْ لِي مَا بَيْنَ لَحْيَيْهِ وَمَا بَيْنَ رِجْلَيْهِ أَضْمَنْ لَهُ الْجَنَّةَ)
“যে ব্যক্তি তার জিহ্বা ও লজ্জাস্থানের হেফাযতের দায়িত্ব নিবে আমি তার জন্যে জান্নাতের যিম্মাদার হব।” (বুখারী)
১৮) মাসজিদ নির্মাণ করাঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
(مَنْ بَنَى مَسْجِدًا لِلَّهِ تَعَالَى يَبْتَغِي بِهِ وَجْهَ اللَّهِ بَنَى اللَّهُ لَهُ بَيْتًا فِي الْجَنَّةِ
“যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে মাসজিদ নির্মাণ করবে আল্লাহ তার জন্যে জান্নাতে একটি ঘর তৈরী করবেন।” (মুসলিম)
১৯) পিতা-মাতার সেবা করাঃ
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
) رَغِمَ أَنْفُهُ ثُمَّ رَغِمَ أَنْفُهُ ثُمَّ رَغِمَ أَنْفُهُ قِيلَ مَنْ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ مَنْ أَدْرَكَ وَالِدَيْهِ عِنْدَ الْكِبَرِ أَحَدَهُمَا أَوْ كِلَيْهِمَا ثُمَّ لَمْ يَدْخُلْ الْجَنَّةَ)
“ঐ ব্যক্তির নাখ ধূলোমলিন হোক অত:পর তার নাখ ধূলোমলিন হোক অত:পর তার নাখ ধূলোমলিন হোক।” সাহাবাগণ জিজ্ঞাসা করলেন, কে হে আল্লাহর রাসূল? তিনি বললেন, “যে ব্যক্তি তার বৃদ্ধ পিতা-মাতার একজনকে পেল বা দুজনকেই পেল, তারপর তাদের সেবা করে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারল না।” (মুসলিম)
২০) ক্রোধ সংবরণ করাঃ
(عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ، قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، دُلَّنِي عَلَى عَمَلٍ يُدْخِلُنِي الْجَنَّةَ، قَالَ:”لا تَغْضَبْ، وَلَكَ الْجَنَّةُ)
আবু দারদা (রা:) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বললাম হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন আমলের সন্ধান দিন যা করলে আমি জান্নাতে যেতে পারব। তিনি বললেন,“তুমি রাগ করিও না তাহলে তোমার জন্যে জান্নাত।” (ত্ববরানী)
২১) ইয়াতীমের লালন-পালন করাঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
(وَأَنَاوَكَافِلُ الْيَتِيمِ فِي الْجَنَّةِ هَكَذَا وَأَشَارَ بِالسَّبَّابَةِ وَالْوُسْطَى وَفَرَّجَ بَيْنَهُمَا شَيْئًا)
“আমি এবং ইয়াতিমের লালন-পালন কারী জান্নাতে এ ভাবে থাকব। তিনি শাহাদাত ও মধ্যমা অঙ্গুলী দ্বারা ইশারা করে দেখালেন এবং উভয়ের মাঝে একটু ফাঁক করলেন।” (বুখারী)
২২) স্বামীর আনুগত্য করাঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
) إذَا صَلٌَتِ الْمَرْأةُ خَمْسَهَا ، وَصَامَتْ شَهْرَهَا ، وَحَصَّنَتْ فَرْجَهَا ، وَأطَاعَتْ بَعْلَهَا دَخَلَتْ مِنْ أيِّ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ شَاءَتْ (
“কোন মহিলা যদি পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করে, রামাযান মাসের রোযা রাখে, তার গোপন অঙ্গের হেফাযত করে এবং তার স্বামীর আনুগত্য করে সে জান্নাতের যে কোন দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশ করতে পারবে।” (সহীহ ইবনু হিব্বান)
২৩) আল্লাহর নাম মুখস্থ করাঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
(إِنَّ لِلَّهِ تِسْعَةً وَتِسْعِينَ اسْمًا مِائَةً غَيْرَ وَاحِدٍ مَنْ أَحْصَاهَا دَخَلَ الْجَنَّةَ)
“নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলার নিরানব্বই নাম রয়েছে, যে তা মুখস্থ রাখবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।” (তিরমিযী) ইমাম নববী বলেন: (মুখস্থ অর্থ হল, অর্থ বুঝে আমল করা)
----------------------------------------------------------------------------------
'' শুধু নিজে শিক্ষিত হলে হবেনা, প্রথমে বিবেকটাকে শিক্ষিত করুন। ''
কোন মন্তব্য নেই:
/>