*¤* বোকামীরও একটা সীমা থাকা উচিত !!!!!! ¤*¤ একজন নারী। ঠিক নারী বললে ভুল হবে, সে তো পুরুষের সমান হতে চায়।
তিনি আরো বলেন,
তোমাদের মধ্যে সে-ই সর্বোত্তম যে তার স্ত্রীর কাছে তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম। [তিরমিযী, মানাকেব অধ্যায়]
এ হাদীসে স্ত্রীর সঙ্গে সদ্ব্যবহারকে পুরুষের চারিত্রিক
মর্যাদার মাপকাঠি নির্ধারণ করা হয়েছে। সুতরাং এখন
পুরুষরা কি এই বলে মাঠে নামবে যে, পুরুষের
বিপক্ষে বর্ণবৈষম্যকে প্রশ্রয় দিয়েছে-ইসলাম?
হে জগতবাসিনী কন্যাগণ, মনে করে দেখুন রোমান স্যভতায় আপনি ছিলেন প্রাণহীন বস্তু। খুঁটির সাথে বেঁধে শরীরে গরম ও
ফুটন্ত তেল ঢেলে মর্মান্তিক শাস্তি দেওয়া হত। ইউনানিদের
নিকট ছিলেন বেচাকেনার সামগ্রী।
ইহুদীদের নিকট ছিলেন এক অভিশপ্ত প্রাণী, অপবিত্র-অশুচী।
ভাল জিনিসে তো দূরের কথা, খারাপ জিনিসেও আপনাদের অধিকার
সমান-সমান ছিল না। যদি তোমার কন্যা অবাধ্য হয় তাহলে সতর্ক থেক সে তোমার
শত্রুদেরকে হাসাবে এবং সে এলাকাবাসীর গল্পের উপভোগ্য
হয়ে তোমার জন্য অপমান ডেকে আনবে। [এক্সিলেসিয়াস্টিকাস
৪২/১১]
খ্রিস্টানদের নিকট আপনি ছিলেন- সাক্ষাত শয়তান, পাপের
পিণ্ড। এমন কোন পাপ নেই যাকে নারীর পাপের সাথে তুলনা করা যায়।
প্রত্যেক পাপের পিছনে আছে কোন না কোন মহিলা আর মহিলাদের
কারণেই আমরা সবাই মরে যাব। [এক্সিলেসিয়াস্টিকাসঃ ২৫/১৯,
২৪]
তিমথির কাছে প্রথম পত্র ২-১১:১২,
নারী সম্পূর্ণরূপে অনুগতা হয়ে নীরব থেকেই ধর্মশিক্ষা গ্রহণ করুক। নারীরা শিক্ষা দিতে পারবে না, উপদেশ দেবার
বা পুরুষের উপরে কর্তৃত্ব করার অনুমতি আমি নারীকে দিই না;
তার নীবর থাকা উচিত।
লেবীয় পুস্তক ১২ এর ২ এবং ৫ গদে বলা হলোঃ ২ তুমি ইস্রায়েল
সন্তানদের বল, যে স্ত্রীলোক গর্ভধারণ করে ছেলে প্রসব করে,
সে সাত দিন অশুচি থাকবে, যেমন ঋতুজনিত অশুচিতা-কালে, তেমনি সে অশুচি থাকেব।
৫ যদি সে মেয়ে প্রসব করে, তেব যেমন অশুচি-কালে, তেমনি দুই
সপ্তাহ অশুচি থাকেব; পরে সে তার রক্তস্রাব শুচীকরণের জন্য
ছেষট্টি দিন অপেক্ষ করবে। এখানেও কন্যাসন্তানদের অপবিত্র-
অশুচী বলা হলো।
১৫৬৭ সালে স্কটল্যান্ড পার্লামেন্টেরএ আইন প্রণয়ন হয় যে, নারীদেরকে কোন কিছুর উপর আধিপত্য দেওয়া বৈধ নয়। অনুরূপ
ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সপ্তম হেনরির যুগে নারীদের জন্য ইঞ্জিল
পাঠ নিষিদ্ধ করে দেয়। কারণ তারা অপবিত্র।নারীরা মানুষ
কিনা এ ব্যাপারে পর্যবেক্ষণের জন্য ১৫৮৯ খ্রীষ্টাব্দেফ্র
ান্সের একটি কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয় এবং তাতে এটাই
স্বীকৃতি পায় যে, নারীরা মানুষ, তবে তাদেরকে পুরুষের সেবার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। ব্রিটিশ
আইনানুযায়ী ১৮০৫খ্রীঃ পর্যন্ত স্বামীর জন্য বউকে বিক্রয়
করা অনুমদিত ছিল। ছয় পেনই পর্যন্ত তার মূল্য নির্ধারিত ছিল।
হিন্দুদের নিকট ছিলেন- মিথ্যাচারিণী-পাপিষ্ঠ-উগ্র-রাগিণী-
সতীদাহের জ্বলন্ত লাকড়ি।
হে নারদ, (জগতে) নারীর মত পাপী (পাপিষ্ঠ) কিছুই নাই।বস্তুত, সকলদোষের (পাপের) মূল নারী। [সূত্রঃ মহাভরতের অশ্বমেধ
পর্ব্ব, লেখক- কিশরী মহোন গাঙ্গুলী, অনুচ্ছেদ-XXXVIII (৩৮)]
নারীজন্ম স্বভাবতই অপবিত্র, কিন্তু পতির
সেবা করে সে অনায়াসেই শুভগতি লাভ করে।
[সূত্রঃ শ্রীরামচরিতমানস, তুলসীদাস বিরচিত, অরণ্যকান্ড,
পৃষ্ঠা নং-৫৭২] নিঃসন্তান স্ত্রীকে বিয়ের আট বছর পর ত্যাগ করা যায়, মৃত
সন্তানের জন্মদানকারী স্ত্রীকে ত্যাগ করা যায় দশ বছর পরে,
যে স্ত্রী শুধুমাত্র কন্যা সন্তান জন্ম দেয় তাকে ত্যাগ করা যায়
এগারো বছর পরে, ঝগড়া পরায়ন স্ত্রীকে ত্যাগ করতে বিলম্ব
করা যাবে না। [সূত্রঃ মনুসংহিতা- অধ্যায়-৯, শ্লোক- ৮১, পৃষ্ঠা-
২৫৭, অনুবাদ- সুরেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়] কন্যাজন্মদানকে নিরুসাহিত করে পুত্র উৎপাদনে উৎসাহ
প্রদানের নিমিত্তে হিন্দু আইন বইয়ে পাওয়া যায়-
পুত্রহীনদের স্বর্গে কোনো স্থান নেই। [সূত্রঃ হিন্দু
আইনঃ শ্রীদীনেশ চন্দ্র দেবনাথ, পঞ্চম অধ্যায়ঃ দত্তক,
পৃষ্ঠাঃ ৩৭ এবং মহাভারতের আদি পর্ব]
জাহেলীয়াতের যুগে আবরের মরুতে ছিলেন জীবন্ত লাশ, পুঁতে ফেলা হতো বালুর আস্তরণের ভিতর। তাদের এই নিকৃষ্টতম
কর্মের হুশিয়ারী দিয়ে আল্লাহ তা'য়ালা এরশাদ ফরমালেন,
যখন কেউ তাদের কন্যা সন্তানের সু সংবাদ দেয় তখন তার মুখ
কাল হয়ে যায় এবং অসহ্য মনস্তাপে ক্লিষ্ট হতে থাকে।
তাকে শোনানো সু সংবাদের দুঃখে সে লোকদের কাছ
থেকে মুখলুকিয়ে রাখে।সে ভাবে অপমান সহ্য করে কন্যাকে রাখবে না তাকে মাটিতে পুতে ফেলবে। সাবধান!
তাদের ফয়সালা কতই না নিকৃষ্ট। [সুরা নাহল ৫৮]
যখন জীবন্ত প্রোথিত কন্যাকে জিজ্ঞাসিত হবে।
কি অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছে? [সুরা তাকভীর ৮, ৯]
স্রষ্টার এই হুশিয়ারী সমাজে বাস্তবায়নের জন্য
মরুনিবাসী মুহাম্মদ (সাঃ) দাসীদের দাসত্বের নিযুক্ত না করে আপন স্ত্রীর মর্যাদায়ভূষিত করলেন, নারীকে মর্যাদার
আসনে উন্নীত করলেন আর কন্যাসন্তান সাথে সু-ব্যবহার করার
নির্দেশ দিয়ে বললেন,
তোমাদের যে কারও যদি তিনজন কন্যা বা বোন থাকে আর
সে তাদের সুন্দরমত দেখাশুনা করে,
তবে সে অবশ্যইজান্নাতে প্রবেশ করবে। [তিরমিযী, সদাচার ও সুসম্পর্ক অধ্যায়]
আমি যদি কাউকে কারও উপর প্রাধান্য দিতাম,
তাহলে কন্যাসন্তানকে প্রাধান্য দিতাম পুত্রসন্তানের উপর।
যে ব্যক্তি তিন মেয়ে বা বোন অথবা দুই মেয়ের বা বোনকে লালন-
পালন করে এবং তাদের সাথে নম্র ব্যবহার করে আল্লাহ
তাকে জান্নাত দেবেন। যে ব্যক্তি কণ্যাসন্তানকে বয়ঃপ্রাপ্ত হওয়া পর্যন্ত লালন-পালন
করল সে কেয়ামতের দিন এই অবস্থায় উপস্তিত হবে যে, আমি ও
সে এরুপ একত্রে থাকব।বর্ণনাকারী বলেন, তিনি তাঁর
আঙুলগুলো মিলিয়ে দেখালেন। (মুসলিম)
যে ব্যক্তি কন্যাসন্তানদের সঙ্গে সুন্দর ব্যবহার
করবে তারা তার জন্য জাহান্নামের অগ্নি থেকে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে। (বুখারি, মুসলিম)
আপনারা, পশ্চিমা সংস্কৃতির নামে যা আবদার করছেন,
তা তো নিজেদের জন্য নয় বরং পুরুষেরই জন্য। নিজেকে উন্মুক্ত
করাতেই যদি আপনাদের সমান-সমান অধিকার আদায় হয়ে যায়,
তবে আপনাদের উদাহরণ খোসাহীন কলার মতই রয়ে যাবে। যার
মূল্য বেড়ে যাওয়ার চাইতে মূল্যহীন হওয়ার আশঙ্খাই বাড়তে থাকবে। ইসলাম একজন মাতাকে (নারী) পিতার (পুরুষ)
চেয়ে অধিক হক দিয়েছে, চাকুরীজীবি মায়েদের জন্য বার্ষিক
ছুটির অতিরিক্ত প্রসবকালীন ছুটি হাদীসে বর্ণিত নিফাসের
মেয়াদ অনুযায়ী কমপক্ষে পঁয়তাল্লিশ দিন দেয়া হয়ে থাকে।
তেমনি পবিত্র কোরআনে উল্লেখিত মেয়াদ
অনুযায়ী স্বামী মারা গেলে বার্ষিক ছুটির অতিরিক্ত প্রায় একশ দিনের বিশেষ ছুটি দেয়া হয়ে থাকে। অথচ পুরুষের জন্য এরুপ
কোনো ছুটির ব্যবস্থা নেই। একইভাবে ইসলামে নারীদের জন্য
সোনা ও রেশমী কাপড় পরিধানে অনুমতি দিলেও তা পুরুষের
জন্যদেওয়া হয়নি। তাছাড়াও, নারীদের জন্যমাসে এক সপ্তাহ
বা বছরে এক মাস সালাত মাফ করা হয়েছে, যা পুরুষের জন্য
করা হয়নি, এমকি যুদ্ধরত অবস্থায়ও পুরুষের জন্য ছাড় দেওয়া হয়নি।পুরুষের জন্য যৌতুককে হারাম করে নারীর জন্য
মহরানাকে বাধ্যতামূল করা হয়েছে।
তবে কেন ধর্মের কাছে সমান-সমান অধিকার চেয়ে নিজের
অধিকারকে টেনেহিঁচড়ে নিচে নামিয়ে দিচ্ছেন? আপনাদের
তো সমান অধিকারের চেয়েও বেশি দেওয়া হয়েছে।আর যদি এ
অধিকার রাষ্ট্রের কাছে চান; তবে সেটা আপনাদের প্রাপ্য হকবটে; রাষ্ট্র যে এখনও আপনাদের সমান অধিকার
দিতে পারেনি। কারণ, তা ইসলামি রাষ্ট্র নয়- ধর্মনিরপেক্ষ।
ধর্ম নিরপেক্ষ এই দেশগুলীর আপন আপন ধর্ম-ই উক্ত ধর্মের
ধর্মাম্বলীদের মধ্যে সমান-সমান অধিকার স্থাপনে সক্ষম নয়-
নাহ্, রাষ্ঠ্রীয়ভাবে, নাহ্, ধর্মীয়ভাবে! শ্রুতি-সংহিতা (আইনের
সনাতন গ্রন্থ) গুলো খুলে দেখুন- নারী তে দূরের কথা পুরুষেরও অধিকার নাই।
নাস্তি স্ত্রী নাং ক্রিয়া মন্ত্রৈদিতি ধর্মে ব্যবস্থিতি।
নিবিন্দ্রিয় হামন্ত্রাশ্চ স্ত্রিয়োহ নৃতমিতি স্থিতিঃ \১৮\
অর্থঃ মাস্ত্রোক্ত বিধি অনুসারে নারীদের মন্ত্রে কোন অধিকার
নাই, স্মৃতি ও ধর্ম শাস্ত্রে ইহাদের অধিকার নাই, এই জন্য
ইহারা নিতান্ত হীন ও অপাদার্থ। [সূত্রঃ মনুসংহিতা- ৯ম অধ্যায়, পৃষ্ঠাঃ২৫০, শ্লোক-১৮, মূল সংস্কৃত-মনু, অনুবাদ
সুরেশচন্দ্রবন্দ্যোপাধ্যায়]
অবনিষ্ঠীবতো দর্পাদ্বাবোষ্ঠৌ চ্ছেদয়েন্নপঃ
অবমূত্রয়তো মেঢ়মবশর্ধয়তো গুদম্ ॥২৮২॥
অর্থঃ দর্পভরে (শূদ্র) ব্রাহ্মণের গায়ে শ্লেষ্মা (থুথু)
দিলে রাজা তার ওষ্ঠদ্বয় ছেদন করাবেন,মূত্র নিক্ষেপ করলে লিঙ্গ চ্ছেদন, অধোবায়ু ত্যাগ করলে গুহ্যদেশ ছেদন
করাবেন। (মনুসংহিতা- ৮ম অধ্যায়, পৃষ্ঠাঃ ২৩১, শ্লোক-২৮২, মূল
সংস্কৃত-মনু, অনুবাদ সুরেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়)
কেশেষু গৃহ্নতো হস্তৌ চ্ছেদয়েদবিচারয়ন্।
পাদয়োর্দাঢ়িকায়াঞ্চ গ্রীবায়াং বৃষণেষু চ ॥২৮৩॥
অর্থঃ হিংসাবশে (শূদ্র) ব্রাহ্মণের চুলে, চিবুকে, পায়ে, দাড়িতে, ঘাড়ে বা অন্ডকোষে হাত দিলে নির্বিচারে তার হাত
দুটি কাটিয়ে দিবেন। (মনুসংহিতা- ৮ম অধ্যায়, পৃষ্ঠাঃ ২৩১,
শ্লোক-২৮৩, মূল সংস্কৃত-মনু, অনুবাদ সুরেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়)
একটি অনুরোধ, অধিকারের আদিখ্যেতা রচনাকরতে গিয়ে আপন
অধিকারকে সংকুচিত করে ফেলবেন না। মিসরের জাতীয়
ফতোয়া বোর্ড প্রচারিত এক ফতোয়ায় মিরাছের সম্পদ পাওয়ার ক্ষেত্রে নারী-পুরুষেরতুলনামূলক পর্যালোচনা তুলে ধরা হয়েছে।
তাতে যে তথ্য এসেছে তার মাধ্যমে অনেকের চোখ
খুলে যেতে পারে, বিবেক পেতে পারে নতুন খোরাক। ঐ
পরিসংখ্যানে নারী কখন পুরুষের অর্ধেক পায়, আর কখন সমান
পায়, আর কখন বেশি পায় তার বর্ণনা এসেছে অত্যন্ত
পরিস্কারভাবে।লক্ষ্য করুন: নারী কেবল চার অবস্থায় পুরুষের অর্ধেক পায়:
১. মেয়ে ও নাতনি (ছেলের মেয়ে) ছেলে ও নাতি (ছেলের ছেলে)
থাকা অবস্থায়।
২. ছেলে সন্তান ও স্বামী বা স্ত্রী না থাকলে 'মা' পিতার
অর্ধেক পায়।
৩. 'সহোদর বোন' সহোদর ভাইয়ের সাথে ওয়ারিস হলে। ৪. 'বৈমাত্রেয় বোন' বৈমাত্রেয় ভাইয়ের সঙ্গে ওয়ারিস হলে।
সে পুরুষ হোক বা নারী হোক,, যদি সে মুমিন হয়, তাহলে এমন
লোকেরাই জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের বিন্দু পরিমাণ
হকও নষ্ট করা হবে না। [সূরা আন নিসা ১২৪]
তারা হচ্ছে তোমাদের জন্য পোশাকস্বরুপ এবং তোমরাও তাদের
জন্য পোশাকস্বরূপ। [সূরা আল বাকারা ১৮৭] মেয়েদেরও তেমনি ন্যায়সঙ্গত অধিকার আছে, যেমন তাদের উপর
পুরুষদের অধিকার আছে। [সূরা আল বাকারা ২২৮]
নিশ্চয় মুসলিম পুরুষ ও নারী, মুমিন পুরুষ ও নারী, অনুগত পুরুষও
নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও নারী, ধৈর্যশীল পুরুষ ও নারী,
বিনয়াবনত পুরুষ ও নারী, দানশীল পুরুষ ও নারী,
সিয়ামপালনকারী পুরুষ ও নারী, নিজদের লজ্জাস্থানের হিফাযতকারী পুরুষ ও নারী, আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও
নারী, তাদের জন্য আল্লাহ মাগফিরাত ও মহান প্রতিদান প্রস্তুত
রেখেছেন। [সূরা আল-আহযাব ৩৫]
১০ অবস্থায় নারী পুরুষের সমান পায়:
১. পিতা-মাতার সমান অংশ পাবে ছেলের ছেলে থাকলে।
২. বৈপিত্রেয় ভাই-বোন সব সময় সমান অংশ পায়। ৩. বৈমাত্রেয় ভাই-বোন থাকলে সব ধরনের বোন (সহোদর,
বৈপিত্রেয় ও বৈমাত্রেয়) বৈপিত্রেয় ভাইয়ের সমান অংশ পাবে।
৪. শুধু ঔরসজাত মেয়ে ও মৃতের ভাই একসঙ্গে থাকলে উভয়ে সমান
অংশ পাবে (মেয়ে পাবে অর্ধেক আর বাকি অংশ পাবে চাচা)।
৫. 'নানী' বাবা ও ছেলের ছেলের সাথে সমান অংশ পায়।
৬. মা ও বৈপিত্রেয় দুই বোন স্বামী ও সহোদর ভাইয়ের সাথে সমান অংশ পায়।
৭. 'সহোদর বোন' স্বামীর সাথে ওয়ারিস হলে সহোদর ভাইয়ের
সমান অংশ পাবে। অর্থাৎ সহোদর বোনের পরিবর্তে সহোদর ভাই
হলে যে অংশ পেত ঠিক সহোদর বোনও একই অংশ পাবে।অর্থাৎ মূল
সম্পদের অর্ধেক পাবে।
৮. বৈমাত্রেয় বোন সহোদর ভাইয়ের সমান অংশ পায় যদি মৃত ব্যক্তির স্বামী, মা, বৈপিত্রেয় এক বোন এবং সহোদর এক ভাই
থাকে।এ অবস্থায় স্বামী মূল সম্পদের অর্ধেক, মা এক ষষ্ঠাংশ,
বৈপিত্রেয় ভাইএক ষষ্ঠাংশ এবং অবশিষ্ট এক ষষ্ঠাংশ
পাবে সহোদর ভাই।
৯. নির্দিষ্ট অংশধারী ওয়ারিস এবং আসাবা সূত্রে পাওয়ার মত
কেউ না থাকলে নিকটতম রক্তসম্পর্কীয় আত্মীয়রা সমান অংশ পাবে।যেমন মেয়ের ছেলে, মেয়ের মেয়ে, মামা ও
খালা ছাড়া অন্য কোন ওয়ারিস না থাকলে এদের সবাই সমান অংশ
পাবে।
১০. তিন প্রকারের মহিলা এবং তিন প্রকারের পুরম্নষ কখনও
সম্পূর্ণরূপে বঞ্চিত হয় না।এক্ষেত্রেও নারী পুরুষ সমান অধিকার
ভোগ করছে। অনেক ক্ষেত্র নারী পুরুষের চেয়ে বেশিপায়। যেমন,
১. স্বামী থাকা অবস্থায় একমাত্র কন্যা পাবে অর্ধেক আর
স্বামী পাবে এক চতুর্থাংশ।
২. দুই কন্যা স্বামীর সাথে হলে।দুই মেয়ে পাবে দুই তৃতীয়াংশ আর
স্বামী এক চতুর্থাংশ।
৩. কন্যা মৃতের একাধিক ভাইয়ের সাথে হলে বেশি পাবে। ৪. যদি মৃত ব্যক্তি স্বামী, বাবা, মা ও দুই কন্যা রেখে যায়
তবে দুই মেয়ে দুইতৃতীয়াংশ সম্পদ পাবে। কিন্তু ঠিক একইঅবস্থায়
যদি মেয়ের পরিবর্তে দুই ছেলে থাকত তবে তারা নিশ্চিত
ভাবে দুই মেয়ের তুলনায় কম পেত।কেননা, ছেলের অংশ
এখানে অন্য ওয়ারিসদের নির্ধারিত অংশ দেওয়ার পর
যা অবশিষ্ট থাকে।সুতরাং স্বামী পাবে এক চতুর্থাংশ, বাবা ও মা উভয়ে পাবে এক ষষ্ঠাংশ করে এবং বাকী অংশ পাবে দুই
ছেলে যা দুই তৃতীয়াংশ তো নয়ই বরং অর্ধেকের চেয়েও কম।
৫. ঠিক একই ধরনের অবস্থা দুই সহোদর বোনের ক্ষেত্রেও।
যদি ওয়ারিসদের মধ্যে স্বামী, দুই সহোদর বোন
এবং মা থাকে তখন দুই বোন দুই তৃতীয়াংশ সম্পদ পায়।কিন্তু ঠিক
একই অবস্থায় যদি দুইবোনের জায়গায় দুই ভাই থাকত তখন ঐ দুইভাই মিলে এক তৃতীয়াংশের বেশি পেত না।
৬. তেমনিভাবে একই অবস্থায় বৈমাত্রেয়দুই বোন বৈমাত্রেয় দুই
ভাইয়ের চেয়েবেশি পায়।
৭. অনুরূপভাবে যদি ওয়ারিসদের মধ্যে স্বামী, বাবা, মা ও
মেয়ে থাকে তবে মেয়ে মূল সম্পদের অর্ধেক পাবে। কিন্তু ঠিক
একই অবস্থায় ছেলে থাকলে পেত তার চেয়ে কম। যেহেতু তার প্রাপ্য অংশ হলো অংশীদারদের দেওয়ার পর অবশিষ্টাংশ।
৮. ওয়ারিস যদি হয় স্বামী, মা ও এক সহোদর বোন তখন ঐ সহোদর
বোন অর্ধেক সম্পদ পাবে যা তার স্থানে সহোদর ভাই হলে পেত
না।
৯. ওয়ারিস যদি হয় স্ত্রী, মা, বৈপিত্রেয় দুই বোন এবং দুই
সহোদর ভাই তখন দূরের আত্মীয় হওয়া সত্ত্বেও বৈপিত্রেয় দুই বোন দুই সহোদরের চেয়েবেশি পাবে।যেহেতু বৈপিত্রেয় বোনদ্বয়
পাবে এক তৃতীয়াংশ, আর দুই সহোদর পাবে অবশিষ্টাংশ যা এক
তৃতীয়াংশের চেয়েও কম।
১০. যদি স্বামী, বৈপিত্রেয় বোন ও দুই সহোদর ভাই
থাকে সেক্ষেত্রে বৈপিত্রেয় বোন এক তৃতীয়াংশ পাবে। অথচ এই
দুই সহোদর অবশিষ্টাংশ থেকে যা পাবে তা ঐ বোনের এক চতুর্থাংশেরও কম।
১১. ওয়ারিস যদি হয় বাবা, মা ও
স্বামী _এক্ষেত্রে ইবনে আব্বাস (রা.)-এর
মতানুসারে মা পাবে এক তৃতীয়াংশ, আর বাবা পাবে এক ষষ্ঠাংশ
অর্থাৎ মায়ের অর্ধেক।
১২. স্বামী, মা, বৈপিত্রেয় বোন ও দুই সহোদর ভাই ওয়ারিস হলে এক্ষেত্রে ঐ বোন দূর সম্পর্কীয় আত্মীয় হওয়া সত্ত্বেও
সহোদর ভাইদ্বয়ের দ্বিগুণ পাবে।
একজন নারী। ঠিক নারী বললে ভুল হবে, সে তো পুরুষের সমান
হতে চায়। তবে তাকে পুরুষ বললে অসুবিধে কোথায়? চিৎকার
দিয়ে উঠলো – আমরা কেন বাস থেকে নেমে রাস্তার
পাশে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পুরুষের মতো তলপেটের চাপ নির্গত করতে পারব না? বস্তুত, এটা ছিল তার সমান-সমান অধিকারের শ্লোগান।
আর অমনি জগতের সকল নারীরা জেগে উঠলো; যেন
কোনদিনই তারা আর ঘুমাবে না। নিজ নিজ মাতার
নামে দিব্যি কেটে, পিতার পশ্চাত্যে, পরস্পরের পুত্রের পিছনে,
স্ব-স্ব স্বামীর সামনে ঝান্ডা হাতে দাঁড়িয়ে গেল।
সাথে সাথে বহির্বিশ্বের হকাররাও পেয়ে গেল বাড়তি সুবিধা। মানবতা লঙ্ঘন করা যাবেনা- উদ্ধৃতি দিয়ে রাস্তায়
নেমে এলো মানবতার ঠিকাদার! মিড়িয়ার মুখে মুখেসেই একই
বাণী- একই শ্লোগাণ- এ যেন নারী অধিকারের ফেরিওয়ালা!
সম্প্রতি উগান্ডায় ঘটে যাওয়া একটি ঘটনার বিবৃতি না টানলেই
নয়; যদিও ওটা সমান-সমান অধিকারের লড়াই নয়-
সমকামীতা বৈধ করার লড়াই।এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কতিপয় প্রাণহানী ঘটলেও- তা বিশ্ব-মিড়িয়ার
কাছে উল্লেখযোগ্যবলে গণ্য হয়নি।এর চাইতেও বিস্ময়ের
ব্যাপার হলো যে- উগান্ডার পত্র-পত্রিকায়
ঘটনাটি যতটা না স্থান পেয়েছে, তার চেয়েও
জোরালোভাবে স্থানপেয়েছে জোর করে মাতবরের
দায়িত্বে থাকা প্রধান দু'টি দেশের পত্র-পত্রিকায়। তা না হলে সমকামীর অধিকার রক্ষা হবে কী করে! হত্যার জন্য
নয়- প্রাণহানীর জন্য নয় বরং তাদের এইজোড়ালো প্রতিবাদ-
কেন সমকামিতা বৈধ করা হচ্ছে না উগান্ডায়? বৈধ্যতা দিন-
একটা প্রাণও পড়বে না। বাহ! বাহ! এর চাইতে উত্তম আবদার আর
কি হতে পারে? যা বলছিলাম, যিনি সমান-সমান অধিকারের
হম্বিতম্বি করছেন; তার কথার ফিরে আসি। আচ্ছা বলুন তো, আপনার ঘরের যুবতী কন্যাঅথবা আপনার স্ত্রী অথবা আপনার
প্রিয় বোনের জন্য কেউ কি এমন অধিকার চেয়ে বসবেন?
নারী তো দূরে থাক, সুস্থ বিবেকের কোন পুরুষেরও নিশ্চয়ই নিজের
জন্য এমন অধিকার চেয়ে বসবেন না। কারণ,বাস
থেকে নেমে রাস্তায় দাঁড়িয়ে মূত্রথলির
স্বাধীনতা দেখিয়ে পরিবেশ নষ্ট করার অধিকার কতটা গ্রহণযোগ্য হতেপারে?
আপনারা (উক্ত নারী) সমান-সমান অধিকারের জন্য কার
কাছে আবদার করছেন? সমাজের কাছে, রাষ্ট্রের কাছে না ধর্মের
কাছে? যদি বলেন, ধর্মের কাছে। তবে, বলতে বাধ্য হব? আপন
আপন ধর্মের কাছে অধিকার আদায়ের দাবি করে বোধ হয় সবাই
সঠিকভাবে তা নাও পেতে পারেন (বিস্তারিত জানতে পড়ুন ‘পর ধর্মের নারী’)। কারণ, এ দেশের অধিকাংশ জনগোষ্ঠীর পালিত
ধর্ম নারীকে সমান অধিকার দেয়নি; বরং দিয়েছে পুরুষের
চেয়ে বেশি। নারী যে আপনারই অংশ; সেটা যেন অস্বীকার
না করতে পারেন। আপনার নিজের প্রতি যতটা অধিকার ঠিক
ততটাই অধিকার তার প্রতিও। কারণ, সেটা তো আপনারই অংশ,
ভিন্ন কিছু নয়। আপনি যাকেনারী বা পুরুষ অধিকার নামে ভাগ করছেন মূলত সেটা একই অধিকার।আপনার নিজের অধিকার।
নারীর জন্যও যা; পুরুষের জন্যও তা-ই। কিন্তু
সমাজে এটা পরিলক্ষিত হয় না। দু'জন মেয়ের সমান একজন ছেলে।
এটা কি সম-অধিকার হলো? আচ্ছা বলুন তো, ছেলে কার
সম্পত্তি পায়? নিশ্চয়ই বাবার। দু'জন মেয়ে যা পায় একজন
ছেলে একাই তাই পায়। বেশ, মেয়ে পায় অর্ধেক। কিন্তু, মেয়ে আরও তিন-চার জায়গা থেকেসম্পত্তির অংশ পায়
যা ছেলেরা পায় না। প্রথমত, একজন মেয়ে তার বাবার থেকেপায়,
তার মায়ের অংশ পায়, স্বামীর অংশ পায়, পায় ছেলেরও অংশ। আর
মোহরানাতো মেয়ের এমন হক যা ছেলে দিতে বাধ্য থাকে (আর
এটা দেওয়ার নিয়ম বাসরের আগেই)।
আর তোমরা স্ত্রীদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দাও খুশীমনে। তারা যদি খুশী হয়ে তা থেকে অংশ ছেড়ে দেয়,
তবেতা তোমরা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ কর। [সুরা নিসা, আয়াত-৪]
ছেলেরা কিন্তু তার স্ত্রীর অংশ থেকে কিছুই পায় না; দাবিও
করতে পারবে না। স্বামীর দায়িত্ব থাকে তাদের ভরণ-পোষণের।
তা সে নারী নিজে ধন-সম্পদের মালিক হোক বা না হোক। কিন্তু,
মেয়েদের দায়িত্ব নয় পুরুষের ভরণ-পোষণ আপন ঘাড়ে তুলে নেওয়া। বস্তুত, এ পর্যায়ে পুরুষেরই অধিকার সমান-
সমান দেওয়া হয়নি। পুরুষকে করা হয়েছে নারীর সার্ভেন্ট-মাত্র। আর যদি বাতুলতার আশ্রয় নিয়ে বলেন, পর্দার কথা।
তবে তো বলতেই হয়, সেটাও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে পুরুষের জন্য
আগে। পুরুষদের নজরকেই কঠোরভাবে নত করতে বলা হয়েছে,
নারীর জন্য পর্দার বিধান দেওয়ারও আগে। [হে নবী] আপনি মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত
রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গ হেফাযত করে। এটাই তাদের জন্য ভাল
পথ।নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ সে সম্পর্কে অবহিত আছেন।
[তথ্য সূত্র: কোরআন ২৪:৩০ / সূরা- নূর: আয়াত ৩০]
এবার আসুন আপনার মাতৃত্বের প্রসঙ্গে। নারীকে যখন জগেতর
সকল পাপের মূল, সকল বিশৃঙ্খলার কারণ, মূলহীনা ভাবা হতো ঠিক তখনি মানবতার নবী নারীদের মর্যাদাকে তুলে ধরলেন
জান্নাতের উপরে। মায়ের (নারী) পায়ের নীচে সন্তানের
জান্নাত; আর পিতার (পুরুষ) পায়ের নিচে চটি-জুতা বৈ ভিন্ন
কিছুই নয়। মমতাময়ী এই নারী'র মর্যাদা উন্নীতকরণে ইসলামের
নবী কি বললেন,
মানুষের মধ্যে আমার উত্তম ব্যবহারের সর্বাধিক অধিকারী কে? উত্তরে তিনি বললেনঃ তোমার মা।অতঃপর সে বললঃ তারপর কে?
তিনি জবাব দিলেনঃ তোমার মা।অতঃপর সে আবার বললঃ তারপর
কে? তিনি বললেনঃ তোমার মা।তারপর কে? বললেনঃ তোমার
বাবা। [বুখারী ৫৬২৬, মুসলিম ২৫৪৬]
হতে চায়। তবে তাকে পুরুষ বললে অসুবিধে কোথায়? চিৎকার
দিয়ে উঠলো – আমরা কেন বাস থেকে নেমে রাস্তার
পাশে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পুরুষের মতো তলপেটের চাপ নির্গত করতে পারব না? বস্তুত, এটা ছিল তার সমান-সমান অধিকারের শ্লোগান।
আর অমনি জগতের সকল নারীরা জেগে উঠলো; যেন
কোনদিনই তারা আর ঘুমাবে না। নিজ নিজ মাতার
নামে দিব্যি কেটে, পিতার পশ্চাত্যে, পরস্পরের পুত্রের পিছনে,
স্ব-স্ব স্বামীর সামনে ঝান্ডা হাতে দাঁড়িয়ে গেল।
সাথে সাথে বহির্বিশ্বের হকাররাও পেয়ে গেল বাড়তি সুবিধা। মানবতা লঙ্ঘন করা যাবেনা- উদ্ধৃতি দিয়ে রাস্তায়
নেমে এলো মানবতার ঠিকাদার! মিড়িয়ার মুখে মুখেসেই একই
বাণী- একই শ্লোগাণ- এ যেন নারী অধিকারের ফেরিওয়ালা!
সম্প্রতি উগান্ডায় ঘটে যাওয়া একটি ঘটনার বিবৃতি না টানলেই
নয়; যদিও ওটা সমান-সমান অধিকারের লড়াই নয়-
সমকামীতা বৈধ করার লড়াই।এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কতিপয় প্রাণহানী ঘটলেও- তা বিশ্ব-মিড়িয়ার
কাছে উল্লেখযোগ্যবলে গণ্য হয়নি।এর চাইতেও বিস্ময়ের
ব্যাপার হলো যে- উগান্ডার পত্র-পত্রিকায়
ঘটনাটি যতটা না স্থান পেয়েছে, তার চেয়েও
জোরালোভাবে স্থানপেয়েছে জোর করে মাতবরের
দায়িত্বে থাকা প্রধান দু'টি দেশের পত্র-পত্রিকায়। তা না হলে সমকামীর অধিকার রক্ষা হবে কী করে! হত্যার জন্য
নয়- প্রাণহানীর জন্য নয় বরং তাদের এইজোড়ালো প্রতিবাদ-
কেন সমকামিতা বৈধ করা হচ্ছে না উগান্ডায়? বৈধ্যতা দিন-
একটা প্রাণও পড়বে না। বাহ! বাহ! এর চাইতে উত্তম আবদার আর
কি হতে পারে? যা বলছিলাম, যিনি সমান-সমান অধিকারের
হম্বিতম্বি করছেন; তার কথার ফিরে আসি। আচ্ছা বলুন তো, আপনার ঘরের যুবতী কন্যাঅথবা আপনার স্ত্রী অথবা আপনার
প্রিয় বোনের জন্য কেউ কি এমন অধিকার চেয়ে বসবেন?
নারী তো দূরে থাক, সুস্থ বিবেকের কোন পুরুষেরও নিশ্চয়ই নিজের
জন্য এমন অধিকার চেয়ে বসবেন না। কারণ,বাস
থেকে নেমে রাস্তায় দাঁড়িয়ে মূত্রথলির
স্বাধীনতা দেখিয়ে পরিবেশ নষ্ট করার অধিকার কতটা গ্রহণযোগ্য হতেপারে?
আপনারা (উক্ত নারী) সমান-সমান অধিকারের জন্য কার
কাছে আবদার করছেন? সমাজের কাছে, রাষ্ট্রের কাছে না ধর্মের
কাছে? যদি বলেন, ধর্মের কাছে। তবে, বলতে বাধ্য হব? আপন
আপন ধর্মের কাছে অধিকার আদায়ের দাবি করে বোধ হয় সবাই
সঠিকভাবে তা নাও পেতে পারেন (বিস্তারিত জানতে পড়ুন ‘পর ধর্মের নারী’)। কারণ, এ দেশের অধিকাংশ জনগোষ্ঠীর পালিত
ধর্ম নারীকে সমান অধিকার দেয়নি; বরং দিয়েছে পুরুষের
চেয়ে বেশি। নারী যে আপনারই অংশ; সেটা যেন অস্বীকার
না করতে পারেন। আপনার নিজের প্রতি যতটা অধিকার ঠিক
ততটাই অধিকার তার প্রতিও। কারণ, সেটা তো আপনারই অংশ,
ভিন্ন কিছু নয়। আপনি যাকেনারী বা পুরুষ অধিকার নামে ভাগ করছেন মূলত সেটা একই অধিকার।আপনার নিজের অধিকার।
নারীর জন্যও যা; পুরুষের জন্যও তা-ই। কিন্তু
সমাজে এটা পরিলক্ষিত হয় না। দু'জন মেয়ের সমান একজন ছেলে।
এটা কি সম-অধিকার হলো? আচ্ছা বলুন তো, ছেলে কার
সম্পত্তি পায়? নিশ্চয়ই বাবার। দু'জন মেয়ে যা পায় একজন
ছেলে একাই তাই পায়। বেশ, মেয়ে পায় অর্ধেক। কিন্তু, মেয়ে আরও তিন-চার জায়গা থেকেসম্পত্তির অংশ পায়
যা ছেলেরা পায় না। প্রথমত, একজন মেয়ে তার বাবার থেকেপায়,
তার মায়ের অংশ পায়, স্বামীর অংশ পায়, পায় ছেলেরও অংশ। আর
মোহরানাতো মেয়ের এমন হক যা ছেলে দিতে বাধ্য থাকে (আর
এটা দেওয়ার নিয়ম বাসরের আগেই)।
আর তোমরা স্ত্রীদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দাও খুশীমনে। তারা যদি খুশী হয়ে তা থেকে অংশ ছেড়ে দেয়,
তবেতা তোমরা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ কর। [সুরা নিসা, আয়াত-৪]
ছেলেরা কিন্তু তার স্ত্রীর অংশ থেকে কিছুই পায় না; দাবিও
করতে পারবে না। স্বামীর দায়িত্ব থাকে তাদের ভরণ-পোষণের।
তা সে নারী নিজে ধন-সম্পদের মালিক হোক বা না হোক। কিন্তু,
মেয়েদের দায়িত্ব নয় পুরুষের ভরণ-পোষণ আপন ঘাড়ে তুলে নেওয়া। বস্তুত, এ পর্যায়ে পুরুষেরই অধিকার সমান-
সমান দেওয়া হয়নি। পুরুষকে করা হয়েছে নারীর সার্ভেন্ট-মাত্র। আর যদি বাতুলতার আশ্রয় নিয়ে বলেন, পর্দার কথা।
তবে তো বলতেই হয়, সেটাও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে পুরুষের জন্য
আগে। পুরুষদের নজরকেই কঠোরভাবে নত করতে বলা হয়েছে,
নারীর জন্য পর্দার বিধান দেওয়ারও আগে। [হে নবী] আপনি মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত
রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গ হেফাযত করে। এটাই তাদের জন্য ভাল
পথ।নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ সে সম্পর্কে অবহিত আছেন।
[তথ্য সূত্র: কোরআন ২৪:৩০ / সূরা- নূর: আয়াত ৩০]
এবার আসুন আপনার মাতৃত্বের প্রসঙ্গে। নারীকে যখন জগেতর
সকল পাপের মূল, সকল বিশৃঙ্খলার কারণ, মূলহীনা ভাবা হতো ঠিক তখনি মানবতার নবী নারীদের মর্যাদাকে তুলে ধরলেন
জান্নাতের উপরে। মায়ের (নারী) পায়ের নীচে সন্তানের
জান্নাত; আর পিতার (পুরুষ) পায়ের নিচে চটি-জুতা বৈ ভিন্ন
কিছুই নয়। মমতাময়ী এই নারী'র মর্যাদা উন্নীতকরণে ইসলামের
নবী কি বললেন,
মানুষের মধ্যে আমার উত্তম ব্যবহারের সর্বাধিক অধিকারী কে? উত্তরে তিনি বললেনঃ তোমার মা।অতঃপর সে বললঃ তারপর কে?
তিনি জবাব দিলেনঃ তোমার মা।অতঃপর সে আবার বললঃ তারপর
কে? তিনি বললেনঃ তোমার মা।তারপর কে? বললেনঃ তোমার
বাবা। [বুখারী ৫৬২৬, মুসলিম ২৫৪৬]
তিনি আরো বলেন,
তোমাদের মধ্যে সে-ই সর্বোত্তম যে তার স্ত্রীর কাছে তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম। [তিরমিযী, মানাকেব অধ্যায়]
এ হাদীসে স্ত্রীর সঙ্গে সদ্ব্যবহারকে পুরুষের চারিত্রিক
মর্যাদার মাপকাঠি নির্ধারণ করা হয়েছে। সুতরাং এখন
পুরুষরা কি এই বলে মাঠে নামবে যে, পুরুষের
বিপক্ষে বর্ণবৈষম্যকে প্রশ্রয় দিয়েছে-ইসলাম?
হে জগতবাসিনী কন্যাগণ, মনে করে দেখুন রোমান স্যভতায় আপনি ছিলেন প্রাণহীন বস্তু। খুঁটির সাথে বেঁধে শরীরে গরম ও
ফুটন্ত তেল ঢেলে মর্মান্তিক শাস্তি দেওয়া হত। ইউনানিদের
নিকট ছিলেন বেচাকেনার সামগ্রী।
ইহুদীদের নিকট ছিলেন এক অভিশপ্ত প্রাণী, অপবিত্র-অশুচী।
ভাল জিনিসে তো দূরের কথা, খারাপ জিনিসেও আপনাদের অধিকার
সমান-সমান ছিল না। যদি তোমার কন্যা অবাধ্য হয় তাহলে সতর্ক থেক সে তোমার
শত্রুদেরকে হাসাবে এবং সে এলাকাবাসীর গল্পের উপভোগ্য
হয়ে তোমার জন্য অপমান ডেকে আনবে। [এক্সিলেসিয়াস্টিকাস
৪২/১১]
খ্রিস্টানদের নিকট আপনি ছিলেন- সাক্ষাত শয়তান, পাপের
পিণ্ড। এমন কোন পাপ নেই যাকে নারীর পাপের সাথে তুলনা করা যায়।
প্রত্যেক পাপের পিছনে আছে কোন না কোন মহিলা আর মহিলাদের
কারণেই আমরা সবাই মরে যাব। [এক্সিলেসিয়াস্টিকাসঃ ২৫/১৯,
২৪]
তিমথির কাছে প্রথম পত্র ২-১১:১২,
নারী সম্পূর্ণরূপে অনুগতা হয়ে নীরব থেকেই ধর্মশিক্ষা গ্রহণ করুক। নারীরা শিক্ষা দিতে পারবে না, উপদেশ দেবার
বা পুরুষের উপরে কর্তৃত্ব করার অনুমতি আমি নারীকে দিই না;
তার নীবর থাকা উচিত।
লেবীয় পুস্তক ১২ এর ২ এবং ৫ গদে বলা হলোঃ ২ তুমি ইস্রায়েল
সন্তানদের বল, যে স্ত্রীলোক গর্ভধারণ করে ছেলে প্রসব করে,
সে সাত দিন অশুচি থাকবে, যেমন ঋতুজনিত অশুচিতা-কালে, তেমনি সে অশুচি থাকেব।
৫ যদি সে মেয়ে প্রসব করে, তেব যেমন অশুচি-কালে, তেমনি দুই
সপ্তাহ অশুচি থাকেব; পরে সে তার রক্তস্রাব শুচীকরণের জন্য
ছেষট্টি দিন অপেক্ষ করবে। এখানেও কন্যাসন্তানদের অপবিত্র-
অশুচী বলা হলো।
১৫৬৭ সালে স্কটল্যান্ড পার্লামেন্টেরএ আইন প্রণয়ন হয় যে, নারীদেরকে কোন কিছুর উপর আধিপত্য দেওয়া বৈধ নয়। অনুরূপ
ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সপ্তম হেনরির যুগে নারীদের জন্য ইঞ্জিল
পাঠ নিষিদ্ধ করে দেয়। কারণ তারা অপবিত্র।নারীরা মানুষ
কিনা এ ব্যাপারে পর্যবেক্ষণের জন্য ১৫৮৯ খ্রীষ্টাব্দেফ্র
ান্সের একটি কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয় এবং তাতে এটাই
স্বীকৃতি পায় যে, নারীরা মানুষ, তবে তাদেরকে পুরুষের সেবার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। ব্রিটিশ
আইনানুযায়ী ১৮০৫খ্রীঃ পর্যন্ত স্বামীর জন্য বউকে বিক্রয়
করা অনুমদিত ছিল। ছয় পেনই পর্যন্ত তার মূল্য নির্ধারিত ছিল।
হিন্দুদের নিকট ছিলেন- মিথ্যাচারিণী-পাপিষ্ঠ-উগ্র-রাগিণী-
সতীদাহের জ্বলন্ত লাকড়ি।
হে নারদ, (জগতে) নারীর মত পাপী (পাপিষ্ঠ) কিছুই নাই।বস্তুত, সকলদোষের (পাপের) মূল নারী। [সূত্রঃ মহাভরতের অশ্বমেধ
পর্ব্ব, লেখক- কিশরী মহোন গাঙ্গুলী, অনুচ্ছেদ-XXXVIII (৩৮)]
নারীজন্ম স্বভাবতই অপবিত্র, কিন্তু পতির
সেবা করে সে অনায়াসেই শুভগতি লাভ করে।
[সূত্রঃ শ্রীরামচরিতমানস, তুলসীদাস বিরচিত, অরণ্যকান্ড,
পৃষ্ঠা নং-৫৭২] নিঃসন্তান স্ত্রীকে বিয়ের আট বছর পর ত্যাগ করা যায়, মৃত
সন্তানের জন্মদানকারী স্ত্রীকে ত্যাগ করা যায় দশ বছর পরে,
যে স্ত্রী শুধুমাত্র কন্যা সন্তান জন্ম দেয় তাকে ত্যাগ করা যায়
এগারো বছর পরে, ঝগড়া পরায়ন স্ত্রীকে ত্যাগ করতে বিলম্ব
করা যাবে না। [সূত্রঃ মনুসংহিতা- অধ্যায়-৯, শ্লোক- ৮১, পৃষ্ঠা-
২৫৭, অনুবাদ- সুরেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়] কন্যাজন্মদানকে নিরুসাহিত করে পুত্র উৎপাদনে উৎসাহ
প্রদানের নিমিত্তে হিন্দু আইন বইয়ে পাওয়া যায়-
পুত্রহীনদের স্বর্গে কোনো স্থান নেই। [সূত্রঃ হিন্দু
আইনঃ শ্রীদীনেশ চন্দ্র দেবনাথ, পঞ্চম অধ্যায়ঃ দত্তক,
পৃষ্ঠাঃ ৩৭ এবং মহাভারতের আদি পর্ব]
জাহেলীয়াতের যুগে আবরের মরুতে ছিলেন জীবন্ত লাশ, পুঁতে ফেলা হতো বালুর আস্তরণের ভিতর। তাদের এই নিকৃষ্টতম
কর্মের হুশিয়ারী দিয়ে আল্লাহ তা'য়ালা এরশাদ ফরমালেন,
যখন কেউ তাদের কন্যা সন্তানের সু সংবাদ দেয় তখন তার মুখ
কাল হয়ে যায় এবং অসহ্য মনস্তাপে ক্লিষ্ট হতে থাকে।
তাকে শোনানো সু সংবাদের দুঃখে সে লোকদের কাছ
থেকে মুখলুকিয়ে রাখে।সে ভাবে অপমান সহ্য করে কন্যাকে রাখবে না তাকে মাটিতে পুতে ফেলবে। সাবধান!
তাদের ফয়সালা কতই না নিকৃষ্ট। [সুরা নাহল ৫৮]
যখন জীবন্ত প্রোথিত কন্যাকে জিজ্ঞাসিত হবে।
কি অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছে? [সুরা তাকভীর ৮, ৯]
স্রষ্টার এই হুশিয়ারী সমাজে বাস্তবায়নের জন্য
মরুনিবাসী মুহাম্মদ (সাঃ) দাসীদের দাসত্বের নিযুক্ত না করে আপন স্ত্রীর মর্যাদায়ভূষিত করলেন, নারীকে মর্যাদার
আসনে উন্নীত করলেন আর কন্যাসন্তান সাথে সু-ব্যবহার করার
নির্দেশ দিয়ে বললেন,
তোমাদের যে কারও যদি তিনজন কন্যা বা বোন থাকে আর
সে তাদের সুন্দরমত দেখাশুনা করে,
তবে সে অবশ্যইজান্নাতে প্রবেশ করবে। [তিরমিযী, সদাচার ও সুসম্পর্ক অধ্যায়]
আমি যদি কাউকে কারও উপর প্রাধান্য দিতাম,
তাহলে কন্যাসন্তানকে প্রাধান্য দিতাম পুত্রসন্তানের উপর।
যে ব্যক্তি তিন মেয়ে বা বোন অথবা দুই মেয়ের বা বোনকে লালন-
পালন করে এবং তাদের সাথে নম্র ব্যবহার করে আল্লাহ
তাকে জান্নাত দেবেন। যে ব্যক্তি কণ্যাসন্তানকে বয়ঃপ্রাপ্ত হওয়া পর্যন্ত লালন-পালন
করল সে কেয়ামতের দিন এই অবস্থায় উপস্তিত হবে যে, আমি ও
সে এরুপ একত্রে থাকব।বর্ণনাকারী বলেন, তিনি তাঁর
আঙুলগুলো মিলিয়ে দেখালেন। (মুসলিম)
যে ব্যক্তি কন্যাসন্তানদের সঙ্গে সুন্দর ব্যবহার
করবে তারা তার জন্য জাহান্নামের অগ্নি থেকে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে। (বুখারি, মুসলিম)
আপনারা, পশ্চিমা সংস্কৃতির নামে যা আবদার করছেন,
তা তো নিজেদের জন্য নয় বরং পুরুষেরই জন্য। নিজেকে উন্মুক্ত
করাতেই যদি আপনাদের সমান-সমান অধিকার আদায় হয়ে যায়,
তবে আপনাদের উদাহরণ খোসাহীন কলার মতই রয়ে যাবে। যার
মূল্য বেড়ে যাওয়ার চাইতে মূল্যহীন হওয়ার আশঙ্খাই বাড়তে থাকবে। ইসলাম একজন মাতাকে (নারী) পিতার (পুরুষ)
চেয়ে অধিক হক দিয়েছে, চাকুরীজীবি মায়েদের জন্য বার্ষিক
ছুটির অতিরিক্ত প্রসবকালীন ছুটি হাদীসে বর্ণিত নিফাসের
মেয়াদ অনুযায়ী কমপক্ষে পঁয়তাল্লিশ দিন দেয়া হয়ে থাকে।
তেমনি পবিত্র কোরআনে উল্লেখিত মেয়াদ
অনুযায়ী স্বামী মারা গেলে বার্ষিক ছুটির অতিরিক্ত প্রায় একশ দিনের বিশেষ ছুটি দেয়া হয়ে থাকে। অথচ পুরুষের জন্য এরুপ
কোনো ছুটির ব্যবস্থা নেই। একইভাবে ইসলামে নারীদের জন্য
সোনা ও রেশমী কাপড় পরিধানে অনুমতি দিলেও তা পুরুষের
জন্যদেওয়া হয়নি। তাছাড়াও, নারীদের জন্যমাসে এক সপ্তাহ
বা বছরে এক মাস সালাত মাফ করা হয়েছে, যা পুরুষের জন্য
করা হয়নি, এমকি যুদ্ধরত অবস্থায়ও পুরুষের জন্য ছাড় দেওয়া হয়নি।পুরুষের জন্য যৌতুককে হারাম করে নারীর জন্য
মহরানাকে বাধ্যতামূল করা হয়েছে।
তবে কেন ধর্মের কাছে সমান-সমান অধিকার চেয়ে নিজের
অধিকারকে টেনেহিঁচড়ে নিচে নামিয়ে দিচ্ছেন? আপনাদের
তো সমান অধিকারের চেয়েও বেশি দেওয়া হয়েছে।আর যদি এ
অধিকার রাষ্ট্রের কাছে চান; তবে সেটা আপনাদের প্রাপ্য হকবটে; রাষ্ট্র যে এখনও আপনাদের সমান অধিকার
দিতে পারেনি। কারণ, তা ইসলামি রাষ্ট্র নয়- ধর্মনিরপেক্ষ।
ধর্ম নিরপেক্ষ এই দেশগুলীর আপন আপন ধর্ম-ই উক্ত ধর্মের
ধর্মাম্বলীদের মধ্যে সমান-সমান অধিকার স্থাপনে সক্ষম নয়-
নাহ্, রাষ্ঠ্রীয়ভাবে, নাহ্, ধর্মীয়ভাবে! শ্রুতি-সংহিতা (আইনের
সনাতন গ্রন্থ) গুলো খুলে দেখুন- নারী তে দূরের কথা পুরুষেরও অধিকার নাই।
নাস্তি স্ত্রী নাং ক্রিয়া মন্ত্রৈদিতি ধর্মে ব্যবস্থিতি।
নিবিন্দ্রিয় হামন্ত্রাশ্চ স্ত্রিয়োহ নৃতমিতি স্থিতিঃ \১৮\
অর্থঃ মাস্ত্রোক্ত বিধি অনুসারে নারীদের মন্ত্রে কোন অধিকার
নাই, স্মৃতি ও ধর্ম শাস্ত্রে ইহাদের অধিকার নাই, এই জন্য
ইহারা নিতান্ত হীন ও অপাদার্থ। [সূত্রঃ মনুসংহিতা- ৯ম অধ্যায়, পৃষ্ঠাঃ২৫০, শ্লোক-১৮, মূল সংস্কৃত-মনু, অনুবাদ
সুরেশচন্দ্রবন্দ্যোপাধ্যায়]
অবনিষ্ঠীবতো দর্পাদ্বাবোষ্ঠৌ চ্ছেদয়েন্নপঃ
অবমূত্রয়তো মেঢ়মবশর্ধয়তো গুদম্ ॥২৮২॥
অর্থঃ দর্পভরে (শূদ্র) ব্রাহ্মণের গায়ে শ্লেষ্মা (থুথু)
দিলে রাজা তার ওষ্ঠদ্বয় ছেদন করাবেন,মূত্র নিক্ষেপ করলে লিঙ্গ চ্ছেদন, অধোবায়ু ত্যাগ করলে গুহ্যদেশ ছেদন
করাবেন। (মনুসংহিতা- ৮ম অধ্যায়, পৃষ্ঠাঃ ২৩১, শ্লোক-২৮২, মূল
সংস্কৃত-মনু, অনুবাদ সুরেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়)
কেশেষু গৃহ্নতো হস্তৌ চ্ছেদয়েদবিচারয়ন্।
পাদয়োর্দাঢ়িকায়াঞ্চ গ্রীবায়াং বৃষণেষু চ ॥২৮৩॥
অর্থঃ হিংসাবশে (শূদ্র) ব্রাহ্মণের চুলে, চিবুকে, পায়ে, দাড়িতে, ঘাড়ে বা অন্ডকোষে হাত দিলে নির্বিচারে তার হাত
দুটি কাটিয়ে দিবেন। (মনুসংহিতা- ৮ম অধ্যায়, পৃষ্ঠাঃ ২৩১,
শ্লোক-২৮৩, মূল সংস্কৃত-মনু, অনুবাদ সুরেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়)
একটি অনুরোধ, অধিকারের আদিখ্যেতা রচনাকরতে গিয়ে আপন
অধিকারকে সংকুচিত করে ফেলবেন না। মিসরের জাতীয়
ফতোয়া বোর্ড প্রচারিত এক ফতোয়ায় মিরাছের সম্পদ পাওয়ার ক্ষেত্রে নারী-পুরুষেরতুলনামূলক পর্যালোচনা তুলে ধরা হয়েছে।
তাতে যে তথ্য এসেছে তার মাধ্যমে অনেকের চোখ
খুলে যেতে পারে, বিবেক পেতে পারে নতুন খোরাক। ঐ
পরিসংখ্যানে নারী কখন পুরুষের অর্ধেক পায়, আর কখন সমান
পায়, আর কখন বেশি পায় তার বর্ণনা এসেছে অত্যন্ত
পরিস্কারভাবে।লক্ষ্য করুন: নারী কেবল চার অবস্থায় পুরুষের অর্ধেক পায়:
১. মেয়ে ও নাতনি (ছেলের মেয়ে) ছেলে ও নাতি (ছেলের ছেলে)
থাকা অবস্থায়।
২. ছেলে সন্তান ও স্বামী বা স্ত্রী না থাকলে 'মা' পিতার
অর্ধেক পায়।
৩. 'সহোদর বোন' সহোদর ভাইয়ের সাথে ওয়ারিস হলে। ৪. 'বৈমাত্রেয় বোন' বৈমাত্রেয় ভাইয়ের সঙ্গে ওয়ারিস হলে।
সে পুরুষ হোক বা নারী হোক,, যদি সে মুমিন হয়, তাহলে এমন
লোকেরাই জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের বিন্দু পরিমাণ
হকও নষ্ট করা হবে না। [সূরা আন নিসা ১২৪]
তারা হচ্ছে তোমাদের জন্য পোশাকস্বরুপ এবং তোমরাও তাদের
জন্য পোশাকস্বরূপ। [সূরা আল বাকারা ১৮৭] মেয়েদেরও তেমনি ন্যায়সঙ্গত অধিকার আছে, যেমন তাদের উপর
পুরুষদের অধিকার আছে। [সূরা আল বাকারা ২২৮]
নিশ্চয় মুসলিম পুরুষ ও নারী, মুমিন পুরুষ ও নারী, অনুগত পুরুষও
নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও নারী, ধৈর্যশীল পুরুষ ও নারী,
বিনয়াবনত পুরুষ ও নারী, দানশীল পুরুষ ও নারী,
সিয়ামপালনকারী পুরুষ ও নারী, নিজদের লজ্জাস্থানের হিফাযতকারী পুরুষ ও নারী, আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও
নারী, তাদের জন্য আল্লাহ মাগফিরাত ও মহান প্রতিদান প্রস্তুত
রেখেছেন। [সূরা আল-আহযাব ৩৫]
১০ অবস্থায় নারী পুরুষের সমান পায়:
১. পিতা-মাতার সমান অংশ পাবে ছেলের ছেলে থাকলে।
২. বৈপিত্রেয় ভাই-বোন সব সময় সমান অংশ পায়। ৩. বৈমাত্রেয় ভাই-বোন থাকলে সব ধরনের বোন (সহোদর,
বৈপিত্রেয় ও বৈমাত্রেয়) বৈপিত্রেয় ভাইয়ের সমান অংশ পাবে।
৪. শুধু ঔরসজাত মেয়ে ও মৃতের ভাই একসঙ্গে থাকলে উভয়ে সমান
অংশ পাবে (মেয়ে পাবে অর্ধেক আর বাকি অংশ পাবে চাচা)।
৫. 'নানী' বাবা ও ছেলের ছেলের সাথে সমান অংশ পায়।
৬. মা ও বৈপিত্রেয় দুই বোন স্বামী ও সহোদর ভাইয়ের সাথে সমান অংশ পায়।
৭. 'সহোদর বোন' স্বামীর সাথে ওয়ারিস হলে সহোদর ভাইয়ের
সমান অংশ পাবে। অর্থাৎ সহোদর বোনের পরিবর্তে সহোদর ভাই
হলে যে অংশ পেত ঠিক সহোদর বোনও একই অংশ পাবে।অর্থাৎ মূল
সম্পদের অর্ধেক পাবে।
৮. বৈমাত্রেয় বোন সহোদর ভাইয়ের সমান অংশ পায় যদি মৃত ব্যক্তির স্বামী, মা, বৈপিত্রেয় এক বোন এবং সহোদর এক ভাই
থাকে।এ অবস্থায় স্বামী মূল সম্পদের অর্ধেক, মা এক ষষ্ঠাংশ,
বৈপিত্রেয় ভাইএক ষষ্ঠাংশ এবং অবশিষ্ট এক ষষ্ঠাংশ
পাবে সহোদর ভাই।
৯. নির্দিষ্ট অংশধারী ওয়ারিস এবং আসাবা সূত্রে পাওয়ার মত
কেউ না থাকলে নিকটতম রক্তসম্পর্কীয় আত্মীয়রা সমান অংশ পাবে।যেমন মেয়ের ছেলে, মেয়ের মেয়ে, মামা ও
খালা ছাড়া অন্য কোন ওয়ারিস না থাকলে এদের সবাই সমান অংশ
পাবে।
১০. তিন প্রকারের মহিলা এবং তিন প্রকারের পুরম্নষ কখনও
সম্পূর্ণরূপে বঞ্চিত হয় না।এক্ষেত্রেও নারী পুরুষ সমান অধিকার
ভোগ করছে। অনেক ক্ষেত্র নারী পুরুষের চেয়ে বেশিপায়। যেমন,
১. স্বামী থাকা অবস্থায় একমাত্র কন্যা পাবে অর্ধেক আর
স্বামী পাবে এক চতুর্থাংশ।
২. দুই কন্যা স্বামীর সাথে হলে।দুই মেয়ে পাবে দুই তৃতীয়াংশ আর
স্বামী এক চতুর্থাংশ।
৩. কন্যা মৃতের একাধিক ভাইয়ের সাথে হলে বেশি পাবে। ৪. যদি মৃত ব্যক্তি স্বামী, বাবা, মা ও দুই কন্যা রেখে যায়
তবে দুই মেয়ে দুইতৃতীয়াংশ সম্পদ পাবে। কিন্তু ঠিক একইঅবস্থায়
যদি মেয়ের পরিবর্তে দুই ছেলে থাকত তবে তারা নিশ্চিত
ভাবে দুই মেয়ের তুলনায় কম পেত।কেননা, ছেলের অংশ
এখানে অন্য ওয়ারিসদের নির্ধারিত অংশ দেওয়ার পর
যা অবশিষ্ট থাকে।সুতরাং স্বামী পাবে এক চতুর্থাংশ, বাবা ও মা উভয়ে পাবে এক ষষ্ঠাংশ করে এবং বাকী অংশ পাবে দুই
ছেলে যা দুই তৃতীয়াংশ তো নয়ই বরং অর্ধেকের চেয়েও কম।
৫. ঠিক একই ধরনের অবস্থা দুই সহোদর বোনের ক্ষেত্রেও।
যদি ওয়ারিসদের মধ্যে স্বামী, দুই সহোদর বোন
এবং মা থাকে তখন দুই বোন দুই তৃতীয়াংশ সম্পদ পায়।কিন্তু ঠিক
একই অবস্থায় যদি দুইবোনের জায়গায় দুই ভাই থাকত তখন ঐ দুইভাই মিলে এক তৃতীয়াংশের বেশি পেত না।
৬. তেমনিভাবে একই অবস্থায় বৈমাত্রেয়দুই বোন বৈমাত্রেয় দুই
ভাইয়ের চেয়েবেশি পায়।
৭. অনুরূপভাবে যদি ওয়ারিসদের মধ্যে স্বামী, বাবা, মা ও
মেয়ে থাকে তবে মেয়ে মূল সম্পদের অর্ধেক পাবে। কিন্তু ঠিক
একই অবস্থায় ছেলে থাকলে পেত তার চেয়ে কম। যেহেতু তার প্রাপ্য অংশ হলো অংশীদারদের দেওয়ার পর অবশিষ্টাংশ।
৮. ওয়ারিস যদি হয় স্বামী, মা ও এক সহোদর বোন তখন ঐ সহোদর
বোন অর্ধেক সম্পদ পাবে যা তার স্থানে সহোদর ভাই হলে পেত
না।
৯. ওয়ারিস যদি হয় স্ত্রী, মা, বৈপিত্রেয় দুই বোন এবং দুই
সহোদর ভাই তখন দূরের আত্মীয় হওয়া সত্ত্বেও বৈপিত্রেয় দুই বোন দুই সহোদরের চেয়েবেশি পাবে।যেহেতু বৈপিত্রেয় বোনদ্বয়
পাবে এক তৃতীয়াংশ, আর দুই সহোদর পাবে অবশিষ্টাংশ যা এক
তৃতীয়াংশের চেয়েও কম।
১০. যদি স্বামী, বৈপিত্রেয় বোন ও দুই সহোদর ভাই
থাকে সেক্ষেত্রে বৈপিত্রেয় বোন এক তৃতীয়াংশ পাবে। অথচ এই
দুই সহোদর অবশিষ্টাংশ থেকে যা পাবে তা ঐ বোনের এক চতুর্থাংশেরও কম।
১১. ওয়ারিস যদি হয় বাবা, মা ও
স্বামী _এক্ষেত্রে ইবনে আব্বাস (রা.)-এর
মতানুসারে মা পাবে এক তৃতীয়াংশ, আর বাবা পাবে এক ষষ্ঠাংশ
অর্থাৎ মায়ের অর্ধেক।
১২. স্বামী, মা, বৈপিত্রেয় বোন ও দুই সহোদর ভাই ওয়ারিস হলে এক্ষেত্রে ঐ বোন দূর সম্পর্কীয় আত্মীয় হওয়া সত্ত্বেও
সহোদর ভাইদ্বয়ের দ্বিগুণ পাবে।
কোন মন্তব্য নেই:
/>