গতকাল সন্ধ্যায় বাসায় বসে বসে বিভিন্ন চ্যানেলের খবর , টকশো দেখছিলাম । আমার রুমমেট কখনো রাজনীতি নিয়ে তেমন আগ্রহী নয় , কিন্তু নিয়মিত খবর টকশো ঠিকই দেখে থাকে । কখনো কোন মন্তব্যও করেন না ।
তবে গতকাল ঘটে গেলো এক অন্যরকম ঘটনা ! সে হঠাৎ একটা মন্তব্য করে বসলো । আমি তো অবাক !
আর মন্তব্যটাও এমন যে এড়িয়ে যাওয়ার সাধ্য নেই কারো ।
সে বলছে , দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে প্রধান বিরোধীদল বিএনপি যেইভাবে নিস্ক্রিয় ভুমিকা পালন করছে তাতে আগামী নির্বাচনে বিএনপি না জামানত হারিয়েও বসতে পারে !?
আমি কয়েক সেকেন্ডের জন্য নিস্তন্ধ হয়ে গেলাম ! কি বলছে এই সব ?
কি ভাই আপনার মাথা ঠিক আছে তো ? কি বলছেন পাগলের মতো ? আওয়ামী লীগের অত্যাচারে দেশের মানুষ অবশ্যই বিএনপিকে ভোট দেবে এবং আগামীবার ১৮ দলীয় জোট ক্ষমতায় আসবে বলে আমি তাঁকে আস্বস্থ করতে চাইলাম ।
কিন্তু সে বলল , বর্তমান বিএনপির যেই অবস্থা তাতে ওরা যদি নির্বাচনে জিতেও যায় ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবে না ।
জনগন বুঝতে পারছে যে বিএনপির আগের অবস্থান নেই । বিএনপির উপর এখন আর ভরসা করার কিছু দেখছি না !? বিএনপি মনে হয় আর ঘুরে দড়াতে পারবে না
কারন আওয়ামী লীগের প্রশাসন এবং দলীয় শৃঙ্খলতা !
আওয়ামী লীগের সাধারন কর্মী থেকে শুরু করে মন্ত্রী পর্যন্ত সবাই এক, মানে দলীয় অবস্থানে এক কথায় রয়েছে ।
চোর তো সবাই চোর !
আর ডাকাত হলে সবাই ডাকাত !
একজন চুরি করলে অন্যরা সবাই সেটাকে কি করে দামাচাপা দেয়া যায় এবং কি করে চোরকে প্রতিস্ঠা করা যায় ,
কি করে সন্ত্রাসী হলেও দলের কর্মীকে কর্মীর মর্যাদা দেয়া যায় এবং প্রয়োজনে পুলিশকে ব্যাবহার করে হলেও দলের মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখা যায় , সেটাই সবার চেষ্টা থাকে !
আওয়ামী লীগ সন্ত্রাস করলে সেটা জনগনের প্রতিরোধ আর জনগন করলেও সেটা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড! নেত্রী বলেছে ১০ টাকা চাল খাওয়াবে , ওকে বলেছে , না না নেত্রী এই কথা বলেনি । হ্যাঁ নেত্রী এই কথা বলেনি । অর্থাৎ দলের চেইন অব কমান্ড ১০০% ।
যেমন ?
সুরঞ্জিত , আবুল , মুহিত , ডঃ ইকবাল , হাজারী , সাঃ ওসমান সহ অনেকে !
আর বিএনপিকে দেখুন , কোথায় ফখরুল , কোথায় মওদুদ ? সবাই নিজের ইমেজ নিয়ে ব্যাস্ত !?
তারেক জিয়া তো অলরেডি ঘোষণাই দিয়ে দিলেন যে, আমরা অতীতের সব ভুলে যাবো । সবাই মিলে মিশে কাজ করবো !
এই পাচ বছর যেই নেতা গুলি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাঁদের কে কি তিনি জিজ্ঞেস করেছেন ?
২০০৫ এ বিএনপি ক্ষমতায় ----- আমার গ্রামের একটা বিএনপি কর্মী ছাত্রলীগের এক কর্মীকে পূর্বের পাওনা বুঝিয়ে দিচ্ছিল ! মানে প্রতিশোধ নিতে গিয়ে তাঁকে পেটালো ।
বিএনপির এমপি সাহেবের কাছে খবর গেলো .........।
ব্যাস , বিএনপি এর এমপি সাহেব নিজে জেলা প্রশাসককে নিয়ে এসে বিএনপির ঐ কর্মীকে ধরিয়ে দিলেন এবং এমপির সাক্ষীতে যার সাজা হয় ৭ বছরের জেল ।
পরে দেখলাম আওয়ামীলীগই জামানত নিয়ে সেই বিএনপি কর্মীর জামিন নেন । এবং সেই ছেলেটি আজ চাপাতি লীগের নেতৃত্ব দিচ্ছে এবং বলছে আমার সকল সমস্যার সমাধান আমার বড়ভাইরা ।
কে ক্ষমতায় তা আমাদের দেখার বিষয় না , আওয়ামীলীগ সরকারে হোক অথবা বিরোধী দলেই থাকুক , আমাদের জন্য বড়ভাইরা সবসময় একপায়ে খাড়া । বিএনপি দলের নেত্রীর জন্যও কেউ এক পায়ে খাড়া হতে রাজী নয় , কর্মী তো দূরের কথা ।
কোন মন্তব্য নেই:
/>