তার চেহারায় কিছুটা সরলতা আছে , আছে বিশাল লম্বা দাড়ি । কথা বলেন সুন্দর করে , হাসিটাও খারাপ না । ছোটবেলা থেকেই মাদরাসায় পড়াশুনা করেছেন । খুবই ভালো ছাত্র ছিলেন , তাই অতি ভালো ফলাফল করেই সকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন । পরে মাদ্রাসাতেই শিক্ষকতা শুরু করেন এবং শিক্ষক হিসেবেও যথেষ্ট জনপ্রিয়তা অর্জন করেন । ভারতের বিখ্যাত দেওবন্দ মাদরাসায় তার নামে একটি আলাদা মারকাজও আছে । সর্বশেষ তিনি ছিলেন বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ঈদগাহ ময়দান কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া মাঠের খতীব ।
পাঠকরা মনে হয় ইতোমধ্যেই বুঝতে পেরেছেন আমি কার কথা বলছি । হ্যাঁ , আমি বলছি বর্তমান সময়ের অন্যতম একজন আলোচিত ও সমালোচিত ব্যক্তিত্ব জনাব ফরিদউদ্দিন মাসউদ সাহেবের কথা ।
অতীব দুঃখ ও লজ্জা লাগে যখন কাউকে বলতে হয় , আমি এই হুজুরটির ছাত্র ছিলাম । উনার প্রতিষ্ঠিত মাদরাসায় ভর্তি হওয়ার মাধ্যমেই আমার ছাত্রজীবন শুরু হয় । অথচ এই মানুষটিকেই এখন আমি মন থেকে ঘৃণা করি ।
শোনা যায় এখন আর তিনি টাকা আয় করেন না বরং মাস শেষে তিনি রুপিতে তার প্রাপ্য মোটা অংকের বেতন পান । তার উপর যেই মিশনটি দেওয়া হয়েছে সেটি হল বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ও ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ি চালিত ব্যাংক ইসলামি ব্যাংকের বিরুদ্ধে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা । আপনারা একটু খেয়াল করলে দেখবেন , উনি ইদানিং জামাতের সমালোচনা করতে গিয়ে প্রায়ই বলেন , জামাতকে নির্মূল করতে হলে তার গোঁড়াকে উপড়ে ফেলতে হবে । আর জামাতের গোঁড়া হল ইসলামি ব্যাংক , তাই ইসলামি ব্যাংককেই আগে নিষিদ্ধ করতে হবে আর এই ব্যাংকের সমস্ত সম্পত্তি জব্দ করতে হবে । --- আহা , কি মামার বাড়ির আব্দার আমার গুরুর । গুরু আমার প্রথম যখন এই বিষয় নিয়া উচ্চবাচ্য শুরু করেন তার পরের দিনই ইসলামী ব্যাংকে তার একটি একাউন্ট আবিষ্কৃত হয় । প্রথমেই এত বড় ধরা খেয়ে বেশ কয়েকদিন আন্ডার গ্রাউন্ডে চলে গিয়েছিলেন তিনি । ইদানিং আবার সরব হয়ে উঠেছেন ।
আশার কথা হল , ভারত যেই উদ্দেশ্যে মাসউদ সাহেবকে ভাড়া করেছিল তা পুরোপুরিই ব্যর্থ হয়েছে , মাঝখান দিয়ে বরঞ্চ তারা বিনে পয়সায় ইসলামী ব্যাংকের বিপুল প্রচারণা করে ফেললেন।
তবে এরপরেও তার মত একজন আলেম যখন টাকার ফাঁদে পড়ে ৩৬০ ডিগ্রী পল্টি মারে তখন তা থেকে অনেক কিছুই শিখার আছে ।
বাংলাদেশে বর্তমানে কওমি মাদ্রাসার আলেম-ওলামা ও ছাত্রগণ ইসলামের প্রয়োজনে সরাসরি মাঠে নেমে রাজনৈতিক সমীকরণটা বেশ খানিকটা উলটপালট করে ফেলেছে । হেফাযতে ইসলাম এখন সরাসরি ধর্মদ্রোহীদের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে । দেশের সাধারণ মুসলমানদের কাছে তাদের জনপ্রিয়তা এখন তুঙ্গে । তাই ইসলামবিরোধী চক্ররা এবার সরাসরি আলেমদের আক্রমন না করে ছলে বলে কৌশলে তাদের আয়ত্তে নিয়ে আসতে চাবে । তাই দেশের স্বার্থে ও ইসলাম রক্ষার স্বার্থে আমাদের সম্মানিত আলেমগণ শত বাঁধার মাঝেও আপোষহীন হয়ে সত্যের পক্ষে লড়ে যাক এই আশাই করি ।
ইনশা আল্লাহ একদিন এই দেশে কালিমার পতাকা উড়বেই , সত্যের বিজয় হবেই .
কোন মন্তব্য নেই:
/>