রবিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

দারসুল কুরআন -সুরা আল ইমরান,আয়াতঃ১০২-১০৪

দারসুল কুরআন
-সুরা আল ইমরান,আয়াতঃ১০২-১০৪



يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ حَقَّ تُقَاتِهِ وَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنتُم مُّسْلِمُونَ (৩:১০২) وَاعْتَصِمُوا بِحَبْلِ اللَّهِ جَمِيعًا وَلَا تَفَرَّقُوا ۚ وَاذْكُرُوا نِعْمَتَ اللَّهِ عَلَيْكُمْ إِذْ كُنتُمْ أَعْدَاءً فَأَلَّفَ بَيْنَ قُلُوبِكُمْ فَأَصْبَحْتُم بِنِعْمَتِهِ إِخْوَانًا وَكُنتُمْ عَلَىٰ شَفَا حُفْرَةٍ مِّنَ النَّارِ فَأَنقَذَكُم مِّنْهَا ۗ كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ لَكُمْ آيَاتِهِ لَعَلَّكُمْ تَهْتَدُونَ (৩:১০৩) وَلْتَكُن مِّنكُمْ أُمَّةٌ يَدْعُونَ إِلَى الْخَيْرِ وَيَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنكَرِ ۚ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ (৩:১০৪)
(৩:১০২) হে ঈমানদারগণ ! তোমরা যথাযথভাবে আল্লাহকে ভয় করো৷ মুসলিম থাকা অবস্থায় ছাড়া যেন তোমাদের মৃত্যু না হয়৷ ৮২ (৩:১০৩) তোমরা সবাই মিলে আল্লাহর রুজ্জু ৮৩ মজবুতভাবে আকঁড়ে ধরো এবং দলাদলি করো না৷ আল্লাহ তোমাদের প্রতি যে অনুগ্রহ করেছেন সে কথা স্মরণ রেখো৷ তোমরা ছিলে পরস্পরের শক্র ৷ তিনি তোমাদের হৃদয়গুলো জুড়ে দিয়েছেন৷ ফলে তাঁর অনুগ্রহ ও মেহেরবানীতে তোমরা ভাই ভাই হয়ে গেছো৷ তোমরা একটি অগ্নিকুণ্ডের কিনারে দাঁড়িয়ে ছিলে৷ আল্লাহ সেখান থেকে তোমাদের বাঁচিয়ে নিয়েছেন ৷ ৮৪ এভাবেই আল্লাহ তাঁর নির্দশনসমূহ তোমাদের সামনে সুস্পষ্ট করে তুলেন ৷ হয়তো এই নিদর্শনগুলোর মাধ্যমে তোমরা নিজেদের কল্যাণের সোজা সরল পথ দেখতে পাবে৷ ৮৫ (৩:১০৪) তোমাদের মধ্যে এমন কিছু লোক অবশ্যি থাকতে হবে, যারা নেকী ও সৎকর্মশীলতার দিকে আহবান জানাবে, ভালো কাজের নির্দেশ দেবে ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখবে৷ যারা এ দায়িত্ব পালন করবে তারাই সফলকাম হবে ৷
-আল কুরআন
নামকরনঃ 
সুরার ৩৩ নং আয়াতে উল্লিখিত শব্দকে কেন্দ্র করে সুরার নামকরন করা হয়েছে।
নাযিলের সময়কালঃ
এই সুরায় ৪টি ভাষণ সন্নিবেশিত
প্রথম ভাষণঃ প্রথম থেকে ৪র্থ রুকুর ২য় আয়াত পর্যন্ত, বদরযুদ্ধ কালীন সময়ে।
দ্বিতীয় ভাষণঃ ৪র্থ রুকুর ৩য় আয়াত থেকে শুরু করে ৬ষ্ঠ রুকুর শেষ পর্যন্ত ৯ম হিজরীতে অবতীর্ণ হয়।
তৃতীয় ভাষণঃ ৭ম রুকুর শুরু থেকে ১২তম রুকুর শেষ পর্যন্ত। প্রথম ভাষণের সমসাময়িক বলে মনে হয়।
চতুর্থ ভাষণঃ ১৩তম রুকু থেকে শেষ পর্যন্ত। ওহুদ যুদ্ধের পর।
ফজিলতঃ
দোররে মনসুর কিতাবে হযরত কাব বলেছেন- সুরা বাকারা এবং সুরা আল ইমরান, উভয় নিজ নিজ পাঠকদের সম্পর্কে বলবে হে আল্লাহ
এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই।
খোলাসাতুত তাফসীরের ১ম খন্ডের ২৩ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে, নবী (সাঃ) বলেছেন যে ব্যক্তি সুরা বাকারা ও সুরা আল ইমরান জুমার রাতে পাঠ করবে আল্লাহ তাকে সাত জমীন থেকে সাত আসমান পর্যন্ত সওয়াব দান করবেন। (নূরুল কোরআন)
ইসমে আযমঃ ইবনে আবু শায়বা তাবারানী ইবনে মারদওয়াহ, আবু উমামা (রাঃ) সুত্রে বর্ণিত মারফু হাদীসে উল্লেখ করেন যে তিনটি সুরায়
আল্লাহর ইসমে আযম রয়েছে। বাকারা, আল ইমরান ও ত্বহা।
সুরা বাকারা ও আল ইমরানের মাঝে সামঞ্জস্যঃ
১· সুরা বাকারায় তৌহিদের সত্যতার উপর দলিল পেশ করা হয়েছে। আল ইমরানে এ পর্যায়ে সকল সন্দেহ দুরীভুত করা হয়েছে।
২· বাকারায় মানবজাতি সৃষ্টির কথা বলা হয়েছে আল ইমরানে মানুষকে তার মাতৃগর্ভে আকৃতি দানের কথা বলা হয়েছে।
৩· বাকারায় আদম সৃষ্টির ইতিকথা বর্ণিত হয়েছে আল ইমরানে আদম সন্তান সৃষ্টির কথা বলা হয়েছে। (নূরুল কুরআন)
বিষয়বস্তুঃ 
দুটি দলকে সম্বোধন করে বক্তব্য পেশ-
১· আহলে কিতাব (ইহুদী ও খৃষ্টান)
২· ঈমানদারগণ
উভয়পক্ষের কাছেই সুরা বাকারায় যে ভাষণ ছিল তা জোরদার করা হয়েছে।
- প্রথম দল আকীদাগত ভ্রষ্টতা।
- দ্বিতীয় দল শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা।
ঐতিহাসিক পটভূমিঃ
বদরের যুদ্ধের পর মুসলমানদের নিরন্তর ভীতি ও অস্থিরতার মধ্যে বসবাস বদরের যুদ্ধ ছিল ভীমরুলের চাকে ঢিল মারার মতো।
বহুসংখ্যক মুহাজিরের আগমনে মদীনার অর্থনৈতিক অবস্থার উপর বিরুপ প্রতিক্রিয়া
মদীনার আশে পাশে ইহুদী গোত্রের শত্রুতা।
বদর যুদ্ধে পরাজয়ের পর কুরাইশদের প্রতিশোধ স্পৃহা ও ওহুদ যুদ্ধ।
ওহুদ যুদ্ধের সময় মুসলমানদের দ্বারা কৃত ভুল সমূহের সংশোধন।
সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাঃ 
আয়াতঃ ১০২
ইসলামী জীবনের কেন্দ্রীয় চরিত্র হলো ঈমান ও ভাতৃত্ব মুসলমানদের জাতীয় শক্তির উৎসের প্রথমটি হলো তাকওয়া ঐক্যবদ্ধ জীবনযাপন|
অনেকে তাকওয়া বলতে বাহ্যিক বেশভুষা মনে করেন। তাকওয়ার সংগে সুরা হাশর-৭, আহযাব-১, মুলক-১২
একবার তাকওয়া সম্পর্কে বক্তব্য দিতে গিয়ে রাসূল (সাঃ) তার বুকের দিকে ইশারা দিয়ে ৩বার বললেন ‘তাকওয়া হওলা এখানে’। অর্থাৎ অন্তরে ভয় থাকলে সব কাজে প্রভাব পড়ে।
এ সম্পর্কে রাসূল (সাঃ) বলেন “আমি কি তোমাদের উত্তম লোকদের সম্পর্কে বলব? গাহাবীরা বললেন জি হ্যা বলুন হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ)। তিনি বললেন- তোমাদের মধ্যে তারাই উত্তম যাদের (আমল) দেখলে আল্লাহর কথা স্মরণ হয়।” (ইবনে মাযা, রাবী আসমা বিনতে ইয়াজিদ)
এ গুনের অভাবে একটি সমাজ জাহেলী সমাজের রুপ নিতে পারে।
ব্যক্তিগত পর্যায়ে তাকওয়া ও তার মর্যাদাঃ 
সুরা হুজুরাত-১৩,হাশর-১৮,সুরা নাহল-১২৮,সুরা নূর-৫২
রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে তাকওয়া ও তার ফলঃ 
সুরা আরাফ-৯৬
জামায়াতী জিন্দেগীর ক্ষেত্রে তাকওয়াঃ
তওবা-১১৯,ফাতির-২৮
জিহাদের ক্ষেত্রে তাকওয়াঃ
আল ইমরান-২০০,মায়েদা-৩৫
আত্নীয়-স্বজনের ব্যাপারে তাকওয়াঃ
নিসা-১
পরকালের ব্যাপারে তাকওয়াঃ
বাকারা-১২৩
হাদীসঃ তাকওয়ার সংজ্ঞা 
১· আতিয়া আস-সাদী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন কোন ব্যক্তি পাপ কাজে জড়িয়ে পড়ার আশংকায় যেসব কাজে গুনাহ নেই তা পরিত্যাগ না করা পর্যন্ত খোদাভীরু লোকদের শ্রেণীভুক্ত হতে পারেনা। (তিরমিযী ও ইবনে মাযা)
২· হাসার ইবনে আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি রাসূল (সাঃ) এর জবান মুবারক হতে এ কথা মুখস্থ করে নিয়েছি, যে জিনিস সংশয়ের মধ্যে ফেলে দেয় তা পরিত্যাগ করে যা সন্দেহের উর্ধ্বে তা গ্রহ কর। কেননা সততাই শান্তির বাহন এবং মিথ্যাচার সন্দেহ সংশয়ের উৎস। (তিরমিযী)
তাকওয়ার হক কি? 
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ, রবী কাতাদাহ ও হাসান বসরী (রাঃ) বলেন, তাছাড়া রাসূল (সাঃ) নিজেও বলেছেনঃ তাকওয়ার হক হলো, প্রতিটি কাজে আল্লাহর আনুগত্য করা আনুগত্যের বিপরীত কোন কাজ না করা, আল্লাহকে সার্বক্ষণিক মনের মধ্যে স্মরণ রাখা, কখনও ভুলে না যাওয়া এবং সবসময়ই তার শোকরিয়া আদায় করা এবং অকৃতজ্ঞ না হওয়া। (বাহরে মুহীত)
সুরা হজ্জের শেষ আয়াতে ‘তোমরা আল্লাহর জন্য জিহাদ করো জিহাদের হক আদায় করে।’
আল্লামা সুদী (রঃ) বলেন এর অর্থ এমনভাবে তার আনুগত্য ও বাধ্যতা স্বীকার করতে হবে যেখানে কখনও কোন নাফরমানী ও অবাধ্যতা থাকবেনা। তাকে এমন একনিষ্ঠভাবে স্মরণ করতে হবে যেখানে তাকে ভুলে যাবার কোন অবকাশ থাকবেনা। তার প্রতি এমন আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে হবে যেখানে কোন অকৃতজ্ঞতার প্রশ্ন উঠবেনা। (তাবারী)
অন্যান্য তাফসীরকারকগণ বলেন ইবাদতের ক্ষেত্রে বুঝানো হয়েছে। বস্তুত আল্লাহর ইবাদত এমনভাবে করতে হবে যা আদায়ের ব্যাপারে কোন বিরুদ্ধাচারীর বিরোধীতার দিকে ভ্রুক্ষেপ করা যাবেনা।
তাকওয়ার তিনটি স্তরঃ
১) সর্বনিম্ন স্তর কুফর বা শিরক থেকে বিরত থাকা
২) অপছন্দনীয় বিষয় থেকে বিরত থাকা
৩) সর্বোচ্চ স্তর হাদীস পূর্বে বর্ণিত উদাঃ গরু চরানো আইল পর্যন্ত বৈধ কিন্তু অন্যের জমিতে মুখ দেবে ভয়ে আইন থেকে অনেক দূরে।
হযরত উমর (রাঃ) বলেন- কন্টাকাকীর্ণ রাস্তায় চলাচলের সময় যেমন কাপড় চোপড় গুটিয়ে আটো সাটো হয়ে চলতে হয়। তেমটি দুনিয়ার জীবনে পাপ থেকে বাচবার জন্য একজন মুত্তাকী ব্যক্তিকে সতর্কতার সাথে বেছে বেছে চলতে হয়।
আর মুসলমান না হয়ে মৃতুø বরণ করোনা “মুসলমান না হয়ে মরার অর্থ হচ্ছে তোমার এমন কোন মুহুর্ত যেন না কাটে যখন তুমি ইসলামে প্রতিষ্ঠিত নও। কেননা তখন যদি মৃতুø আসে তবে, তা হবে ইসলামে বিহীন মৃতুø। (মাযহাবী)
তাকওয়ার স্তরঃ
হযরত উমর (রাঃ) বলেন হারামে জড়িয়ে যাবার ভয়ে আমরা হালাল জিনিসের দশ ভাগের নয় ভাগই পরিত্যাগ করে থাকি।
হযরত জাবের (রাঃ) বলেন আমি রাসূল (সাঃ) এর মৃতুøর তিনদিন আগে তার মুখে বলতে শুনেছিঃ দেখ তোমরা মৃতুøর সময় আল্লাহর প্রতি ভালো ধারনা রাখবে। (মুসলিম) মুসনাদে বাযযার এ রয়েছে রাসূল (সাঃ) এক আনসারী রোগীকে দেখতে গেলেন। সালাম দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন অবস্থা কিরুপ। তিনি বললেন আল হামদুলিল্লাহ ভালই আছি। আল্লাহর দয়ায় আশা করছি এবং তার শাস্তির ভয় করছি। রাসূল (সাঃ) বললেন জেনে রেখো এরুপ অবস্থায় যার অন্তরে আশা-ভয় দুটোই থাকে আল্লাহ তার আকাঙ্খার জিনিস প্রদান করেন এবং ভয় থেকে রক্ষা করেন।
রাসূল (সাঃ) দোয়া করতেন। “হে আমাদের দিলকে পরিবর্তকারী, আমাদের দিলসমুহকে তোমার দ্বীনের উপর রাখ।”
“হে আমাদের দিলসমূহকে উলট-পালটকারী, আমাদের দিলসমূহকে তোমার আনুগত্যের দিকে ঘুরিয়ে দাও।” (মুসলিম)
রাসূল (সাঃ) বলেন “তোমাদের হাশর তেমন হবে যেমন তোমাদের মৃতুø হবে।”
মুসনাদে আহমাদ
আব্বাস (রাঃ) সাথে ছিলেন। নবী (সাঃ) উক্ত আয়াত তেলাওয়াত করে বলেন- যদি জাক্কুমের একটি ফোটা পৃথিবীতে নিক্ষেপ করা হয় তবে পৃথিবীর যাবতীয় খাদ্যদ্রব্য বিনষ্ট হয়ে যাবে। অতএব তোমরা চিন্তা কর দোযখীদের অবস্থা যাদের পানাহার হবে জাক্কুম। (নূরুল কোঃ মাযহাবী)
আয়াতঃ ১০৩
শানে নুযুলঃ 
ইবনে কাসীর তাফসীরে ৩টি ঘটনা উল্লেখ করেন-
১· আউস ও খাযরায় গোত্র ইসলাম গ্রহণ করে ভ্রাতৃ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। একবার এক ইহুদী আউস ও খাযরাজ গোত্রের সম্মিলিত সমাবেশের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। তাদের মহব্বত দেখে সে ঈর্ষান্বিত হয়। চক্রান্তের জন্য সে একজনকে ঐ সমাবেশে পাঠায় এবং দুই গোত্রের মধ্যে পুরাতন শত্রুতা জগাতে সক্ষম হয়। ফলে হারারা নামক স্থানে দুই গোত্রের প্রায় যুদ্ধাবস্থা সৃষ্টি হয়। রাসূলের উপস্থিতিতে শান্ত হয়।
২· হুনায়েন যুদ্ধের গনিমতের মাল রাসূল কমবেশি করে বন্টন করছিলেন। তা দেখে কেউ একজন কটুক্তি করে। ফলে রাসূল (সাঃ) একটি ভাষণ দেন- “হে আনসার দল, তোমরা কি পথভ্রষ্ট ছিলেনা অতপর আল্লাহ আমার মাধ্যমে সুপথে এনেছেন ----------
৩· হযরত ইকরামা (রাঃ) বলেন হযরত আয়েশা (রাঃ) কে যখন মুনাফিকরা মিথ্যা দোষারোপ করছিল এবং আল্লাহ এ প্রেক্ষিতে আয়াত নাযিল করলেন তখন মুসলমানেরা একে অপরের বিরুদ্ধে লেগে পড়ছিল তখন এ আয়াত নাযিল হয়।
আয়াতে পারস্পরিক ঐক্যের বিষয়টি আলোচিত হয়েছে-
পরস্পর ঐক্যের বন্ধন
বিচ্ছিন্ন না হওয়া
আল্লাহর রজ্জু অর্থ- 
দ্বীন ইসলাম , আল্লাহর কিতাব
হযরত যায়েদ ইবনে আরকামের বর্ণনায় “আল্লাহর রজ্জু হলো কুরআন।” (ইবনে কাসীর)
হাদীসে এসেছে
“আল্লাহর কিতাব আকাশ হতে যমীন পর্যন্ত প্রলম্বিত এক রজ্জু।”
ইসলামী ঐক্য ‘হাবলুল্লাহ’। জাতি, বর্ণ, গোত্র ভিত্তি নয়।
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন ৩টি কাজে আল্লাহ খুশি হন ৩টি কাজে বেজার হন
তোমরা এক আল্লাহর ইবাদত কর। তার সাথে কিছু শরীক করোনা।
আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে আকড়ে ধর পরস্পর দলাদলি করোনা।
মুসলমানদে রাষ্ট্র নায়কদের কল্যাণ কামনা কর ও সহযোগীতা কর।
বেজার হন যে তিনটি কাজে
বাজে ও অনর্থক কথা বলা
বেশী বেশী প্রশ্ন করা
সম্পদ ধ্বংস করা।
(সহীহ মুসলিম, ইবনে কাসীর)
জামায়াতী জিন্দেগীঃ 
আল ইমরান-১০১ সত্য পথের জন্য ছফ-৪
আয়াতে এরপর দুটি নেয়ামতের কথা বলা হয়েছেঃ
প্রথম নেয়ামতঃ
ভাতৃত্ব। একে অপরের দুশমন ছিল।
অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন- “তিনিই সেই আল্লাহ যিনি নিজ মদদে এবং মুমিনদের সাহায্য দ্বারা তোমাকে শক্তিশালী করেছেন এবং তাদের অন্তরে প্রেম প্রীতি পয়দা করে দিয়েছেন। (আনফাল ৬১-৬২)
দৃষ্টান্ত মক্কা থেকে মদীনায় হিজরত। আনছারদের ত্যাগ।
আউস ও খাযরাজ গোত্র শুধু ইসলামের কারণে বিরোধ নিষ্পত্তি
ইয়ারমুকের যুদ্ধে পানি পানের ঘটনা
দ্বিতীয় অনুগ্রহঃ 
“হে মুমিনগন, তোমরা একেবারে অগ্নিকুন্ডের পাড়ে অবস্থান করছিলে। সেখান থেকে আল্লাহ তোমাদের উদ্ধার করেছেন।”
মুফাসসিরগণ এর দু’রকম অর্থ করেছেন
একঃ শত্রুতা ও হানাহানির আগুনে ভরা গভীর খাদের কিনারায়। আউস ও খাযরাজ গোত্র (সাইয়েদ কুতুব শহীদ)
দুইঃ তোমরা দোযখের আগুনের ধারে পৌছে গিয়েছিলে এবং তোমাদের কুফরী তোমাদের ভিতরে প্রবেশ করিয়ে দি। সেখান থেকে বাচা। (ইবনে কাসীর)
আয়াতঃ ১০৪
তোমাদের মধ্যে এমন একটি ----- তারাই সফলকাম।
হযরত যাহ্‌হাক- এই দল হতে ভাবার্থ হচ্ছে বিশিষ্ট সাহারা (রাঃ) ও বিশিষ্ট হাদীস বর্ণনাকারীগণ অর্থøাৎ মুজাহিদ ও আলেমগন। (ইবনে কাসীর
রাসূল (সাঃ) তেলাওয়াত করে বলেছিলেন এ সম্প্রদায় হলো বিশেষ করে সাহাবা কেরামের দল (ইবনে কাসীর)
এখন সাহাবাদের অনুসারীরাই, সেই দল। কারন কোরআনের নির্দেশ সার্বজনীন।
এই সুরার ১১০ নং আয়াত সুরা আছর
সত্যনিষ্ঠ দলের কাজঃ 
প্রথম কাজঃ মানুষকে কল্যাণের দিকে ডাকা। দাওয়াতের এ কাজ সার্বজনীন। দাওয়াত দিতেহবে চরিত্র ও কর্মের মাধ্যমে (কথা ও কাজে মিল)
কল্যাণ বা সৎকাজ কি? কোরআন ও হাদীস দ্বারা যা বৈধ তা। যেমনঃ মদ পান হারাম কিন্তু বাইরের দেশ (আমেরিকা) মদপান অপরাধ নয়।
দ্বিতীয় কাজঃ অসৎ কাজে বাধা প্রদান।
নিষেধ নয় বাধা।
বাধা দানের তিনটি পর্যায়- 
হাদীসঃ রাসূল (সাঃ) বলেন হে ঈমানদারগণ তোমাদের কেউ যখন কোন অন্যায় ও অপরাধ হতে দেখবে তখন হাত ---- কথা --- অন্তর
অসৎ কাজে বাধা না দেবার পরিণামঃ
রাসূল (সাঃ) বলেন, যে সত্তার হাতে আমার প্রাণ তার শপথ তোমরা সৎকাজের আদেশ ও মন্দ কাজ হতে কারণ করতে থাক। নতুবা আল্লাহ অতিসত্ত্বরই তোমাদের উপর তার শাস্তি অবতীর্ণ করবেন। অতঃপর তোমরা (তা থেকে বাচার জন্য) দোয়া করবে কিন্তু তা কবুল করা হবেনা। (আবুদাউদ)
দাওয়াতের এ কাজ সার্বজনীনঃ
নবী রাসূলের মিশন দাওয়ান।
                        ----------------------------------------------------------------------------------
                        '' শুধু নিজে শিক্ষিত হলে হবেনা, প্রথমে বিবেকটাকে শিক্ষিত করুন। ''

কোন মন্তব্য নেই:

Comment here />

Widget ByBlogger Maruf
Widget ByBlogger Maruf