আজকাল বিভিন্ন সেমিনার, পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলে আর ফেসবুকে বাম, রাম, নাস্তিক এবং কিছু বিভ্রান্ত আলেম ও তাদের অনুসারীরা জামাতে ইসলামীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। কেউ কেউ আবার বলার চেষ্টা করতেছে ইসলাম ও জামাতে ইসলাম এক জিনিস নয়। এসব অপপ্রচার কিন্তু নতুন কিছু নয়, সেই ১৯৪০ সাল থেকে অর্থাৎ জামাতে ইসলামী প্রতিষ্ঠার পর থেকেই শুরু হয়েছে। সময়ের স্রোতের সাথে সাথে তার অনেক কিছুই আজ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। তারপরও যে সব বিভ্রান্তি প্রচার করা হচ্ছে, তার অনেক জবাব বিভিন্ন বইতে, বিভিন্ন ওয়াজ-মাহফিলে ও পত্র-পত্রিকায় দেওয়া হয়েছে। তারপরও সুবিধাবাদী ও ইসলামের শত্রুরা সেই পুরানো ভাঙ্গা রেকর্ড বাজিয়ে বর্তমান নতুন প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। তারা ঐসব জবাবগুলো পড়ে দেখছেনা, কিংবা পড়লেও নিজেদের হৃদয় ও বিবেকের দরজা বন্ধ করে রেখেছে। তারা তাদের উত্তরসূরিদের সেইসব ফতোয়া গুলো দিয়েই অপপ্রচার চালাচ্ছে। এই ইন্টারনেটের যুগে সেই কাজটা তারা আরও সহজভাবে করতেছে এবং ক্ষেত্র বিশেষে তারা সাফল্যও পাচ্ছে।
কিছু উলামা, তাদের শাগরেদরা আর কিছু ইসলামপন্থী বুদ্ধিজীবী কথায় কথায় মানুষকে কাফের ফতোয়া দিয়ে দেয়। জাহান্নাম আর জান্নাতের টিকেট নিয়ে এরা ঘুরে বেড়ায়। এদের কথা শুনলে মনে হয়,
- যারা মদ, গাঁজা, নারী নিয়ে ফুর্তি করে আর সুদ-ঘুষ খাওয়ার পরও নিজেদের মুসলমান দাবী করে,
- যারা নামাজ-রোযার ধারেও নেই,
- যারা বছরে ১-২ বার মসজিদে এসে সারারাত নফল ইবাদত করে,
- বছরে একবার আখেরি মোনাজাতে শরীক হয়ে সারা বছরের গোনাহ পরিষ্কার করে,
- যারা বাচ্চা পাওয়ার জন্য ‘আজমীর শরীফে’ সফর করে,
- যারা রবিউল আউয়াল মাস আসলে বিরিয়ানি আর হালুয়া-রুটি খেয়ে রাসূল(সাঃ)-এর প্রতি চরম ভালবাসা প্রকাশ করে,
- যারা মাজারে মাজারে গিয়ে মোমবাতি জ্বালিয়ে, গরু-মহিষকে মাতাল করে, কবরে চুমু খেয়ে, সিজদা মেরে এবাদত করে,
- যারা পীরের দরবারে গিয়ে নজরানা দিয়ে তাবিজ-দোয়া নিয়ে আসে,
------------- শুধু তারাই বেহেশতে যাবে।
আর যারাঃ
- আল্লাহ্, তাঁর নবী-রাসুল, তাঁর ফেরেশতা, কবর আযাব, কেয়ামত দিবস, হাশরের শেষ বিচার, জান্নাত-জাহান্নাম, তকদীর বিশ্বাস করে,
- আল্লাহ্র সাথে কাউকে শরীক করে না,
- পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করে,
- রমযান মাসে ত্রিশ রোযা রাখে,
- পবিত্র কোরআন তেলায়াতে মশগুল থাকে,
- মানুষকে সৎপথে আহ্বান করে, খারাপ পথ আর অন্যায় কাজে বাঁধা দেয়,
- সময় পেলে কুরআন-হাদীসের দরস আর রাতে নফল ইবাদতের চেষ্টা করে
---------------- তারাই দোযখে চলে যাবে।
সত্যিই অবাক লাগে!
ভেবে বিস্মিত হই!!
আচ্ছা, ও বেহেস্তের ফেরিওয়ালারা, একটা প্রশ্নের জবাব দেন তো, আকিদার সার্টিফিকেট বিক্রি করার এই অধিকারটা আপনাদের কে দিয়েছে!!!
মাওলানা মউদুদী’র লেখা ‘রাসায়েল-মাসায়েল’ এবং ‘ইসলামের রেনেসাঁ আন্দোলন’ বই দুটি পড়ুন, অনেক প্রশ্নের জবাব পাবেন। মউদুদী’র ভুল ধরার জন্য পড়বেন না কিন্তু কিছু শিখার জন্য পড়বেন। ভয় পাবেন না!ডারউইন, কার্ল মার্ক্স, হেগেল, সেক্সপিয়ার, রবীন্দ্রনাথের বই পড়লে যখন কাফের হয়ে যান না, মউদুদীর’র বই পড়লেও কাফের হয়ে যাবেন না।
মউদুদী সাহেব বলেছেন, একমাত্র নবী ও রাসুল-গণ ছাড়া আর কেউ ভুলের ঊর্ধ্বে নন, কারণ নবী-রাসুল গণ সরাসরি আল্লাহ্র অহী দ্বারা পরিচালিত হতেন। সুতরাং সেই যুক্তি অনুসারে উনারও ভুল হতে পারে। তাই উনার যা ভুল আপনারা বর্জন করুন আর যা সঠিক বলে মনে হয় তা গ্রহণ করুন। অযথা মুসলমানদের মধ্যে ফেতনা আর বিভেদের বীজ রোপণ করবেন না, প্লিজ!!!
মউদুদী সাহেব কোন নবী নন, আমরা তাকে অন্ধ অনুসরণ করি না
“আপনারা হয়তো বুঝতে পারছেন না, বর্তমানে কারা হক পথে আছে। কিন্তু শয়তান ! সেতো সব কিছু জানে। সে এটাও জানে যে, কারা সৎপথে আছে আর কারা ভুল পথে। এবার ভাবুন তো, সেই ইবলিশ ও তার চ্যালারা কাদের বিরুদ্ধে লড়াই করবে ! কাদেরকে আল্লাহ’র দ্বীন কায়েমের পথে বাঁধা দেবে!! কাদেরকে এই দুনিয়া থেকে ধ্বংস করে দেওয়ার প্রচেষ্টা চালাবে!!!” বিশ্ব রাজনীতির অবস্থা একবার চোখ মেলে দেখুন, যদি সেই চোখ আল্লাহ্ পাক আপনাদের দিয়ে থাকে।
ভাই, দেশ আজ এক মহা সঙ্কটে। আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে আগে নাস্তিক, কাফের ও ইসলামের শত্রুদের প্রতিরোধ করি। এই দেশে আল্লাহ’র আইন চালু করতে চেষ্টা করি।
আর আমাদের মধ্যে কারা ১০০% খাঁটি, কারা ৫০% খাঁটি আর কারা পুরোপুরি ভেজাল—সেটা নাহয় কেয়ামত দিবসের জন্য রেখে দিই, কি বলেন! সেদিনই সব ফয়সালা হয়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ্।
মুমিন বাতিলের বিরুদ্ধে কথা বলতে যুদ্ধু করতে ফেত্নাকে ভয় করেন না। . আল্লাহ বুঝার তাব্ফিক দান করন
উত্তরমুছুন